ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

মনোনয়ন নিয়ে কর্মীরাই বেশি উদ্বিগ্ন

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ১৮ নভেম্বর ২০১৮

মনোনয়ন নিয়ে কর্মীরাই বেশি উদ্বিগ্ন

রাজন ভট্টাচার্য ॥ নেত্রকোনা সদর উপজেলার চার নং সিংহেরবাংলা ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রাম। রাত যখন দশটা তখন এই গ্রামের সিদ্দিক মার্কেটে প্রায় শত মানুষের ভিড়। আলোচনার বিষয়বস্তু নির্বাচন। আরও স্পষ্ট করে বললে নেত্রকোনা-২ (সদর-বারহাট্টা) আসনে কে মনোনয়ন পাচ্ছেন। আড্ডায় আওয়ামী লীগ-বিএনপি ও জাতীয় পার্টি সব দলেরই সমর্থন আছে। আবার বিভিন্ন দলের পক্ষ থেকে একাধিক ব্যক্তি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। তাই ব্যক্তিকেন্দ্রিক সমর্থন রয়েছে এখানে। যার যার পছন্দের রাজনৈতিক নেতাদের ফোন করছেন সমর্থকরা। খোঁজ নিচ্ছেন মনোনয়নের সর্বশেষ অবস্থা কি। কবে চূড়ান্ত হবে সবকিছু। একজন ফোন করা মানেই পুরো দোকানজুড়ে পিনপতন নীরবতা। তারপর সকলের মধ্যে তথ্যের আদান-প্রদান। আবার অন্য সমর্থকের পক্ষ থেকে পছন্দের নেতাকে ফোন। এ নিয়ে মধ্যরাত পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিনই চলে আড্ডা। কে কতটা যোগ্য নেতা এ নিয়ে চলে চুলচেরা বিশ্লেষণ। যুক্তি। তর্ক। বিতর্ক। তবে এই আড্ডায় প্রার্থীদের মধ্যে যারা সাধারণ মানুষের পাশে থাকেন যোগ্যতার মাপকাঠিতে তাদের নামই বার বার উঠে আসে। সব মিলিয়ে প্রতিটি দল থেকেই শেষ পর্যন্ত ২ থেকে তিনজনের নাম আসে। ...বলা হয় তারাই হয়ত মনোনয়ন পাবেন। প্রিয় নেতা মনোনয়ন কিনে দাখিল করেবেন। তাই প্রায় ১৫দিন ধরে ঢাকায় অবস্থান করছেন সরিষাবাড়ীর বাসিন্দা কামাল হোসেন। তিনি জামালপুর-৪ আসনের আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী অধ্যক্ষ আব্দুর রশিদের সমর্থক। ধার করে টাকা এনে ঢাকার একটি হোটেলে উঠেছেন। সকালে থাকেন গুলিস্তানের বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। বিকেল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত থাকেন ধানম-ি তিন নম্বরের আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর কার্যালয়ের সামনে। তিনি জানালেন, নেতা মনোনয়ন পাচ্ছেন কিনা খবর জানতেই প্রতিদিন অপেক্ষা করেন তিনি। মনোনয়নের বিষয়টি চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত তিনি ঢাকায় অবস্থান করবেন বলে জানান। রাজধানীর বিজয়নগর পানির পাম্পের পাশে স্কাইলার্ক পয়েন্টের নিচে প্রায় শত মানুষের ভিড়! কেউ কেউ চায়ের কাপে চুমুক দিচ্ছেন। কেউ পান-বিড়ি খাচ্ছেন। কথা বলে জানা গেল তারা প্রত্যেকেই এসেছেন নেত্রকোনা জেলার দ্বীপ উপজেলা খালিয়াজুড়ি থেকে। এবারের সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের খালিয়াজুড়ি এলাকার সাধারণ মানুষের প্রাণের প্রার্থী স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা শফী আহমেদ। তার পক্ষে কয়েক শ’ মানুষ এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ থেকে জমা দেয়া পর্যন্ত সবাই শফী আহমদের