ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নোয়াখালীতে সব দল ও জোট প্রার্থীরা মাঠে

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ১৩ নভেম্বর ২০১৮

নোয়াখালীতে সব দল ও জোট প্রার্থীরা মাঠে

গিয়াস উদ্দিন ফরহাদ, নোয়াখালী ॥ সারাদেশের ন্যায় ভোট উৎসবে মেতে উঠেছে নোয়াখালীর নয়টি উপজেলার ছয়টি আসনের সকল রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ তথা ১৪ দলীয় জোট এবং বিএনপি তথা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট অথবা ২০ দলীয় জোটের প্রার্থীরা পুরোপুরি মাঠে নেমে পড়েছে। ভোটের এ উৎসবেও থেমে নেই বিভিন্ন দলের পেশাজীবীরাও, শিল্পী, খেলোয়াড়, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক কর্মীসহ বিভিন্ন পেশার পরিচিত মুখ নির্বাচনী প্রার্থী হওয়ার জন্য পছন্দের দলগুলো থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। বিএনপি তথা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট অথবা ২০ দলীয় প্রার্থী হিসেবে জেলার ছয়টি আসনের মধ্যে পাঁচটিতেই বিএনপি প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। কেবল নোয়াখালী-৬ আসনের প্রার্থী চূড়ান্তকরণে দলটি কিছুটা বেকায়দায় পড়েছে, যার কারণ এ আসনে এক সময় বিএনপির এমপি ছিলেন প্রকৌশলী ফজলুল আজিম। বিগত ২০০৮ সালে তিনি অদৃশ্য কারণে বিএনপি থেকে মনোনয়ন না পাওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হন। বর্তমানে নোয়াখালী-৬ হাতিয়া আসনে প্রার্থী কে হচ্ছেন তা নিয়ে জনমনে কৌতূহল। বিএনপি দলের প্রার্থীরা হলেন নোয়াখালী-১ আসনে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, নোয়াখালী-২ আসনে জয়নাল আবেদীন ফারুক, নোয়াখালী-৩ আসনে বরকত উল্লাহ বুলু, নোয়াখালী-৪ আসনে মোঃ শাহজাহান ও নোয়াখালী-৫ আসনে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। অপর দিকে আওয়ামী লীগ তথা ১৪ দলীয় মহাজোট এখনও তাদের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা নিশ্চিত করতে পারেনি। এক সময়ে জেলার প্রায় সবকটি আসনে বিএনপির অবস্থান ছিল তুলনামূলকভাবে শক্তিশালী। বিগত দুটি সংসদ নির্বাচনের ধারাবাহিকতায় বর্তমান সময়ে আওয়ামী লীগের অবস্থান পূর্বের তুলনায় অনেক এগিয়ে। সবগুলো আসনে হবে হাডাহাড্ডি লড়াই। সর্বশেষ দশম সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ না করায় ছয়টি আসনেই জয়লাভ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ তথা ১৪ দলীয় মহাজোট এবং বিএনপি তথা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে অংশগ্রহণ করলে ফলাফল হবে মিশ্র। জেলার ছয়টি সংসদীয় আসন ধরে রাখতে আওয়ামী লীগ মরিয়া হয়ে উঠছে। বিএনপি যে কোন মূল্যে হারানো আসন পুনরুদ্ধার করতে বদ্ধপরিকর। জেলার ছয়টি আসনে প্রার্থী হতে নেতারা দীর্ঘদিন থেকে নেমে পড়েছেন। নোয়াখালী-১ (চাটখিল ও সোনাইমুড়ি আংশিক) ॥ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বড় দুই দল আওয়ামী লীগ তথা ১৪ দলীয় মহাজোট ও বিএনপি তথা নবগঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সম্ভাব্য প্রার্থীদের পদচারণায় সরব হয়ে উঠছে নোয়াখালী-১ (চাটখিল-সোনাইমুড়ি) আসন। মনোনয়ন প্রত্যাশীগণ ঘনঘন এলাকা সফর করে সভা-সমাবেশের পাশাপাশি দলীয় নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার লোকের সঙ্গে মতবিনিময় করে চলেছেন। পুরো নির্বাচনী এলাকা, তোরণ, ব্যানার ও ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে। এতে করে সর্বত্র নির্বাচনী আমেজ বিরাজ করছে। বিএনপি তথা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী তালিকায় রয়েছেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। আওয়ামী লীগ তথা ১৪ দলীয় মহাজোটের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা ঢাকায় অবস্থান করছেন। এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে