ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ইতালিতে লিবীয় রাজনীতিকদের বৈঠক

লিবীয় সঙ্কট সমাধানে নতুন উদ্যোগ

প্রকাশিত: ০৪:৩০, ১৪ নভেম্বর ২০১৮

লিবীয় সঙ্কট সমাধানে নতুন উদ্যোগ

লিবিয়ার লৌহমানব খলিফা হাফতারসহ গুরুত্বপূর্ণ নেতৃবৃন্দ সঙ্কট সমাধানে সোমবার ইতালিতে পালেরমো সম্মেলনে বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন এবং দীর্ঘদিনের অচল রাজনৈতিক প্রক্রিয়া ও নির্বাচন অনুষ্ঠান বিষয়ে আলোচনা শুরুর জন্য তাদের সঙ্গে এ বৈঠকে বসছেন লিবীয় নেতারা। খবর এএফপির। প্যারিসে মে’তে ত্রিপলিভিত্তিক গবর্নমেন্ট অব ন্যাশনাল এ্যাকর্ড (জিএনএ) ও লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় দৃঢ়চেতা হাফতারের মধ্যে অনুষ্ঠিত শীর্ষ বৈঠকে ১০ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু এ তারিখে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্তের কোন অগ্রগতি হয়নি। দেশের একনায়ক মোয়াম্মার গাদ্দাফি ২০১১ সালে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরে এ বিশৃঙ্খল রাজনৈতিক পরিস্থিতির বাস্তবতা স্বীকার করে জাতিসংঘ বৃহস্পতিবার বলেছে, অন্তত ২০১৯-এর বসন্তের আগে নির্বাচন সম্ভব নয়। সিসিলির রাজধানী পালেরমোতে সম্মেলনে হাফতারের উপস্থিতির ব্যাপারে কয়েকদিন ধরে একটা সন্দেহ কাজ করছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি এখানে পৌঁছলে তাকে অভ্যর্থনা জানান ইতালীয় প্রধানমন্ত্রী জিউসেপে কান্টে। হাফতার ভিলা ইজিয়ায় ভোজসভায় অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি মঙ্গলবার ভোরে গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নেবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়। গবেষণা ও পরামর্শ প্রতিষ্ঠান লিবিয়া আউটলুকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ এলজার বলেছেন, হাফতার এর মধ্যেই লিবীয় সঙ্কটে দেশের যে কোন ভবিষ্যত চুক্তিতে প্রধান ব্যক্তি হিসেবে তার ভূমিকার গুরুত্ব তুলে ধরতে পালেরমো সম্মেলনকে ব্যবহারে সফল হয়েছেন এবং তার অবস্থানকে সুদৃঢ় করেছেন। বিশ্লেষকরা বলেছেন, সিসিলি শীর্ষ বৈঠকে সমঝোতার প্রশ্নে বিভিন্ন লিবীয় গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়ার ব্যাপারেই কেবল ঝুঁকি দেখা যাচ্ছে না, ঝুঁকি রয়েছে বিদেশী শক্তিগুলোর প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ আলোচ্যসূচীর ব্যাপারেও। মে মাসের শীর্ষ বৈঠকের মতো সিসিলি শীর্ষ বৈঠকে লিবিয়ার প্রধান নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে এবং তারা হচ্ছেন হাফতারসহ পূর্বাঞ্চলের পার্লামেন্টের স্পীকার আজুইলা সালাহ, জিএনএ প্রধান ফায়েজ আল সারাজ ও ত্রিপলিভিত্তিক উচ্চপরিষদের স্পীকার খালেদ আল মেচরি। সারাজ বৃহস্পতিবার এএফপির সঙ্গে এক সাক্ষাতকারে বিশৃঙ্খলায় বিপর্যস্ত উত্তর আফ্রিকার এ দেশটির ভবিষ্যত নির্মাণে একটি অভিন্ন লক্ষ্য খুঁজে বের করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্র্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। জিএন বলেছে, ন্যাশনাল এ্যাকর্ড নিরাপত্তা সংস্কার প্রচেষ্টার জন্য পালেরমো শীর্ষ বৈঠককে ব্যবহার করবে এবং এ সংস্কারে অন্তর্ভুক্ত থাকবে সেনাবাহিনীর ঐক্যসাধন একটি শাসনতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়া, অর্থনৈতিক সংস্কার ও সমান্তরাল প্রতিষ্ঠানগুলোর অবসান। সোমবারের ভোজসভার পর মঙ্গলবারের এ আলোচনায় অংশগ্রহণ করছেন যুক্তরাষ্ট্র, আরব দেশগুলো ও ইউরোপীয় দেশগুলোর প্রতিনিধিরা, মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি সোমবার বিকেলে সিসিলি এসে পৌঁছান। কন্টে গত সপ্তাহে বলেন, পালেরমো সম্মেলন লিবিয়ায় স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এবং সমগ্র ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য একটি মৌলিক পদক্ষেপ। ইতালির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও পার্লামেন্ট স্পীকার দুজনই সেপ্টেম্বরে লিবীয় সঙ্কটের জন্য ফ্রান্সকে দায়ী করেছেন। ত্রিপলিতে আগস্টের শেষের দিক থেকে সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ মিলিশিয়াদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ১শ’ ১৭ জন নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছো ৪শ’র বেশি লোক। এ প্রাণহানির পর ইতালি এ উদ্যোগ নেয়।
×