পাশে ছিলেন। তাদের কেউ উঠেছেন হোটেলে, কেউবা আত্মীয়-স্বজনের বাসায়। আবার কেউ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে অবস্থান করছেন। তাদের সকলের কথা এক। মনোনয়ন নিশ্চিত হয়ে হাসিমুখে এলাকায় ফিরতে চান প্রত্যেকেই। নেতাকে বিজয়ী করতে একযোগে কাজ করারও প্রতিশ্রুতি সবার। কথা বলতে বলতে তাদের মোবাইল ফোনে এলাকা থেকে বার বার ফোন আসছিল সাধারণ মানুষের কাছ থেকে। তারাও বার বার খোঁজ নিচ্ছেন। মনোনয়নের সর্বশেষ খবর কি। কবে চূড়ান্ত হবে সবকিছু। নেতার অবস্থান সম্পর্কেও জানতে চাইছেন বার বার। যে যেভাবে পারেন নেতাকর্মীদের সান্ত¡না দিচ্ছেন। দিচ্ছেন সম্ভাবনার বার্তা। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেন্দ্র করে সারাদেশের চিত্র ঠিক একই রকম। সব দলের নেতাকর্মীর মধ্যে এখন উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠার শেষ নেই। কারণ একটাই, কে মনোনয়ন পাচ্ছেন। এ নিয়ে প্রচ- আগ্রহ। যার যার পছন্দের প্রার্থীর সর্বশেষ খোঁজখবর নিচ্ছেন প্রতিদিন। চলছে নানা রকমের গুজব। টেলিফোন। নেতাদের সমর্থকরাই মনোনয়ন পাওয়ার এসব গুজব ছড়াচ্ছেন। প্রকৃত অর্থে কোন দলের পক্ষ থেকেই এখনও মনোনয়ন চূড়ান্ত হয়নি। তবে শেষ পর্যন্ত কে পাচ্ছেন মনোনয়নের টিকেট? মনোনয়নের টিকেট মানেই সোনার হরিণ। সেই হরিণের অপেক্ষায় সবাই। সাধারণ মানুষেরও এ নিয়ে যথেষ্ট আগ্রহ দেখা যায়। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা জানিয়েছেন, ভালবাসা থেকেই দলের নেতাকর্মীরা বার বার খোঁজখবর নিচ্ছেন। কেউ ঢাকায় আছেন। পছন্দের প্রার্থী যেন মনোনয়ন পান এজন্য দোয়া মাহফিল, রোজা রাখা, মন্দিরে ভোগ দেয়াসহ চলছে ধর্মীয় নানা আনুষ্ঠানিকতা। আবার ফকিরের কাছেও ছুটছেন প্রার্থীসহ সমর্থকরা। আনছেন কবজ-তাবিজ। মনোবাসনা পূরণে পানি পড়াও খাওয়ানো হচ্ছে নেতাকর্মীদের। মদন-মোহনগঞ্জ-খালিয়াজুড়ি মিলিয়ে নেত্রকোনা-৪ আসনের আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী শফী আহমেদ জানান, এলাকা থেকে দলে দলে কর্মীরা ঢাকায় আসছেন। ঢাকায় থাকছেন হোটেলে কিংবা আত্মীয়-স্বজনের বাসায়। প্রতিদিন চেম্বারে ভিড় করছেন শত শত মানুষ। মনোনয়ন পাওয়ার খবর জানতে হাজারও ফোন আসছে এলাকা থেকে। সবাই অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছেন সুখবর শোনার জন্য। ’৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম এই নেতা জানান, মানুষের ফোন ধরতে ধরতে এখন গলা ভেঙ্গে গেছে। দিনভর ফোন বাজে। একটা নম্বর আমার। এলাকার সবার কাছেই আছে। তাছাড়া যে কেউ আমাকে ফোন করলে রিসিভ করি। তাই বিনাদ্বিধায় কর্মী-সমর্থকরা ফোন করেন। আওয়ামী লীগের এই কেন্দ্রীয় নেতা জানান, এলাকা থেকে ফোন করে লোকজন বলেন ‘খবরডা কিতা ভাই। কহন অইব। আমরা তো অফেক্ষায় আছি।’ রাজনীতির মাঠে পরিচ্ছন্ন ইমেজধারী শফী আহমেদ জানান, ২০০৬ সালে তিনি মনোনয়ন পেয়েছিলেন। তখন নির্বাচন না হওয়ায় ২০০৮ সালে তার মনোনয়ন হাতছাড়া হয়। এবার এই আসনে বিএনপির সাবেক স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের স্ত্রী তাহমিনা বাবর শ্রাবণী ২০ দলীয় জোটের পক্ষে প্রার্থী হওয়ায় আসনটি আওয়ামী লীগের দখলে রাখার চ্যালেঞ্জ বেড়েছে। তৃণমূলের মানুষের কাছে জনপ্রিয় এই নেতা বলেন, আমি যদি মনোনয়ন পাই তাহলে আসনটি আওয়ামী লীগের থাকবে বলে আশাবাদী। