ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

শিল্পকলায় নাট্যোৎসব ও গুণীজন সংবর্ধনা

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ১৫ নভেম্বর ২০১৮

শিল্পকলায় নাট্যোৎসব ও গুণীজন সংবর্ধনা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ‘যুক্ত করো হে সবার সঙ্গে, মুক্ত করো হে বন্ধ’ স্লোগনে রাজধানীর সেগুন বাগিচায় শিল্পকলা একাডেমিতে শুরু হয়েছে নাট্যোৎসব ও গুণীজন সংবর্ধনা। লোকনাট্য গোষ্ঠীর ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত তিন দিনব্যাপী এ উৎসবের উদ্বোধন হয় বুধবার বিকেলে। একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে উৎসবের উদ্বোধন করেন বিশ্ব আইটিআই সাম্মানিক সভাপতি নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার। অতিথি ছিলেন সুপ্রীমকোর্টের ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু ও গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল কামাল বায়েজীদ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গুণীজন সংবর্ধনা দেয়া হয় বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য ৭ গুণীকে। এরা হলেনÑ প্রবীর মিত্র (চলচ্চিত্র), মোবারক হোসেন খান (সঙ্গীত), ড. ইনামুল হক (নাটক), আফরোজা বানু (নাটক), অধ্যাপক নিরঞ্জন অধিকারী (শিক্ষা), কবি নাসির আহমেদ (সাহিত্য) ও সুধীর চন্দ্র দাস (ব্যাংকিং)। মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্বলন ও ফুলের শুভেচ্ছার মধ্যদিয়ে শুরু হয় উদ্বোধনী পর্ব। উৎসব উদ্বোধনের সময় নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার বলেন, লোকনাট্য গোষ্ঠী পঞ্চ নাটকসহ যাত্রাও মঞ্চায়ন করে থাকে। দলটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে যে সংবর্ধনা দেয়া হচ্ছে এটার তাৎপর্য আছে। যে কোন উপলক্ষে গুণীজনদের সম্মাননা দেখানো অর্থ হচ্ছে, আমাদের পথিকৃৎদের স্বীকার করা, এতে তরুণ প্রজন্মরাও উদ্বুদ্ধ হয়। নাটক অসাম্প্রদায়িক চেতনার কথা বলে। দেশে সাম্প্রদায়িক উত্থান খুব বেশি দেয়া যাচ্ছে। সাম্প্রদায়িকতা আতঙ্কের বিষয়। মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে আমরা যে স্বাধীন ভূখ- পেয়েছি, আমরা যেন অসাম্প্রদায়িক চেতনায় তাতেই আত্মমগ্ন থাকি। সামনে জাতীয় নির্বাচন। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে যেন সহিংসতা না হয় এই প্রত্যাশা করি। এরপর অথিতিদের উত্তরীয় ও সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। পরে স্বাগত বক্তব্য রাখেন উৎসব আহ্বায়ক ও দলের সাধারণ সম্পাদক তাপস সরকার। শুভেচ্ছ বক্তব্য রাখেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সুশান্ত কুমার সাহা। সন্ধ্যায় মঞ্চস্থ হয় লোকনাট্য গোষ্ঠী প্রযোজিত নাটক ‘অন্ধকারের নিচে সূর্য’। অগ্নিদূতের রচনায় নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন উৎসব আহ্বায়ক ও দলের সাধারণ সম্পাদক তাপস সরকার। উৎসবের দ্বিতীয় দিন আজ বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠান শুরু হবে বিকেল সাড়ে ৫টায়। এতে সংক্ষিপ্ত আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন নাট্যজন মামুনুর রশীদ। এছাড়া আলোচনায় অংশ নেবেন অধ্যাপক ড. অসীম সরকার, ড. তপন বাগচী ও নাট্যজন লাকী ইনাম। এদিন সবশেষে থাকবে লোকনাট্য গোষ্ঠী প্রযোজিত নাটক ‘কুরুক্ষেত্রে শ্রীকৃষ্ণ’। সত্যপ্রকাশ দত্ত রচিত, শ্যামল দত্ত সম্পাদিত নাটকটির নির্দেশনায় তাপস সরকার। আগামীকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় শব্দ নাট্যচর্চা প্রযোজিত ‘চম্পাবতী’ নাটক মঞ্চায়নের মধ্যদিয়ে শেষ হবে তিন দিনব্যাপী এ উৎসব। পল্লীকবি জমিসউদ্দিনের ‘বেদের মেয়ে’ গল্প অবলম্বনে নাটকটি রচনা করেছেন সৈয়দ সামসুল হক এবং নির্দেশনা দিয়েছেন খুরশিদুল আলম। বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের উদ্যোগে মাসব্যাপী ‘জাগরণের নাট্য ও সাংস্কৃতিক উৎসব ॥ ‘হৃদয়ে আমার মুক্তিযুদ্ধ প্রগতির ধারা অপ্রতিরোধ্য’ স্লোগানে দেশব্যাপী চলছে ‘জাগরণের নাট্য ও সাংস্কৃতিক উৎসব ২০১৮।’ এ উৎসবের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন। এ উসবের অংশ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখবেন নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নাট্যজন লিয়াক আলী লাকী ও সেক্রেটারি জেনারেল কামাল বায়েজিদ। এ উপলক্ষে শিল্পকলা একাডেমির থিয়েটার ক্লাবে এক চা চক্রের আয়োজন করা হয়। এতে বিস্তারিত তুলে ধরেন ফেডারেশনের সদস্যরা। এতে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা তথা মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার মূলমন্ত্র নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে এবং সর্বসাধারণের মনে এর মূল্যবোধ সমুন্নত রাখতে বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের এই প্রয়াস। ঢাকা ও ঢাকার বাইরের সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর অংশগ্রহণে মাসব্যাপী চলবে ‘জাগরণের নাট্য ও সাংস্কৃতিক উৎসব ২০১৮।’ ১২ নবেম্বর ময়মনসিংহে এ উৎসবের উদ্বোধন হয়। আজ একই সঙ্গে জামালপুরের দয়াময়ী মোড়ে এ উৎসব হবে। আগামীকাল শুক্রবার দয়াগঞ্জে এবং ধারাবাহিকভাবে পরের দিন মিরপুর, নারায়ণগঞ্জ, বারিশাল, খুলনা, বরগুনা, চাঁদপুর, ফরিদপুর, রংপুর, দিনাজপুর, মাগুরা, চট্টগ্রাম, জয়পুরহাট, হবিগঞ্জ, সিলেট ও এ মাসের ৩০ তারিখ সিরাজগঞ্জে শেষ হবে এ উৎসব।
×