অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ চলতি ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৮০ শতাংশ রাজস্ব আদায় করতে সক্ষম হয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৫.২২ শতাংশ বেশি।
তবু রাজস্ব আদায়ে বড় ধরনের ঘাটতিতে পড়তে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। এনবিআরের প্রাথমিক হিসাবে প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) রাজস্ব ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৪৩ কোটি ৩ লাখ টাকা। যেখানে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৫৭ হাজার ২৪৭ কোটি ৩ লাখ টাকা।
প্রতিষ্ঠানটির ত্রৈমাসিক রাজস্ব আদায়ের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। এনবিআরের ত্রৈমাসিক আহরিত রাজস্ব বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, প্রথম তিন মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৭ হাজার ২৪৭ কোটি ৩ লাখ টাকা। এর বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৪৫ হাজার ৮১৭ কোটি টাকা। রাজস্ব ঘাটতি ১১ হাজার ৪৩ কোটি ৩ লাখ টাকা। প্রতিষ্ঠানটি লক্ষ্যমাত্রার ৭৯.৯৭ ভাগ রাজস্ব আদায় করতে সক্ষম হয়েছে। আর গত অর্থবছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫.২২ শতাংশ। লক্ষ্যমাত্রায় সবচেয়ে বেশি সাফল্য দেখিয়েছে আয়কর ও ভ্রমণ কর খাত। এই খাতে সর্বাধিক ১১.০৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। যদিও ঘাটতি থেকে বের হতে পারেনি এই খাত। এ খাতে মোট ঘাটতি ২ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা। আর সবচেয়ে কম আদায় হয়েছে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) খাতে। এ খাতে প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক। তিনটি খাত বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, আমদানি ও রফতানি শুল্কে প্রথম তিন মাসে ১৯ হাজার ১৫০ কোটি ১৩ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে এই খাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ১৫ হাজার ১৪৬ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। ঘাটতি ৪ হাজার ৩ কোটি ১৪ লাখ টাকা। গত অর্থবছরের তুলনামূলক বিচারে প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশ।
অন্যদিকে, ভ্যাট খাতে প্রথম প্রান্তিকে রাজস্বলক্ষ্যমাত্রা ছিল ২২ হাজার ৬৭৬ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। এর বিপরীতে আদায় ১৭ হাজার ৫২৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা। এ খাতে ঘাটতি ৫ হাজার ১৫১ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। যা গত অর্থবছরের তুলনায় দশমিক ৮৭ শতাংশ কম। অর্থাৎ প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক। তবে আয়কর ও ভ্রমণ কর খাতে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এখানে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১১.০৪ শতাংশ। যদিও ঘাটতি থেকে বের হতে পারেনি এ খাত। এ খাতে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৫ হাজার ৪২০ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। এর বিপরীতে আদায় ১৩ হাজার ১৪৫ কোটি ১১ লাখ টাকা। লক্ষ্যমাত্রার ৮৫.২৪ শতাংশ রাজস্ব আদায় করতে সক্ষম হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। আর মোট ঘাটতি ২ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা।
এ বিষয়ে এনবিআরের এক উর্ধতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোর তুলনায় বর্তমান বছরের রাজস্ব প্রবৃদ্ধি বেশ কম। তবে এনবিআরের আহরিত ও প্রদর্শিত রাজস্ব পরিসংখ্যানের সঙ্গে সিজিএ প্রদর্শিত অঙ্কের গরমিলের বিষয়টি বর্তমান বছরের শুরু থেকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে সংশোধন করা হচ্ছে। ফলে তথ্য সংরক্ষণে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনসহ সিজিএ অফিসের অনুরূপ পদ্ধতিতে হিসাব প্রদর্শিত হচ্ছে। এ বিবেচনায় জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের রাজস্ব প্রবৃদ্ধি হার বেশ সন্তোষজনক।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: