ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঘর পেয়ে হাসি ফুটল ১২শ’ ১১ পরিবারে

প্রকাশিত: ০৬:৫৮, ১৭ নভেম্বর ২০১৮

 ঘর পেয়ে হাসি ফুটল  ১২শ’ ১১ পরিবারে

সংবাদদাতা, বোয়ালমারী, ফরিদপুর, ১৬ নবেম্বর ॥ বুদ্ধি প্রতিবন্ধী নারী ষাটোর্ধ মালঞ্চ, এর ওর কাছে চেয়ে চিন্তে খেয়ে-নাখেয়ে চলছিল তার দিন। স্বামী শুকুর শেখ মারা গেছে বহু আগেই। মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকুও ছিল না তার। হঠৎ খবর এল মালঞ্চর জন্য থাকার ঘর বানিয়ে দেয়া হবে, হলোও তাই। দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়তে লড়তে ক্লান্ত এ নারী এখন আশ্বস্ত, থাকার জন্য নিজের একটি বাড়ি হয়েছে তার। বুধবার সরজমিনে ফরিদপুরের বোয়লমারী উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নের মজুরদিয়া গ্রামে মালঞ্চর ওই নতুন ঠিকানায় গিয়ে পাওয়া গেল তার মেয়ে সবুরনকে (৩২)। সে জানাল, তার মা আগের মতোই গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে কাজ করে খায়, তবে নিজের একটি স্থায়ী আশ্রয় হওয়ায় এলাকায় তাদের পরিবারের মর্যাদা বেড়েছে। একই ইউনিয়নের দুস্থ-কর্মহীন প্রৌঢ় পাশের গ্রামের আজিজার অথবা মজুরদিয়া বাজারের কাছে আরেক বুদ্ধি প্রতিবন্ধী নারী সফুরার দিনও বদলেছে একইভাবে। জেলার দুই উপজেলা আলফাডাঙ্গা ও বোয়ালমারীর ১২১১টি পরিবারের মাঝে এখন খুশির বন্যা বইছে, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত নতুন ঘর পেয়ে। দেশের দারিদ্র্যকে জয় করার লক্ষ্যে গৃহনির্মাণের যে যাত্রা শুরু হয়েছিল তার ৯০ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে ফরিদপুর জেলায়। সরকার প্রধানের প্রতিশ্রুতির ঘর পেয়ে খুশি এই জেলার হতদরিদ্ররা। তবে জনপ্রতিনিধিদের দাবি সরকারের বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ আরও বাড়ানো। জানা গেছে, সরকারের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় দশ শতাংশের মধ্যে যাদের জমি আছে ঘর নেই, এমন অসহায় দুস্থ ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের তালিকা করে উপজেলা প্রশাসন সংশ্লিষ্ট দফতরের অনুমোদন নিয়ে শুরু করেছে গৃহনির্মাণের কাজ। দুই অর্থ বছরের ৪ হাজার ৪৬টি গৃহনির্মাণ শুরু করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। সরকার প্রতি ঘরের ব্যয় ধার্য করেছে ১ লাখ টাকা। ঘর নির্মাণ কাজের তদারকিতে আছেন স্ব স্ব উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাগণ। এই পর্যন্ত আলফাডাঙ্গা ও বোয়ালমারী উপজেলার ১২১১টি বসতঘর নির্মাণ করে স্থানীয় প্রশাসন সুবিধাভোগীদের বুঝিয়ে দিয়েছে। বোয়ালমারী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকির হোসেন এই প্রকল্পে ৩৩১টি ঘর নির্মাণ করেছেন। তিনি জানান, ঘর নির্মাণে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১ লাখ টাকা। এর মধ্যে প্রতিটি পরিবার পাচ্ছে একটি সেমিপাকা দোচালা টিনের ঘর ও টয়লেট। ‘আমাদের ঘর-বাড়ি কিছুই ছিল না, ছিল না বেঁচে থাকাও কোন অবলম্বন, সরকার আমাদের ঘর দিয়েছে, অনেক খুশি আমরা- এমনটি জানালেন বোয়ালমারী উপজেলার পরমেশ্বর্দী ইউনিয়নের দরিদ্র বিধবা নারী হাফেজা বেগম। ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা জয়ন্তী রুপা রায় এ বিষয়ে বলেন, ‘আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় গৃহহীনদের বসতঘর নির্মাণ কাজ শেষ করেছি। সুবিধা বঞ্চিতরা এই ঘর পেয়ে বেশ খুশি। চেষ্টা করেছি সময়মতো এবং গুণগতমান ঠিক রেখে ঘরগুলো তৈরি করতে। সে জন্য নিয়মিত তদারকি করতে হয়েছে।’ তিনি জানান, তার উপজেলাতে ৮শ’ ৮০টি গৃহনির্মাণ করা হয়েছে।
×