ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

উইন্ডিজের বিপক্ষে আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৭:১৪, ১৭ নভেম্বর ২০১৮

উইন্ডিজের বিপক্ষে আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে যেভাবে ঘুরে দাঁড়াল বাংলাদেশ তাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজে ভাল খেলার আত্মবিশ্বাস মিলে গেছে। জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে টেস্টে অধিনায়ক থাকা মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ তাই মনে করছেন। জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে সিরিজের পর উন্নতির জায়গা খুঁজে পাওয়ার সঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ নিয়ে মাহমুদুল্লাহ বলেছেন, ‘ক্রিকেট খেলাটাই এমন, আপনি যদি এক শ’ করেন কিংবা দুই শ’ পঞ্চাশ করেন তারপরও ব্যক্তিগতভাবে মনে হবে আমার এই জায়গাতে কাজ করা দরকার। কারও যদি সুইং, স্পিন কিংবা সুইপ শটে দুর্বলতা থাকে সেখানে উন্নতি করার সুযোগ থাকে। এই ম্যাচটা (জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে মিরপুর টেস্টে) জিতে যেহেতু আবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে নামবো, এরজন্য এটা ভাল একটা কামব্যাক। ব্যাটসম্যানদের জন্য ভাল হয়েছে, অনেকেই ভাল করেছে। সবাই একসঙ্গে ভাল করবে না। কখনও টপঅর্ডার রান করবে, কখনও মিডলঅর্ডার রান করবে। যার যার পজিশন থেকে সবাই চেষ্টা করছে। সবাই ট্রেনিং সেশনগুলোতে চেষ্টা করছে। কারণ আমাদের ব্যাটিং নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তা ছিল। এই ম্যাচে (মিরপুর টেস্টে) রান করাতে ব্যাটসম্যানদের আত্মবিশ্বাস আরও ভাল হবে। এই আত্মবিশ্বাস আমাদের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজেও কাজে দেবে।’ ওয়েস্ট ইন্ডিজের চেয়ে জিম্বাবুইয়ে দুর্বল দল। সেই দলের কাছে সিলেটে নাস্তানাবুদ হয়েছে বাংলাদেশ। মিরপুর টেস্ট না জিতলেতো সিরিজই হেরে যেতে হতো। শেষ পর্যন্ত জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে সিরিজ ১-১ ড্র করা গেছে। তবে বছরজুড়ে যেভাবে ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ হচ্ছিলেন তা থেকে ঘুরে দাঁড়ানো গেছে। এই বিষয়টিই বাংলাদেশ দলকে স্বস্তি দিচ্ছে। এই স্বস্তি নিয়ে এখন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ভাল করা গেলেই হলো। ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশ দেশের মাটিতে অপ্রতিদ্ব›দ্বী হয়ে উঠেছে। টি২০তে যে দল দিনটিতে ভাল করবে তারাই জিতবে। যত চিন্তা টেস্ট নিয়েই। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ। ২২ নবেম্বর চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে প্রথম ও ৩০ নবেম্বর মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট শুরু হবে। এরপর শুরু হবে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ। ওয়ানডে সিরিজের তিনটি ম্যাচ হবে ৯, ১১ ও ১৪ ডিসেম্বর। প্রথম দুটি ওয়ানডে মিরপুরে ও শেষটি সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে হবে। এরপর তিন ম্যাচের টি২০ সিরিজও অনুষ্ঠিত হবে। টি২০ সিরিজের প্রথম ম্যাচ সিলেটে ১৭ ডিসেম্বর, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ম্যাচ যথাক্রমে ২০ ও ২২ ডিসেম্বর মিরপুরে অনুষ্ঠিত হবে। টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশের জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজ আতঙ্ক হয়ে ধরা দিতে পারে। এ বছরই ওয়েস্ট ইন্ডিজে গিয়ে দুই টেস্টেই হেরেছে বাংলাদেশ। এবার দেশের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বিপাকে ফেলার পালা। তা কী সম্ভব? সম্ভব যদি উইকেটে স্পিনটা ঠিকমতো ধরে। পেস আক্রমণে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে কুলিয়ে ওঠা সম্ভব নয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসাররা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে। ব্যাটিংয়েও দুই দলই সমানে সমান হবে। আবার যদি তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান না খেলতে পারেন তাহলে অনেক কঠিন হয়ে পড়বে। একটিই পথ স্পিনে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে কাবু করতে হবে। এ জন্য উইকেটটাও সেইরকমই পেতে হবে। মাহমুদুল্লাহই যেমন বলেছেন, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে বসে চিন্তা করব কেমন উইকেট চাচ্ছি। ওদের দলও আমাদের দেখতে হবে, প্লাস হচ্ছে আমরা সবসময় যে স্পিন ফ্রেন্ডি উইকেট করি, সেই দিকেই হয়তো আমরা যাব।’ জিম্বাবুইয়ের পেসাররাই বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের বারোটা বাজিয়ে দিয়েছেন। সেখানে ওয়েস্ট ইন্ডিজ পেসাররাতো আরও গতি নিয়ে বল করবেন। কিভাবে সামাল দেয়া যাবে? মাহমুদুল্লাহ পূর্বের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর দিকেই জোর দিচ্ছেন। বলেছেন, ‘বিষয়টি আমি এভাবে চিন্তা করছি না। ওদের যে পেস বোলিং আছে (রোচ, গ্যাব্রিয়েল) সবাইকে আমরা ওয়েস্ট ইন্ডিজে খেলেছি, ওই অভিজ্ঞতাটুকু আছে ওরা কেমন বোলিং করতে পারে। তাছাড়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের উইকেট এবং বাংলাদেশের উইকেটতো এক নয়।’ এখানেই ভরসা। কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজ সম্প্রতি ভারতের বিপক্ষে খেলে বাংলাদেশে সিরিজ খেলতে এসেছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ উপমহাদেশের কন্ডিশনের সঙ্গে এ মুহ‚র্তে পুরোপুরি মিলে গেছে। তাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ আরও পরিণতও হয়ে এসেছে। তবে মাহমুদুল্লাহ মনে করছেন, ‘অবশ্যই। যেহেতু ওরা কিছুদিন আগে ভারতের বিপক্ষে সিরিজ খেলেছিল। ওটা ওদের কিছুটা হলেও হেল্প করতে পারে। এখানকার কন্ডিশনও কিছুটা ভিন্ন। আমরা যদি আমাদের হোম কন্ডিশনটা আমাদের মতো করে ট্রিপিকাল করে নিতে পারি, তাহলে ম্যাচের রেজাল্ট আমাদের পক্ষে আসতেও পারে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আমরা কতটা ভাল ক্রিকেট খেলছি সেটা। তারা অনেক ভাল দল। আমরা মানসিকভাবে ও শারীরিকভাবে তৈরি থাকতে হবে টাফ উইকেটে খেলার জন্য।’ সঙ্গে চিন্তার জায়গাও জানালেন মাহমুদুল্লাহ, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের নিয়ে আমাদের কিছুটা হলেও দুশ্চিন্তা থাকলে আমাদের মধ্যে এই বিশ্বাস আছে আমরা আমাদের স্কিলের পূর্ণ ব্যবহার করতে পারব।’ স্কিলের পুনর্ব্যবহার করা গেলে জেতাও সম্ভব। সেই জয় পাওয়ার আত্মবিশ্বাস জিম্বাবুইয়েকে হারিয়েই মিলে গেছে বাংলাদেশের। এখন বাংলাদেশ দল আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছে।
×