ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ভোট বানচালের চক্রান্তে পুলিশের ওপর হামলা ॥ কাদের

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ১৫ নভেম্বর ২০১৮

ভোট বানচালের চক্রান্তে পুলিশের ওপর হামলা ॥ কাদের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় দলটির নেতা মির্জা আব্বাসকে দায়ী করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নির্বাচন বানচাল করার জন্য বিনা উস্কানিতে পরিকল্পিতভাবে তারা এই হামলা করেছে। নির্বাচন পেছানোর দাবিতে নয়, নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রে বিএনপি এই হামলার উস্কানি দিয়েছে। এর মধ্যদিয়ে বিএনপি আবারও তাদের সন্ত্রাসী চেহারা প্রকাশ করেছে, প্রমাণ করেছে দলটি আসলেই সন্ত্রাসী দল। বুধবার বিকেলে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের প্রশ্ন রেখে বলেন, এ উস্কানি কারা দিল? তাহলে কি নির্বাচন পেছানোর জন্য? তারা পরিকল্পিতভাবে নয়াপল্টনে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে নিজেদের বীরত্ব জাহির করল। নির্বাচন বানচালের যে ষড়যন্ত্রের আশঙ্কা আমরা করেছিলাম, সেই ষড়যন্ত্রই কি তারা শুরু করে দিল? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের নেতাকর্মীদের ধৈর্য ধরার পরামর্শ দিয়েছেন বলেও জানান তিনি। নির্বাচন বানচালের মাধ্যমে ‘জনপ্রিয়, জননন্দিত’ শেখ হাসিনার সরকারকে ক্ষমতা থেকে হঠানো বিএনপির উদ্দেশ্য অভিযোগ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, তবে কোন যড়যন্ত্রেই কাজ হবে না। জনগণ সব চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে নির্বাচনে স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তিকে ভোট দেবে। পরিষ্কার কথা বলতে চাই, নির্বাচন হবে। যত ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত আর নাশকতা হোক- জনগণ ভোট দিতে আসবে। এই নির্বাচন জনগণের অনেক প্রত্যাশার নির্বাচন এবং দেশের জনগণ আকুল প্রতীক্ষা নিয়ে নির্বাচনে ভোট দেয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। তাই এই নির্বাচনকে বানচাল করতে গেলে, এই নির্বাচনকে বানচালের চক্রান্ত-নাশকতা-সহিংসতা যদি ঘটে বাংলাদেশের জনগণেই এই অপশক্তিকে প্রতিরোধ করবে। বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলায় পুলিশের ১৩ সদস্য আহত হয়েছে জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিনা উস্কানিতে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে। সন্ত্রাসী এই হামলায় ১৩ পুলিশ সদস্য মারাত্মকভাবে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তিনি বলেন, এই ঘটনায় বিএনপি আবার প্রমাণ করল, তারা সন্ত্রাসী দল। কানাডার আদালত বিএনপিকে সন্ত্রাসী দল হিসেবে রায় দিয়েছে। সেটা তারা আবার প্রমাণ করল। ওবায়দুল কাদের বলেন, পাল্টা আক্রমনে না গিয়ে নীরব দর্শকের ভূমিকায় ছিল পুলিশ। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক সাক্ষাত শেষে দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ঘটনা শুনেছেন। পুলিশ সেখানে পাল্টা আক্রমণ না করায় প্রধানমন্ত্রী তাদেরও ধন্যবাদ জানিয়েছেন এবং দলের নেতাকর্মীদের ধৈর্য ধরার পরামর্শ দিয়েছেন বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, আজকে যারা ঐক্যফ্রন্টের নামে তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন, আজকে তারা স্বরূপে উন্মোচিত হয়েছেন পল্টনে পুলিশের ওপর প্রকাশ্য দিবালোকে সাঁড়াশি হামলার মধ্য দিয়ে। ‘এ ধরনের পরিস্থিতি করে সরকার নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট করছে’- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন অভিযোগকে ‘মিথ্যাচার’ আখ্যায়িত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবরা আবারও সেই পুরনো মিথ্যাচার করেছেন। মিথ্যাচারই তো তাদের রাজনীতি। পুরনো অভ্যাসমত ভাঙ্গা রেকর্ড বাজাতে গেলেন। এত মিথ্যার বেসাতি কেন করলেন? তিনি বলেন, প্রকাশ্য দিবালোকে কী ঘটেছে সবাই দেখেছে। সেখানে টিভি ক্যামেরা ছিল, সাংবাদিক ছিল। তারা জানে, সেখানে কী ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় নির্বাচন কমিশন কী ব্যবস্থা নেয় তা দেখার অপেক্ষায় আছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা আজ প্রকাশ্য দিবালোকে অরাজকতা, নাশকতা সংঘটিত করেছে। চক্রান্তের দরজা প্রকাশ্যে খুলে দিল তারা। তাদের সেই দূরভিসন্ধির বিষয়ে নির্বাচনের কমিশনের বক্তব্য কী, তা আমরা জানতে চাই। ওবায়দুল কাদের বলেন, এই ঘটনায় আমরা বুঝলাম, তারা (জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট) নির্বাচনে এসেছে বোধহয় বানচালের একটা খেলা করতে। এতে তাদের মনে হয় নীলনক্সা হয়েছে, সেটা তারা বাস্তবায়ন করতে চায়। আজকে টেস্ট কেস তারা দেখাল। আমরাও এই টেস্ট কেস দেখলাম। কি করতে হবে কিংবা জবাব কিভাবে দিতে হবে, আমরা আইন ও নিয়মানুযায়ী আমরা প্রস্তুত হব। দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের বিষয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সেখানে আমাদের দলের সভাপতি স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, একজনকে নৌকার প্রতীকে মনোনয়ন দেয়া হবে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে দলীয় ও নৌকার প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে হবে। দলীয় প্রার্থীর বিরোধিতা করলে সঙ্গে সঙ্গেই আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হবে। সংবাদ সম্মেলনে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডাঃ দীপু মনি, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, একেএম এনামুল হক শামীম, প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, উপ দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।
×