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে রাজনৈতিক দলগুলোর মনোনয়ন প্রত্যাশী ও তাদের বিপুল কর্মী-সমর্থক এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন। রাজপথ তাদের পদভারে মুখরিত। কেউই একক প্রার্থী না দেখে এলাকায় যেতে চান না। মনোনয়ন চূড়ান্ত হলে তারা ঢাকা ছাড়বেন। এদিকে রাজধানীতে থাকতে আবাসিক হোটেলগুলোতে এখন মনোনয়ন প্রত্যাশী ও তাদের কর্মী-সমর্থকরা ভিড় করছেন। আবার কেউবা আত্মীয়-স্বজনের বাসায় থাকছেন। এছাড়া মনোনয়ন প্রত্যাশীর অনেকে সংশ্লিষ্ট দলগুলোর মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যদের বাসা-অফিসে দিনরাত দৌড়াদৌড়ি করছেন, শেষ মুহূর্তের তদ্বির চালাচ্ছেন। ধানম-ি আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে ৯-১২ নবেম্বর দলীয় মনোনয়ন ফরম বিতরণ ও জমাদান কার্যক্রম চালিয়েছে আওয়ামী লীগ। তিন শ’ আসনে ৪ হাজার ২৩ জন আওয়ামী লীগের মনোনয়নের জন্য আবেদনপত্র ক্রয় করেছেন। প্রতিটি মনোনয়ন প্রত্যাশীর সঙ্গে কমপক্ষে তিন শতাধিক কর্মী-সমর্থকও ঢাকায় এসেছেন। অধিকাংশ মনোনয়ন প্রত্যাশী ও তাদের কর্মী-সমর্থকরা এখন ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করছেন। অনেক প্রার্থী ঢাকঢোল, ব্যান্ড পার্টি ও সাউন্ড সিস্টেমে গানবাজনায় মেতে ওঠে বিশাল বিশাল বহর নিয়ে ফরম সংগ্রহ ও জমা দেন। এদিকে বিএনপির চিত্রও একই। ১২-১৬ নবেম্বর পর্যন্ত টানা ৫ দিন বিএনপির একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন ফরম বিতরণ ও জমাদান কার্যক্রম চলে। ৩০০ আসনে প্রায় ৫ হাজার বিএনপি মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। এসব মনোনয়ন প্রত্যাশীর সঙ্গে তাদের বিপুল কর্মী-সমর্থক ঢাকা ছাড়বেন না মনোনয়ন চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত। তারাও ঢাকার বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে থাকছেন। এ কারণে হোটেলগুলোতে সিট খুব কমই খালি থাকছে। এছাড়া জাতীয় পার্টিসহ (জাপা) বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী ও তাদের কর্মী-সমর্থকরা রাজধানীতে আছেন একই উদ্দেশে। ব্রাক্ষণবাড়িয়া-৪(কসবা-আখাউড়া) আসনে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপকমিটির সহসম্পাদক নারায়ণ সাহা মনি। তিনি জানান, মনোনয়নপত্র কেনার পর থেকে দিনভর এলাকার সাধারণ মানুষের জিজ্ঞাসা কবে সব চূড়ান্ত হবে। আদৌ আমি পাব কিনা। এসব প্রশ্ন নিয়ে একের পর এক টেলিফোন। তিনি বলেন, আমি সমর্থকদের বলছি দল চাইলে মনোনয়ন পাব। দলের পক্ষ থেকে যদি অন্য কাউকে মনোনয়ন দেয়া হয় তার পক্ষ হয়ে কাজ করার জন্য বলছি। এজন্য সবাইকে মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে। টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখিপুর) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী