ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মানুষের মতো ব্যালেন্স রেখে চলবে রোবট

প্রকাশিত: ০৮:০১, ১৬ নভেম্বর ২০১৮

মানুষের মতো ব্যালেন্স রেখে চলবে রোবট

দ্বিপদ রোবট মানুষের মতো ভারসাম্য রক্ষা করে চলতে ফিরতে পারবে। মার্কিন রোবটিক্স বিজ্ঞানীরা সেই কৌশল তথা গাণিতিক সমীকরণ উদ্ভাবন করেছেন। লোকের ভিড়ের মধ্যে হেঁটে চলার সময় একে অন্যের গায়ে যাতে ধাক্কা না লাগে তা নিয়ে মানুষকে ভাবতে হয় না। এ ধরনের সহজ চলাচলকে কার্যকর করার জন্য প্রয়োজনীয় নানা ধরনের জটিল দক্ষতাকে কাজে লাগানোর উপযোগী করেই আমরা তৈরি হয়েছি। এখন টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষকের উদ্ভাবিত কৌশলের বদৌলতে রোবটও শীঘ্রই অনুরূপ ধরনের কাজ অর্থাৎ ভারসাম্য রক্ষা করে চলতে পারবে। সেখানকার হিউম্যান সেন্টারও রোবটিক্স ল্যাবরেটরির সহযোগী অধ্যাপক লুই সেনটিস ও তার দল দ্বিপদ রোবটের মানুষের মতো ভারসাম্য রক্ষার এক অভিনয় কৌশল সাফল্যের সঙ্গে প্রদর্শন করেছেন। জরুরী পরিস্থিতি মোকাবেলা থেকে শুরু করে প্রতিরক্ষা এবং বিনোদন পর্যন্ত সর্বক্ষেত্রে ব্যবহৃত রোবটের ক্ষেত্রে এই কৌশল বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। মানুষের শরীরের একটি ডায়নামিক কৌশল গোটা শরীরের ভারসাম্য রক্ষার কৌশলটিকে একটি গাণিতিক সমীকরণে রূপান্তরিত করে গবেষক দলটি তাদের ‘মার্কারি’ নামক রোবটটির প্রোগ্রাম করার কাজে এই সংখ্যাগত ফর্মুলাকে কাজে লাগাতে সক্ষম হয়েছেন। রোবটটিকে ছয় বছর ধরে তৈরি করা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছিল। গবেষক দলটি হেঁটে চলার সময় গড় মানুষের ভারসাম্য রাখতে না পেরে পড়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ত্রুটির মার্জিনটি হিসাব করে দেখতে পান যে ওটা এক সহজ সংখ্যা ২ সেন্টিমিটার। সেনটিস বলেন, মূলত আমরা এমন এক কৌশল উদ্ভাবন করেছি যাতে করে স্বয়ংক্রিয় রোবটকে শিখানো যায় যে অপ্রত্যাশিতভাবে ধাক্কা গেলে কিম্বা তার ওপর বিনা হুঁশিয়ারিতে শক্তি প্রয়োগ করা হলে কিভাবে ভারসাম্য বজায় রাখতে হয়। এটা এক বিশেষ মূল্যবান কৌশল যা আমরা মানুষরা বিশাল জনারণ্যের মধ্য দিয়ে হেঁটে চলার সময় প্রায়শই কাজে লাগিয়ে থাকি। সেনটিস বলেন, গোড়ালির নিয়ন্ত্রণ না থাকা দ্বিপদ বিশিষ্ট রোবোট এবং পুরোদস্তুর মানুষের অনুরূপ রোবট উভয়ের ক্ষেত্রে তাদের এই কৌশল ভারসাম্য রক্ষায় সফল হয়েছে। সক্রিয় বা জয়েন্ট বিশিষ্ট রোবটের তুলনায় গোড়ালির নিয়ন্ত্রণ না থাকা রোবটের পক্ষে মানুষের শরীরের মতো গতিশীলতা অর্জন অনেক বেশি কঠিন। কাজেই টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই গবেষক দলটি কন্টাক্ট-কনসিস্টেন্ট রোটেটরগুলো (টর্ক) সমন্বিত করে উদ্ভাবিত গোটা শরীরের এমন একটি দক্ষ নিয়ন্ত্রককে কাজে লাগান যেটি রোবটকে কোথাও কারর সঙ্গে বা কোন কিছুর সঙ্গে ধাক্কা খেলে পরবর্তী সম্ভাব্য সর্বোত্তম কি পদক্ষেপ নিতে হবে তা জানিয়ে দেয়ার জন্য কার্যকরভাবে ডাটা প্রেরণ ও গ্রহণ করতে পারে। তারা লো-লেভেল মোটর পজিশন কন্ট্রোলারের সঙ্গে ইনভার্স কাইনমেটিক্স নামে অভিহিত একটি গাণিতিক কৌশলও প্রয়োগ করেন। এই কৌশলটি প্রায়শই থ্রিডি এনিমেশনে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। সেনটিসের ল্যাবে তৈরি সমস্ত রোবটের মতো দ্বিপদ রোবোটটিও এনথ্রোপো মাফিক বা নরত্বারোপমূলক যা মানুষের চলাফেরা ও বৈশিষ্ট্যগুলোকে অনুকরণ করার লক্ষ্যে নির্মিত, সেনটিস বলেন, ‘আমাদের ল্যাবে আমরা মানুষের চলাফেরা নড়াচড়া ও শারীরিক আকার অনুকরণ করার চেষ্টা করি কারণ আমরা মনে করি মানুষের অনুরূপ হিসাবে উদ্ভাবিত কৃত্রিম বুদ্ধি এই প্রযুক্তিকে বৃহত্তর সাদৃশ্য এনে দেবে। এতে করে আমরা রোবটের আচরণ নিয়ে অধিকতর স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করব। সূত্র : ইউটি নিউজ
×