ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

৪৫৮০ ফরম বিক্রি

আজ থেকে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাতকার

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ১৮ নভেম্বর ২০১৮

আজ থেকে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাতকার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে বিএনপির মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন ৪ হাজার ৫৮০ জন। আজ রবিবার থেকে শুরু হচ্ছে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাতকার। সকাল ১০টায় বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে আজ প্রথম দিন রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের প্রার্থীদের সাক্ষাতকার নেয়া হবে। পঞ্চগড়-১ আসন দিয়ে সাক্ষাতকার শুরু হবে। সাক্ষাতকার শেষে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোটের সঙ্গে বৈঠক শেষে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করবে বিএনপি। বিকেলে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) এখনও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে পারেনি। এদিকে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে দেখা গেছে। তবে সে সময় পর্যন্ত কতজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তা জানানো হয়নি। তবে ৪ হাজার ৫৮০ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন বলে বিএনপি কার্যালয় থেকে জানানো হয়। বিএনপি কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে আগামীকাল সোমবার অনুষ্ঠিত হবে বরিশাল ও খুলনা বিভাগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাতকার। ২০ নবেম্বর চট্টগ্রাম, সিলেট ও কুমিল্লা বিভাগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাতকার নেয়া হবে। সবশেষে ২১ নবেম্বর ময়মনসিংহ, ফরিদপুর ও ঢাকা বিভাগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাতকার অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপি কার্যালয় থেকে জানানো হয় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে এবং সকল স্থায়ী কমিটির সদস্যের উপস্থিতিতে প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এ সাক্ষাতকার অনুষ্ঠিত হবে। আজ রবিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত রংপুর বিভাগ, বেলা আড়াইটা থেকে রাজশাহী বিভাগের মানোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাতকার নেয়া হবে। এ ছাড়া আগামীকাল সোমবার সকালে বরিশাল বিভাগ, দুপুরে খুলনা বিভাগ, মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম বিভাগ, বিকেলে কুমিল্লা ও সিলেট বিভাগ এবং বুধবার সকালে ময়মনসিংহ ও ফরিদপুর বিভাগ, আর বিকেলে ঢাকা বিভাগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাতকার নেয়া হবে। বিএনপি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) এখনও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে পারেনি। কমিশন মানুষের মন থেকে ভীতি দূর করতে পারেনি। ভোট দেয়া দূরে থাক, মানুষ নির্ভয়ে মন খুলে কথা বলবে এমন পরিস্থিতিও দেশে নেই। রিজভী বলেন, একের পর এক নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী আচরণবিধি ন্যূনতম অনুসরণ করছেন না। এ বিষয়ে পুরোপুরি নির্বিকার সরকারের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন। আচরণবিধিমালা ১৪ (২) ভঙ্গ করে শেখ হাসিনা গণভবনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের সাক্ষাতকার গ্রহণ করেছেন। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর নির্মিত প্রামাণ্য চিত্র ‘হাসিনা : এ ডটার’স টেল’ ডকুমেন্টরি ফিল্মটি চারটি সিনেমা হলে শুক্রবার মুক্তি দেয়া হয়েছে। রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী আগামী নির্বাচনে একজন প্রার্থী। শেখ হাসিনা একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সেই কারণে ইতিহাসের নানা ঘটনা, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, ক্ষমতার পালাবদল, ব্যক্তি ও রাজনৈতিক জীবনের নানা অভিজ্ঞতা এবং দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি এককেন্দ্রিকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে- যা আচরণবিধির চরম লঙ্ঘন। আচরণবিধিতে বলা আছে-এ ধরনের কোন কর্মকা- পরিচালনা করা যাবে না। এতে প্রচার শুরুর আগেই নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করবে। রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী আচরণবিধি ভঙ্গের অসংখ্য প্রমাণ থাকলেও নির্বাচন কমিশনের নীরব ভূমিকার কারণে নির্বাচনে ন্যূনতম লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়নি। বরং আচরণবিধি লঙ্ঘন না করলেও পরিকল্পিতভাবে ঘটনা তৈরি আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হচ্ছে বিরোধী দলের ওপর। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় এসব কর্মকা- চলতে থাকলে কোনভাবেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই অবিলম্বে শেখ হাসিনার ওপর নির্মিত ডকুফিল্মটি সিনেমা হলগুলো থেকে প্রত্যাহার করতে হবে। রিজভী বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপিসহ বিশ দলীয় জোট এমনকি আওয়ামী জোট ছাড়া অন্যান্য সব রাজনৈতিক দল নির্বাচন পিছিয়ে দেয়ার দাবি করছে। কারণ অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের যাবতীয় কার্যক্রম এখনও বাকি রয়েছে, তফসিল ঘোষণার সপ্তাহ পরে চলছে রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ। অন্যান্য নির্বাচনী কর্মকর্তা নিয়োগই দেয়া হয়নি। নির্বাচনী গুরুত্বপূর্ণ স্থানে দলবাজ কর্মকর্তারা বহাল আছেন, তাদের সরিয়ে দিয়ে নিরপেক্ষভাবে প্রশাসন সাজানো হয়নি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও নিরপেক্ষভাবে সাজানো হয়নি। এ পরিস্থিতিকে কি করে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে? রিজভী বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ তৈরির ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন পিছিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করা অত্যাবশ্যক। এখনও বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে অভিযোগ করে অবিলম্বে তা বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন রুহুল কবির রিজভী।
×