সরকার আরিফুজ্জামান ফারুক। ১৯৮৪-৯১ পর্যন্ত বাসাইল উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন তিনি। এর পর ঢাকায় রাজনীতি করেছেন। ২০০০-২০০৮ সাল পর্যন্ত সখিপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের অর্থবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন তিনি। ২০০৫-০৮ পর্যন্ত টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তৃণমূল মানুষের জনপ্রিয় এই নেতা। বর্তমানে তিনি বাসাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ম-লীর সদস্য। ২০০৮ এর নির্বাচনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন তিনি। এবারের নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন আরিফুজ্জামান। তিনি জানান, এলাকা থেকে প্রতিদিন শত শত মানুষ ঢাকায় আসছে। দিনে কমপক্ষে হাজারও ফোন আসে মনোনয়নের খবর নেয়ার জন্য। সবাই অধীর আগ্রহে আছেন। তারা জানতে চান, কে মনোনয়ন পাচ্ছেন। আমি পাচ্ছি কিনা। তিনি বলেন, এই আসনে আমার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আমি যদি মনোনয়নের টিকেট পাই তাহলে বিপুল ভোটে বিজয়ী হব বলে আশাবাদী। নেত্রকোনা-২ (সদর-বারহাট্টা) আসনের আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী শামসুর রহমান লিটন (ভিপি লিটন) জানান, মনোনয়ন ফরম কেনার সময় থেকে ঢাকায় বিপুল কর্মী-সমর্থক অবস্থান করছেন। সবাই ভালবেসে আসছেন। সাবেক এই ছাত্রনেতা জানান, দিনভর এলাকা থেকে সাধারণ মানুষের টেলিফোন আসছে। সবাই জানতে চাচ্ছেন মনোনয়ন কবে চূড়ান্ত হবে। আমি পাব কিনা। সবাই নিশ্চিত খবর জানতে চান। জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক লিটন জানান, নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের আগ্রহের কোন শেষ নেই। জামালপুর-৪ আসনের আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী অধ্যক্ষ আব্দুর রশিদ জানান, প্রতিদিন পর্যাপ্ত ফোন আসছে এলাকা থেকে। কে মনোনয়ন পাচ্ছেন? এ নিয়ে সকলের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ। গ্রামগঞ্জে এখন শুধু এই আলোচনাই। সবাই আমার জন্য দোয়া-মানত করছেন। প্রতিদিন হাজারও মানতের খবর পাই। এলাকায় নয়টি ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের নেতা, উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাসহ জনপ্রতিনিধর সবাই আমার পক্ষে। অনেকেই ঢাকায় আত্মীয়-স্বজনসহ পরিচিতজনের বাসায় উঠেছেন। কেউ হোটেলে আছেন। তিনি বলেন, ৩০ বছর ধরে আমি দলের পক্ষে কাজ করছি। তাই সাধারণ মানুষ আমাকে খুব ভালবাসে। মনোনয়ন কেনার আগে থেকেই অনেকে ঢাকায় অবস্থান নিয়েছেন। তিনি জানান, জরিপের ভিত্তিতে এবার মনোনয়ন দেয়া হবে। তাই আমি মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী। তেজগাঁও আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বাংলাদেশ শিক্ষক সমন্বয় পরিষদের এই সভাপতি বলেন, দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যারা মনোনয়নের জন্য চূড়ান্ত হবেন সোমবার তাদের এসএমএস