ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সফল সবজি চাষী সানজিদার গল্প

প্রকাশিত: ০৬:৫০, ১৭ নভেম্বর ২০১৮

 সফল সবজি চাষী সানজিদার গল্প

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার কুজাইল দক্ষিণপাড়া ছোট যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত ছবির মতো একটি ছোট্ট গ্রাম। সেই গ্রামের একজন সফল নারী সানজিদা আক্তার তৃশা। নদীর তীরে স্বামীর পরিত্যক্ত এক খ- জমিতে সবজি চাষ করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন সানজিদা। স্বামীর পাশাপাশি তিনিও এখন নিজের সংসারে বড় ধরনের ভূমিকা রাখছেন। তার দেখে উৎসাহিত হচ্ছে আশপাশের অন্য নারীরাও। রানীনগর উপজেলার ২নং কাশিপুর ইউনিয়নের কুজাইল গ্রামে ছোট যমুনা নদীর তীরে গেলে চোখে পড়বে সবুজে ঘেরা সবজি খেত। খেতের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে পিঁয়াজ, রসুন, আলু, ধনিয়া, মরিচ ও মুলার গাছসহ নানা সবজি। সেই সঙ্গে রয়েছে সরষে আর পালংশাক। প্রায় ৩বছর আগে সানজিদা পার্শ্ববর্তী এক কৃষকের সবজি চাষ দেখে অনুপ্রাণিত হন। পুরুষরা পারলে মেয়েরা কেন পারবে না, এই ইচ্ছে শক্তি থেকে সানজিদাও শুরু করেন নদীর তীরে তার স্বামীর পরিত্যক্ত প্রায় ১৫ শতাংশ জমিতে বিভিন্ন প্রকারের সবজির চাষ। সফল নারী সানজিদা বলেন, এক সময় সংসারের কাজকর্ম শেষ করার পর বসে বসে অলস সময় কাটাতাম। পাশের এক কৃষক নদীর তীরে তার জমিতে বছরের পুরো সময় কোন না কোন সবজি চাষ করতেন। সেই কৃষক নিজের পরিবারের প্রয়োজন মিটিয়ে বাজারে সবজি বিক্রি করে ভালো লাভ করতেন। তখন আমার মনে একটি জেদ কাজ করল যে পুরুষরা পারলে আমি পারব না কেন। তখন আমার স্বামীর সহযোগিতা নিয়ে শুরু করি সবজি চাষ। প্রথম বছরে বাজারে আমার জমির মুলা সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হয়েছিল। তিনি আরও বলেন, সবজি জমিতে সার, বীজ বপন করি, পানি সেচ দেয়া থেকে শুরু করে ফসলের রক্ষণাবেক্ষণের সব কাজ নিজেই করি। সবচেয়ে বড় কথা হলো, আমি নিজের খেতে বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করে নিজের পরিবারকে খাওয়াতে পারছি। কারণ বর্তমানে বাজারের প্রতিটি সবজিতেই দেয়া থাকে মাত্রারিক্ত সার ও কীটনাশক, যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। আমি নিজেদের প্রয়োজন পূরণ করে স্থানীয় বাজারে এই সবজি বিক্রি করে বছরে প্রায় ১৫-২০হাজার টাকা আয় করছি। সেই অর্থ দিয়ে নিজের সন্তানদের পড়ালেখার খরচ যোগানসহ অন্যান্য চাহিদা পূরণ করতে পারছি। স্বামীর কাছ থেকে আমাকে আর হাত পেতে অর্থ নিতে হয় না। আজ আমার দেখাদেখি আশপাশের অনেক নারীরা এই সবজি চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করছে। আমার কাছে অন্যরা পরামর্শ নিতে এলে আমি তাদের সার্বিক সহযোগিতা ও তাদের উদ্বুদ্ধ করি। -বিশ্বজিৎ মনি, নওগাঁ থেকে
×