ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

অন্যের সমালোচনা নয়

প্রকাশিত: ০৬:৫৬, ১৯ নভেম্বর ২০১৮

অন্যের সমালোচনা নয়

সমালোচনা বিষয়টা এমন হয়েছে যে, এখন মানুষের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। কিন্তু এমন একজনকেও খুঁজে পাওয়া যাবে না, যে নিজের সমালোচনা শুনতে আগ্রহী। প্রত্যেক মানুষকে কাজের ক্ষেত্রে কম-বেশি সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয়। তবে কাজের ক্ষেত্রে সমালোচনা বিষয়টা স্বাভাবিক। যা মেনেই আপনাকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। সমালোচকদের সঙ্গে অহেতুক তর্কবিতর্ক, ঝগড়া না করে বরং সমালোচনাকে সহ্য করার মানসিকতা তৈরি করতে হবে। তাহলেই জীবনে সফলতা আসবে। কাজের ক্ষেত্রে ভাল-খারাপ দুই ধরনের সমালোচনাই আসবে। সমালোচনাকে ভয় পেয়ে নিজেকে তুচ্ছ ভেবে না এগিয়ে গেলে জীবনে সফলতা আসবে না। যারা সমালোচনার ভয়ে কাজের শুরুতেই দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগেন। তারা কাজে সফল হওয়া তো দূরের কথা, কোন কাজ শুরুই করতে পারেন না। আর যদি সমালোচনাকে সহ্য করে এগিয়ে যেতে পারেন তাহলে সফলতা আসবেই। সফলতা না আসলেও মনকে সান্ত¦না দেয়া যায় এই বলে, আমি চেষ্টা করেছি, ভাগ্যক্রমে সফল হতে পারিনি। তাই সফলতা অর্জনের জন্য আগে আপনাকে সমালোচনা সহ্য করার মানসিকতা তৈরি করতে হবে। সমালোচনা থেকে ভাল কিছু শিক্ষা নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। আপনি ইচ্ছে করলেই যেভাবে, যে কোন সমালোচনাকে সহ্য করে নিতে পারেন। নিজের ওপর বিশ্বাস রাখুন : সমালোচনা সহ্য করতে প্রথমেই নিজের ওপর আস্তা রাখতে হবে, নিজেকে বিশ্বাস করতে হবে। নিজের ওপর বিশ্বাস রাখলে সমালোচনা করে কেউ আপনার ক্ষতি করতে পারবে না। আপনি যখন জানবেন, কে আপনি কি আপনার যোগ্যতা তখন অন্যের বলা কথা আপনাকে হতাশ করতে পারবে না। যার ফলে আপনি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না। তাই প্রতিটি কাজে সমালোচনা এড়িয়ে চলে নিজের প্রতি আস্থা রেখে এগিয়ে যান। সফলতা আপনার আসবেই। চলুন নিজের সন্তুষ্টি অনুযায়ী : প্রত্যেক কাজের নির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকে এবং সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে পারলে মানসিক তৃপ্তি পাওয়া যায়। লক্ষ্য পূরণের জন্য নিজেকে সেট করে রাখতে হবে। যেভাবে কাজ করে আপনি তৃপ্তি পান সেভাবে কাজ করতে থাকুন। আশপাশের অনেকেই সমালোচনা করবে। কিন্তু নিজের উদ্দেশ্য পূরণ করতে ট্র্যাক থেকে সরে না গিয়ে স্থির থাকুন। দেখবেন সমালোচনা আপনার ক্ষতি করতে পারবে না। চিন্তা-ভাবনা বদলে ফেলুন : কোন কাজ করতে গেলে আশপাশে শত শত মানুষ পাবেন। যারা আপনার কাজের বিভিন্ন ভুল ধরবে। কেউ বলবে এভাবে করলে ভাল হবে, কেউ বলবে ওভাবে করেন। এসব সমালোচনা শুনে আপনি নজের সিদ্ধান্ত বদলে ফেলতে পারেন। কিন্তু তাদের এই ধারণাগুলোকে সহ্য করে এর থেকে ভালটা নিয়ে আপনি যখন সামনে এগিয়ে যাবেন, তখন দেখবেন সমালোচনাগুলোই আপনার কাজকে সহজ করছে। এভাবেই নিজের চিন্তা-ভাবনার পরিবর্তন করে অন্যের সমালোচনাকে কাজে লাগানো যায়। গ্রহণ এবং বর্জনের সামর্থ্য রাখুন : অন্যের সমালোচনাকে জীবনে একটি অংশ হিসেবে ধরে নিন। সমালোচনাকে কিভাবে কাজে লাগানো যায়, তা খুঁজে বের করুন। সমালোচনার ভালটুকু গ্রহণ এবং যারা পটুকু বর্জন করার যোগ্যতা অর্জন করেন। সমালোচনাকে ভালভাবে পর্যবেক্ষণ করুন। নিজের বুদ্ধি দিয়ে অন্যের সমালোচনা থেকে ভাল কিছু বের করে নিজের কাজে লাগান। আর খারাপ কিছু বর্জন করে দিন। ইতিবাচক চিন্তা করুন : আমরা ধরেই নেই, সমালোচনা মানেই খারাপ। আর এই বিষয়টাই মূল সমস্যার সৃষ্টি করে। মনের ভেতর কাজ করে বিষয়টা যেহেতু খারাপ, সেহেতু কাজটি করা যাবে না। মনে রাখবেন নিন্দুকেরা হচ্ছে সবচেয়ে উপকারী বন্ধু। তাই সমালোচনাকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখার চেষ্টা করুন। সমালোচনা মানেই খারাপ কিছু, শুরুতেই এমন ধারণা না করে প্রত্যেকটি সমালোচনার কারণ খুঁজে বের করুন। এতে, সমালোচনা থেকে আপনি ইতিবাচক মনের হতে পারবেন, পারবেন সমালোচনাকে কাজে লাগাতে। পরিশেষে বলছি, সমালোচনা খুবই সহজ একটি বিষয়। বিষয়টিকে সহজেই গ্রহণ করুন। তা ছাড়া বড় মহৎ কোন কাজে সমালোচনা হবেই। কারণ সমালোচনা না হলে সেটা আবার কিসের কাজ যদিও আব্রাহাম লিংকন বলেছেন, সমালোচনা তারই করার অধিকার আছে, যার সাহায্য করার হৃদয় আছে। কিন্তু এই নিয়ম কেউ জানে না এখনও। না জেনে, না বুঝে তখন সবাই সমালোচক। তাই নিজেকে শক্ত মানসিকতার মানুষ হিসেবে তৈরি করুন, সমালোচনা সহ্য করার ক্ষমতা অর্জন করুন। সঙ্গে সফলতাও অর্জন করুন। মনীষী জ্যাক ওয়ার্নারের কথা দিয়ে লেখাটি শেষ করছি। ‘খারাপ সমালোচনার দিকে মন দিও না। কারণ আজকের খবরের কাগজ কালকের টয়লেট পেপার।’
×