করে প্রাথমিকভাবে জানানো হবে। তাই আমিসহ দলের নেতাকর্মীরা এসএমএসের জন্য অপেক্ষা করছি। নেত্রকোনা-৪ আসনে বিএনপির মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন মদন উপজেলা বিএনপির শিল্প বিষয়ক সম্পাদক কে এম জহির ফারুক। নেত্রকোনা জেলা বিএনপির এই সদস্য জানান, আমার কর্মী-সমর্থকরা অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছে কখন মনোনয়নের বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। খবর জানতে প্রতিদিন শত শত মানুষ যোগাযোগ করছেন বলেও জানান তিনি। তরিকত ফেডারেশনের সাবেক মহাসচিব এমএ আওয়াল লক্ষীপুর-১ আসন থেকে এবার নির্বাচন করবেন। ১৫ দলের সমন্বয়ে গঠিত ইসলামিক ডেমোক্র্যাটিক এলায়েন্সের পক্ষ থেকে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন তিনি। তবে ভোট করবেন নৌকা প্রতীক নিয়ে। তিনি জানান, আমাদের জোট থেকে মনোনয়ন সংগ্রহ করলেও মহাজোট থেকে নির্বাচন করব। মনোনয়ন নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রচুর আগ্রহের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, সবার মধ্যে একটাই কথা, কবে মনোনয়নের ঘোষণা আসবে। যদি মনোনয়ন পাই কেউ গরু, কেউবা জমি বিক্রি করে নির্বাচনের জন্য অর্থ সহায়তা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। আমি মানুষের ভালবাসায় মুগ্ধ। বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট ও মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ এমএ সাত্তার। ৩৯ বছর ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে তিনি যুক্ত। লক্ষীপুর-৩ আসন থেকে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন তিনি। এলাকার মাটি-মানুষের নেতা হিসেবে পরিচিত সাত্তার জানান, আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন কেনার পরই সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা বেড়েছে। যদিও সবার চাওয়াকেই প্রাধান্য দিয়ে আমি মনোনয়ন সংগ্রহ করেছি। তিনি বলেন, প্রতদিন প্রচুর টেলিফোন আসে এলাকা থেকে। সবাই জানতে চান কবে মনোনয়ন চূড়ান্ত হবে। অনেকেই ইতোমধ্যে ঢাকায় এসেছেন। উঠেছেন আত্মীয়-স্বজনের বাসায়। শ্যামলী, ফকিরাপুল, হাটখোলা, মতিঝিলসহ বিভিন্ন এলাকার হোটেলে আছেন আমার এলাকার কর্মী-সমর্থক। তিনি জানান, আমি সবাইকে বলছি, মনোনয়নের বিষয়ে এখনও দল থেকে কিছু জানানো হয়নি। দল যেটা সিদ্ধান্ত নেবে তা মেনে নেব। যদি অন্য কাউকে মনোনয়ন দেয় তার হয়ে কাজ করব। নেত্রকোনা-১ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি মোস্তাক আহমেদ রুহী জানান, এবারও আওয়ামী লীগ থেকে প্রার্থী হচ্ছি। মনোনয়ন নিশ্চিত হওয়ার খবর জানতে সকাল থেকে রাত একটা পর্যন্ত এলাকার কর্মী-সমর্থকের ফোন আসে প্রতিদিন। সাবেক এই ছাত্রনেতা বলেন, সবাই ভালবেসে ফোন করে। আমি যতদূর সম্ভব সবার প্রশ্নের জবাব দেয়ার চেষ্টা করি। ঢাকায় দেড় শতাধিক কর্মী-সমর্থক অবস্থান করছে জানিয়ে তিনি বলেন, সবাই শেষ মুহূর্তের খবরের জন্য অপেক্ষা করছেন। ইতোমধ্যে অনেককে বুঝিয়ে-শুনিয়ে গ্রামে পাঠিয়েছি।
×