ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

রিজিয়া রহমান ও ফাতিমা রুমি পেলেন হুমায়ূন আহমেদ সাহিত্য পুরস্কার

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ১৩ নভেম্বর ২০১৮

রিজিয়া রহমান ও ফাতিমা রুমি পেলেন হুমায়ূন আহমেদ সাহিত্য পুরস্কার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আজ মঙ্গলবার দেশের সর্বোচ্চ পাঠকনন্দিত কথাশিল্পী হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন। জন্মদিনের আগের দিন না থেকেও স্মরণে এলেন এই কিংবদন্তির লেখক। প্রদান করা হলো এক্সিম ব্যাংক-অন্যদিন হুমায়ূন আহমেদ সাহিত্য পুরস্কার। সেই পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বললেন হুমায়ূন আহমেদ নেই, আবার হুমায়ূন আহমেদ আছে। আমরা যারা তার সাহচর্য পেয়েছি তাদের স্মৃতিতে তিনি উজ্জ্বল। আর যারা তার সান্নিধ্য পাননি, তারা তার সাহিত্যকর্মকে ভালবেসে নৈকট্য লাভ করেছেন। এভাবেই হুমায়ূন আহমেদ এখনও সর্বত্র বিরাজিত। সাহিত্যে সামগ্রিক অবদানের জন্য রিজিয়া রহমান এবং নবীন সাহিত্যশ্রেণীতে ‘সাঁঝবেলা’ উপন্যাসের জন্য ফাতিমা রুমিকে প্রদান করা হয়েছে এই পুরস্কার। পুরস্কার হিসেবে রিজিয়া রহমানকে পাঁচ লাখ টাকা এবং ফাতিমা রুমিকে এক লাখ টাকা প্রদান করা হয়। সোমবার বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে এ পুরস্কার প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বিচারকম-লীর সভাপতি ও জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর ও এক্সিম ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক সিরাজুল ইসলাম। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন। স্বাগত বক্তব্য দেন অন্যদিনের সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে রিজিয়া রহমানের শংসাবচন পাঠ করেন কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। ফাতিমা রুমির শংসাবচন পাঠ করেন কালি ও কলম সম্পাদক আবুল হাসনাত। অনুষ্ঠানের শুরুতে রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা গেয়ে শোনান হুমায়ূন আহমেদের দুটি প্রিয় গান ‘মাঝে মাঝে তব দেখা পাই’ ও ‘আজ জ্যোৎ¯œা রাতে সবাই গেছে বনে’ । পুরস্কারপ্রাপ্তির অনুভূতি ব্যক্ত করে রিজিয়া রহমান বলেন, এ পুরস্কারপ্রাপ্তি আমার জন্য একই সম্মানের, গর্বের এবং দুঃখ ও বেদনার। কারণ, ¯েœহভাজন হুমায়ূন আহমেদ আমার চেয়ে বয়সে অনেক ছোট। সেই অর্থে আমার স্মৃতি হয়ে যাওয়ার কথা এবং হুমায়ূন আহমেদের বেঁচে থাকার কথা। তার স্মৃতির স্মারক হিসেবে পাওয়া এ পুরস্কার অনেক গর্বের ও সম্মানের। তিনি আরও বলেন, প্রকৃত লেখক কখনও পুরস্কারের জন্য লেখেন না। সেই সুবাদে আমি সব সময় ভাল ও রুচিশীল পাঠক তৈরি করতে চেয়েছি। ফাতিমা রুমি বলেন, একজন নবীন লেখক হিসেবে হুমায়ূন আহমেদের নামাঙ্কিত এ পুরস্কার আমার জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি। এটাকে আমার লেখালেখিকে আরও বেশি অনুপ্রাণিত করবে। বিন্দু থেকে সিন্ধু পৌঁছে যাওয়ার আনন্দ উপভোগ করলাম এই পুরস্কারপ্রাপ্তির মাধ্যমে। আমি নিজে হুমায়ূন আহমেদের লেখার অনেক বড় ভক্ত। সেই সূত্রে তার নামাঙ্কিত পুরস্কারটি আমার জন্য নোবেল প্রাইজপ্রাপ্তির সমতুল্য। প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, হুমায়ূন আহমেদ আমাদের জীবনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে রেখেছেন। তাকে ছাড়া বাংলা সাহিত্যের কথা চিন্তা করা যায় না। তার সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব তিনি ঢাকায় একটি বিশাল পাঠকশ্রেণী তৈরি করেছেন। সাহিত্যচর্চার পাশাপাশি তিনি আধুনিক ও প্রগতিশীল চিন্তাধারার মানুষ ছিলেন। আসাদুজ্জামান নূর বলেন, একটু অদ্ভুত প্রকৃতির মানুষ ছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। তার মধ্যে একটা আধ্যাত্মিক ব্যাপার ছিল। তিনি অনেক কিছুই বলতেন, যা ঘটত। এটা ব্যাখ্যাতীত। সংস্কৃতিমন্ত্রী আরও বলেন, দৈহিকভাবে কোন মানুষই চিরদিন বেঁচে থাকেন না। কিন্তু প্রিয়জনরা কোন মানুষকে স্মরণ করলে তিনি চিরকাল বেঁচে থাকেন। হুমায়ূন আহমেদ তেমনই একজন। তিনি চিরকাল বেঁচে থাকবেন। রিজিয়া রহমানের একুশে পদক না পাওয়ার বিষয়ে আক্ষেপ করে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, তার মতো লেখকের একুশে পদক না পাওয়া আমাদের জন্য লজ্জার। ভবিষ্যতেই আমরা সেই লজ্জা মোচনের চেষ্টা করব। মেহের আফরোজ শাওন বলেন, একজন সাহিত্যিকের জীবন পরিপূর্ণতা পায়, যখন তার নামে পুরস্কার প্রবর্তিত হয়। এ পুরস্কার প্রবর্তনের মধ্য দিয়ে হুমায়ূন আহমেদের সাহিত্য জীবন পরিপূর্ণ হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, নবীন কথাসাহিত্যিকদের জন্য এ পুরস্কার তীব্র আকাক্সিক্ষত পুরস্কার হবে একদিন। হুমায়ূন আহমেদ স্মরণে ২০১৫ সালে প্রবর্তিত হয় ‘এক্সিম ব্যাংক-অন্যদিন হুমায়ূন আহমেদ সাহিত্য পুরস্কার’। ২০১৫ সালে শওকত আলী ও সাদিয়া মাহ্জাবীন ইমাম, ২০১৬ সালে হাসান আজিজুল হক ও স্বকৃত নোমান এবং ২০১৭ সালে জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত এবং মোজাফ্ফর হোসেন এ পুরস্কার পান। ‘ওহ মাই সুইট ল্যান্ড’ নাটকের মঞ্চায়ন ॥ সোমবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হলো জার্মান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র গ্যাটে ইনস্টিটিউট প্রযোজিত নাটক ‘ওহ মাই সুইট ল্যান্ড’। ঘণ্টাব্যাপ্তির নাটকটির একমাত্র নারী চরিত্র কোরিন জাবের একাধারে নাটকটির লেখিকা ও নাট্যরূপদানকারী। কোরিন জাবের এবং নাটকটির পরিচালক আমির নিজার জুবাই লেবানন ও জর্দানের শরণার্থী শিবিরের ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের বাস্তব চিত্রের পটভূমিতে প্রযোজনাটির পরিকল্পনা, সম্পাদনা ও নাট্যরূপ দিয়েছেন । বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে রোড শো, পথ নাটক ॥ স্টাফ রিপোর্টার বাগেরহাট থেকে জানান, ফকিরহাট উপজেলার বেতাগা ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে ‘শিশু কন্যার বিয়ে বন্ধ করি সমৃদ্ধ দেশ গড়ি, কন্যা শিশু বোঝা নয় যতœ নিলে রতœ হয়।’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী বাল্যবিয়ের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়তে র‌্যালি, রোড শো, পথনাটক ও আলোচনা সভা সোমবার বেতাগা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে শুরু করে উপজেলাব্যাপী অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেশের এই প্রথম কোন একটি ইউনিয়ন পরিষদে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে ব্যাপক আয়োজনে সামাজিক আন্দোলন গড়তে এই অনুষ্ঠান হলো।
×