জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে শুক্রবার অস্ট্রেলিয়ার ডারউইনে এক ঐতিহাসিক সফর করেছেন। দেশের উত্তরাঞ্চলে এ শহরটিতে জাপানের বোমাবর্ষণের প্রায় ৭৫ বছর পর জাপানের কোন প্রধানমন্ত্রী বন্দরশহর ডারউইন সফরে গেলেন। উদীয়মান চীনকে মোকাবেলায় দুই দেশ তাদের মধ্যে সম্পর্ক জোরদারের পদক্ষেপ নিচ্ছে। খবর এএফপির।
আবের দুদিনের অস্ট্রেলিয়া সফরের গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হচ্ছে- দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও দৃঢ় প্রতিরক্ষা সম্পর্ক গড়ে তোলা এবং অস্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের সঙ্গে বৈঠকে বসা। দুই নেতা এ সপ্তাহান্তে এপেক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেয়ার জন্য পিএনজি যাওয়ার আগে এ উদ্যোগ নিচ্ছেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৯৪২-৪৩ সালে ডারউইন শহরে জাপানের বোমা হামলায় ২শ’ ৫০’র বেশি বাসিন্দা নিহত হয়েছিল। দেশটিতে সেটিই হচ্ছে মারাত্মক বিদেশী হামলা।
আবে ও মরিসন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহতদের উদ্দেশে শ্রদ্ধা জানাতে তাদের স্মৃতিসৌধে যাবেন। আবে ২০১৬ পার্লহার্বার গিয়েও নিহতদের স্মরণে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।
মরিসন এক বিবৃতিতে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী আবের এ সফর অত্যন্ত প্রতীকী ও তাৎপর্যপূর্ণ। এ সফরে আমাদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা, সম্প্রদায়গত ঐতিহাসিক সম্পর্কের মতো দু’দেশের মধ্যে দৃঢ় ও টেকসই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠবে। জাপানী নেতা ৩ হাজার ৪শ’ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয়ে নির্মিত এলএনজি পাইপলাইন প্রকল্পের উদ্বোধনী উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। জাপানের ইনপেক্সের বেশিরভাগ শেয়ার রয়েছে এ প্রকল্পে। প্রকল্পটি গত মাসে জাপানে প্রাকৃতিক গ্যাস পাঠানো শুরু করেছে। এটি বিদেশে জাপানের বৃহত্তম বিনিয়োগ এবং প্রকল্পটি অস্ট্রেলিয়ার অবস্থানকে সুদৃঢ় করবে। কারণ, এটি দেশটির প্রধান জ্বালানি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান।
অস্ট্রেলীয় কর্মকর্তারা বলেছেন, শুক্রবারের আলোচনায় নিয়মিত যৌথ সামরিক মহড়াসহ প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য একটি চুক্তিতে পৌঁছার ব্যাপারে চলমান প্রচেষ্টা স্থান পাবে। এ অঞ্চলে সম্প্রসারিত চীনা সামরিক ও অর্থনৈতিক তৎপরতার বিরুদ্ধে প্রশান্ত মহাসাগরে দু’দেশের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধির জন্য উভয় দেশের ইচ্ছা প্রতিফলিত হচ্ছে তাদের এ উদ্যোগে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্যাসিফিক পার্টনারশিপ বাণিজ্য চুক্তি থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করার পর বাণিজ্য চুক্তিটি পুনরায় সক্রিয় করার জন্য জাপান ও অস্ট্রেলিয়া নেতৃস্থানীয় ভূমিকা রাখছে। ক্যানবেরা ও টোকিও সম্প্রতি প্রশান্ত মহাসাগরীয় অবকাঠামো প্রকল্পও শুরু করেছে। এটি বেজিংয়ের তথাকথিত বেল্ট এ্যান্ড রোড উদ্যোগের বিকল্প হিসেবে ভূমিকা রাখবে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: