ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

হোটেল-রেস্তরাঁয় অবাধে বিক্রি হচ্ছে পচা-বাসি খাবার

প্রকাশিত: ০৬:৫৫, ১৭ নভেম্বর ২০১৮

 হোটেল-রেস্তরাঁয় অবাধে বিক্রি  হচ্ছে পচা-বাসি খাবার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর হোটেল-রেস্তরাঁয় অবাধে বিক্রি হচ্ছে পচা-বাসি খাবার। যা খেয়ে পেটের পীড়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। এজন্য বিভিন্ন সময় এসব হোটেল-রেস্তরাঁকে জেল-জরিমানা করা হলেও অনিয়ম বন্ধ হচ্ছে না। ‘নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ’ বলছে, দ্রুতই রাজধানীর হোটেল-রেস্টুরেন্টকে শৃঙ্খলার মধ্যে আনা হবে। রাজধানীজুড়ে গড়ে উঠেছে বহু হোটেল-রেস্তরাঁ। যেগুলোতে প্রতিদিন খাবার খাচ্ছেন লাখো মানুষ। কিন্তু কি খাচ্ছেন তারা? সরেজমিনে দেখা যায়, রেস্তরাঁর টয়লেটের পাশে রান্নাঘরে চলছে রান্নাবান্না। আর ওই খাবারের ওপর মাছি উড়ে এসে বসছে। দোকানের মালিক আমির হোসেন বলেন, দোকানে অনেক কর্মচারী তারা বার বার বাথরুমে যাওয়া-আসা করে। এজন্য বাথরুমের দরজা খোলা থাকে। তাছাড়া এটা সব সময় বন্ধই থাকে। ফ্রিজে জমিয়ে রাখা হয়েছে কয়েকদিনের পুরনো রান্না করা মাংস। যেগুলো প্রায় পচে গেছে। এ মাংসই গরম করে খাওয়ানো হবে ক্রেতাকে। শিঙ্গাড়া-সমুচা ভাজা হচ্ছে অনেকদিনের পোড়া তেলে। জাব্বার খান মাঝারি মানের হোটেলের মালিক। তিনি বলেন, খাবারের মধ্যে পড়ে থাকা ছোট একটা চুল অনেক বড় ক্ষতির কারণ। এটা ব্যাক্টেরিয়া বহন করে। তিনি স্বীকার করেছেন সম্পূর্ণরূপে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে খাবার পরিবেশন করা হয় না। বসুন্ধরা সিটি শপিংমলের পেছনে রয়েছে কয়েকটি খাবারের দোকান। যেখানে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পেশাজীবীরা খেয়ে থাকেন। এসব দোকানে মানা হচ্ছে না কোন আইন। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পরিবেশন করা হচ্ছে খাবার। তারপরও বাধ্য হয়েই খাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। মাঝারি মানের এসব হোটেলে খেতে আসা একজন ক্রেতার সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, আমরা যারা ব্যাচলর বা ছোট চাকরি করি, তাদের ভরসা হলো এসব মাঝারি ধরনের খাবারের দোকান। শুধু স্বাস্থ্যসম্মত হলেই তো চলবে না, দামের কথাও মাথায় রাখতে হয়। তাই নিরুপায় হয়ে এসব হোটেলই শেষ ভরসা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিয়মিত এসব খাবার খেলে ভয়াবহ ক্রনিক রোগ হতে পারে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক নাজিমুল হক ভূঁইয়া বলেন, দীর্ঘদিন এসব অস্বাস্থ্যকর খাবার খেলে ক্যান্সার, আলসার, গ্যাস্ট্রিকসহ নানা রোগ হতে পারে। খাবারে যে কাপড়ের রং ব্যবহার করা হচ্ছে তা আমাদের জন্য ক্ষতিকর। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের পরিচালক মাহাবুব কবির বলেন, সব হোটেল-রেস্তরাঁকে শৃঙ্খলার মধ্যে আনা হবে। শিগগিরি পুরো ঢাকা শহরের হোটেলের খাবারের মান নিয়ে কাজ শুরু করা হবে। প্রথম একটা জোনকে পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে ধরা হয়েছে। সেই কাজ শেষ হলে পুরো ঢাকা শহরের রেস্টুরেন্টগুলোর ওপর জরিপ করা হবে। এরপর আমরা হোটেলের মানের ওপর নির্ভর করে লাল, হলুদ বিভিন্ন স্টিকার লাগিয়ে দেব।
×