বর্তমান সাংসদ এইচএম ইব্রাহিম ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী ও নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আলহাজ জাহাঙ্গীর আলম, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস কেন্দ্রে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন বলে জানা গেছে। জাতীয় পার্টি তথা মহাজোট থেকে মনোনয়নের চেষ্টা করছেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং এস এ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সালাউদ্দিন আহমেদ। অপরদিকে জাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-দফতর সম্পাদক মনির হোসেন, জাতীয় যুব জোটের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রকৌশলী হারুনুর রশীদ সুমন ও চাটখিল উপজেলা জাসদের সভাপতি অধ্যক্ষ হারুনুর রশিদও মনোনয়ন পাওয়ার চেষ্টা করছেন। নোয়াখালী-২ (সেনবাগ ও সোনাইমুড়ী আংশিক) ॥ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে এ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা সকলেই কেন্দ্রে জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে এই আসন থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন বিশিষ্ট শিল্পপতি বেঙ্গল গ্রুপ ও বেসরকারী টেলিভিশন আরটিভি চেয়ারম্যান মোরশেদ আলম। গত দশ বছরে আওয়ামী লীগের ক্ষমতার আমলে এলাকার নানা উন্নয়ন কর্মকা- এখানে দলের জনসমর্থন অনেক বেড়েছে। এই দিক থেকে এখানে আওয়ামী লীগ পূর্বের যে কোন সময়ের তুলনায় ভাল অবস্থানে আছে। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে এই আসনে তিনজন প্রভাবশালী নেতা দলীয় মনোনয়নের চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। তারা হলেন বর্তমান সাংসদ মোরশেদ আলম, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও তমা গ্রুপের চেয়ারম্যান বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী মোঃ আতাউর রহমান ভুইয়া মানিক, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক ড. জামাল উদ্দিন আহম্মেদ এফসিএ। অপরদিকে জাতীয় পার্টি থেকে উপজেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাবেক ছাত্রনেতা হাসান মঞ্জু প্রার্থী হবেন। এ ছাড়া ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাওলানা খলিলুর রহমান নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন। নোয়াখালী-৩ (বেগমগঞ্জ) ॥ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মাঠে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন সকল দলের নেতাকর্মীরা। বিশেষ করে সরকারী দল আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে প্রার্থীরা এখন ঢাকায় জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। নির্বাচন নিয়ে নেতা কর্মীদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে উৎসাহ-উদ্দীপনা। ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হন শিল্পপতি আলহাজ মামুনুর রশিদ কিরণ। বিগত সময়ে বিএনপি ক্ষমতায় থাকলেও দলের দুই এমপির মতভেদের কারণে বেগমগঞ্জে দৃশ্যত কোন উন্নয়ন হয়নি। একাদশ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন বর্তমান সাংসদ মামুনুর রশিদ কিরণ, জাতীয় শ্রমিক লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি জননেতা মরহুম নুরুল হকের দৌহিত্র, চৌমুহনী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চৌমুহনী পৌরসভার মেয়র আকতার হোসেন ফয়সাল। জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এনায়েত উল্লাহ, জেলা আওয়ামী লীগের দুই সহসভাপতি এটিএম এনায়েত উল্লাহ ও মিনহাজ আহমেদ জাবেদ। এই আসনে বরকত উল্লাহ বুলুই বিএনপি তথা নবগঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের একমাত্র প্রার্থী হচ্ছেন এটাই অনেকটা নিশ্চিত। যদি মামলাজনিত কারণে তিনি প্রার্থী হতে না পারেন সেক্ষেত্রে তার সহধর্মিণী শামিমা বরকত লাকী প্রার্থী হতে পারেন। এর পাশাপাশি বর্তমান বেগমগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান বিএনপির জাতীয় কমিটির সদস্য ও নোয়াখালী জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এ্যাডভোকেট আবদুর রহিম মনোনয়ন পেতে পারেন। অপরদিকে, জাতীয় পার্টি থেকে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম ও কেন্দ্রীয় জাতীয় পার্টির সদস্য ও বেগমগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব ফজলে এলাহী সোহাগ মিঞা মনোনয়ন চাচ্ছেন বলে জানা গেছে। নোয়াখালী-৪ (সদর ও সুবর্ণচর) ॥ এই আসনে ২০০৮ ও ২০১৪ সালে পর পর দুই বার সাংসদ নির্বাচিত হন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জননেতা মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরী। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তিনি নোয়াখালী জেলা শহরসহ পুরো তার নির্বাচনী এলাকাকে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজ মুক্ত করে অনন্য নজির গড়েন। ফলশ্রুতিতে এ আসনে এখন আওয়ামী লীগের জোয়ার বইছে। জেলা শহরে এই আসনের প্রভাবে পুরো জেলার রাজনীতি অনেকটা সরকারী দলের আওতায় চলে গেছে। অপরদিকে, এক সময়ে জেলা বিএনপির সভাপতি পরবর্তীতে বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ শাহজাহান একজন ভাল সফল সংগঠক হলেও জেলার রাজনীতিতে সময় দিতে না পারায় পাশাপাশি দলের মধ্যে জেলা কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নোয়াখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র হারুনুর রশিদ আজাদের সঙ্গে মতদ্বৈধতার কারণে এখানে বিএনপি নেতাকর্মীরা বিভক্ত হয়ে পড়ে। অবশ্য ওই বিভক্তি এখন আর দৃশ্যত দেখা যায় না। প্রথমবারের মতো দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হবার একরামুল করিম চৌধুরী প্রতিটি পাড়া, মহল্লা, গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ দুর্গম চরাঞ্চলে গিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মাঝে গিয়ে খোঁজ-খবর নিতে শুরু করেন। একই সঙ্গে দল পুনর্গঠনের কাজ শুরু করেন। এতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও প্রাণ ফিরে পায়। দল গঠনের পাশাপাশি নিজেই তার ব্যক্তিত্ব দিয়ে দলের অবস্থান দৃঢ় করেন। এই আসনে বিএনপির তথা নবগঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের একক প্রার্থী দলের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ শাহজাহান। বিএনপির প্রতিষ্ঠা থেকে দলের সঙ্গে কাজ করছেন দীর্ঘদিন ধরে নোয়াখালী জেলা বিএনপির সভাপতি মোঃ শাহজাহান। কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান হওয়ার আগ পযন্ত অর্থাৎ সর্বশেষ সম্মেলন পর্যন্ত তিনি দলের জেলার দায়িত্বভার পালন করেন। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে নোয়াখালী-৪ আসনে আওয়ামী লীগের পাশাপাশি বিএনপিও আগাম নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছে। বিএনপির তথা নবগঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের একক প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন সাবেক সাংসদ মোঃ শাহজাহান। অপরদিকে, এই আসনে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম তেমন নেই। এদেরে মধ্যে জাসদ ইনু থেকে নির্বাচনে নোয়াখারী-৪ থেকে জেলা জাসদের সাবেক সভাপতি এক সময়ের ছাত্রনেতা নুর আলম চৌধুরী পারভেজ দলীয় মনোনয়ন পেতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে। জাতীয় পার্টি থেকে এখানে মনোনয়ন পেতে পারেন জাপা নেতা মোবারক হোসেন আজাদ। নোয়াখালী-৫ (কোম্পানীগঞ্জ ও কবিরহাট) ॥ এ আসনটি জেলার ভিআইপি আসন হিসেবে পরিচিত। আসনটির জয়-পরাজয়ের দিকে চেয়ে আছে জাতীয় আন্তর্জাতিক মহল। এ আসনে আওয়ামী লীগ তথা ১৪ দলীয় মহাজোট থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, বর্তমান সরকারের সফল সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। অপরদিকে তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক আইনমন্ত্রী বিএনপি তথা নবগঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। আগামী একাদশ জাতীয় নির্বাচনে নোয়াখালী-৫ আসনে এ দুজনই দুদল তথা জোট থেকে লড়বেন এটি নিশ্চিত। ফলে এখানে অন্য কোন প্রার্থী বা দলের তেমন কর্মকা- নেই। দুদলের সেরা দুই নেতার প্রাণবন্ত লড়াই দেখার অপেক্ষা করছে নোয়াখালী-৫ আসনের জনগণসহ সারাদেশের আপামর মানুষ। আগামী একাদশ নির্বাচনকে সামনে রেখে দুদলের নেতাকর্মীরা চাঙ্গা হতে শুরু করেছে, তারা বিভিন্ন স্থানে গণসংযোগ, সভা-সমাবেশ, বৈঠক করে তাদের সমর্থকদের উজ্জীবিত করছেন। ওবায়দুল কাদের বর্তমান সরকারের আমলে কোম্পানীগঞ্জের উপকূলীয় এলাকায় নদীভাঙ্গন রোধে ১৭৩ কোটি টাকা ব্যয়ে মুছাপুর ক্লোজার প্রকল্প বাস্তবায়ন, ৩২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নোয়াখালী জেলার জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং ২৪৫ কোটি টাকা ব্যয়ে সোনাপুর-সোনাগাজী-জোরালগঞ্জ সড়ক ও সেতু প্রকল্প, নোয়াখালী খাল পুনর্খনন বাস্তবায়নসহ বড় বড় কাজের পাশাপাশি স্কুল-কলেজ, মসজিদ, মন্দির, রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্টসহ সর্বক্ষেত্রে উন্নয়নমূলক কাজ করায় ওবায়দুল কাদের এই আসনে নিজেকে ভাল অবস্থানে নিয়ে গেছেন বলে তার সমর্থকরা মনে করেন। এছাড়া পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, ঢাকা-চট্টগ্রাম ফোর লেন সড়কের মতো বড় বড় প্রকল্প ওবায়দুল কাদেরের হাত ধরেই বাস্তবায়িত হওয়ায় সাধারণ মানুষ মনে করে, এলাকার উন্নয়নে তিনিই উপযুক্ত। অপরদিকে বিএনপি তথা নবগঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা মনে করে বিগত সময়ে মওদুদ ক্ষমতায় থাকাকালীন তিনিও এলাকায় রাস্তাঘাট, অবকাঠামো উন্নয়ন, বেকারদের পুনর্বাসন করার পাশাপাশি এই এলাকাটি বিএনপির পাশাপাশি জামায়াতের যথেষ্ট ভোট রয়েছে, তাই তারা তাদের আসন ফিরে পাবেন । নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) ॥ মেঘনা বেষ্টিত জেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ নোয়াখালী-৬ আসন। আগামী একাদশ জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে এ দ্বীপে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীরা এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হাতিয়া আসনে আওয়ামী লীগের চূড়ান্ত মনোনয়ন তালিকায় রয়েছেন বর্তমান সাংসদ আয়েশা ফেরদৌস, সাবেক সাংসদ মোহাম্মদ আলী, ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ও নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক আমিরুল ইসলাম এবং বিশিষ্ট শিল্পপতি হাতিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের নবনিযুক্ত সহসভাপতি মাহমুদ আলী রাতুল। এই ৪ জনের মধ্যে কে দলীয় মনোনয়ন পাবেন তা নিয়ে জেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হাতিয়াবাসীর উৎকণ্ঠার শেষ নেই। বিএনপি থেকে এ আসনে মাঠ পর্যায়ের উল্লেখযোগ্য নেতা তেমন না থাকলেও সম্প্রতি এলাকার সাবেক বিএনপি সাংসদ প্রকৌশলী ফজলুল আজিম দলীয় মনোনয়ন চাইবেন বলে জানা গেছে। অবশ্য দলীয় মনোনয়ন লাভে ব্যর্থ হয়ে ২০০৮ সালে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোট করে বিজয়ী হন। এদিকে হাতিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও জেলা কমিটির সহ-সভাপতি মোঃ আলাউদ্দিন আগামী নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী। হাতিয়ায় বিএনপি দলীয় কর্মকা-ে তার উপস্থিতি লক্ষণীয়। হাতিয়া উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও প্রতিটি ওয়ার্ডে বিএনপি কমিটি গঠিত হয়েছে। একসময় স্থানীয় বিএনপি নেতৃত্ব শূন্য হয়ে পড়লেও বর্তমানে অনেকটা শক্তিশালী বলে তৃণমূল পর্যায়ে জানা গেছে।
×