ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়েছে নির্বাচনকালীন সরকার

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ১৩ নভেম্বর ২০১৮

তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়েছে নির্বাচনকালীন সরকার

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই নির্বাচনকালীন সরকার শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ সফিউল আলম। সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকের পর প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান। সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘সিডিউল ডিক্লেয়ারের (তফসিল ঘোষণা) পর থেকেই নির্বাচনকালীন সরকার শুরু হয়েছে।’ তিনি বলেন, বৈঠকে বাংলাদেশ ‘ট্যারিফ কমিশন (সংশোধন) আইন-২০১৮’ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। আগে বলা হয়েছিল এই সরকার রুটিন কাজ করবে, কোন আইন অনুমোদন বা নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না। কিন্তু এখন তো নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে- এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আইন উঠতে পারে। সেটা সংসদে তো পাস হচ্ছে না, সংসদ তো নাই। আইন করতে বাধা নেই। মন্ত্রিসভা বৈঠক চলমান থাকবে জানিয়ে শফিউল আলম বলেন, এটা (আইন অনুমোদন) ক্যাবিনেটের কার্যক্রমের মধ্যেই পড়ে, এটাকে রুটিনই বলা যায়। কোন উন্নয়ন প্রকল্প এগুলোকে স্পর্শ করে না। আইন করা তো রেগুলার সরকারের কাজ- এ বিষয়ে তিনি বলেন, সরকার তো রেগুলারই আছে, কোন সমস্যা তো দেখছি না। নির্বাচনকালীন সরকার এটা তো আমাদের দেয়া নামই, সাংবিধানিক নাম নয়। মন্ত্রিসভা রদবদলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, না, এই রকম কোন সংবাদ নেই। টেকনোক্র্যাট মন্ত্রীদের পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়েছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা আমাদের কাছে এখনও আসেনি। বৈঠকে টেকনোক্র্যাট মন্ত্রীরা উপস্থিত ছিলেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হ্যাঁ, উপস্থিত ছিলেন। কীসের ভিত্তিতে তারা উপস্থিত ছিলেন?- এর জবাবে তিনি বলেন, আমাদের যে ‘কনস্টিটিউশন প্রভিশন’ (সংবিধানের বিধান) তাতে প্রজ্ঞাপন না হওয়া পর্যন্ত অর্থাৎ একজন মন্ত্রী যদি ওনার দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন, তবে তিনি মন্ত্রী থাকবেন। সাবমিশন (সংবিধান অনুযায়ী পদত্যাগপত্র উপস্থাপন বিষয়টি) হচ্ছে গেজেট নোটিফিকেশন হওয়া পর্যন্ত। ওনার পদত্যাগটা চূড়ান্ত হবে যখন গেজেট নোটিফিকেশন হবে। যেহেতু হয়নি, তাই তারা মন্ত্রী হিসেবে বহাল আছেন বলে গণ্য হবে। কবে নাগাদ পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হবেÑ এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এটা আমার বলার উপায় নেই। নির্বাচনকালীন সরকার গঠনে গত ৬ নবেম্বর মন্ত্রিসভা বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টেকনোক্র্যাট (সংসদ সদস্য না হয়েও বিশেষ বিবেচনায় মন্ত্রী) মন্ত্রীদের পদত্যাগের নির্দেশ দেন। ওই দিনই বিকেল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে চার মন্ত্রী মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পদত্যাগপত্র জমা দেন। পদত্যাগপত্র জমা দেয়ার পর তারা আর দায়িত্বে নেই ধরে নিয়ে পরের দিন বুধবার সকাল নাগাদ চার মন্ত্রীর প্রায় সবাই অফিস না করার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। বর্তমানে মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রী ছাড়া ৩৩ মন্ত্রী, ১৭ প্রতিমন্ত্রী, দুই উপমন্ত্রী রয়েছেন। এর মধ্যে টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী এই চার জনই। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা গত ৮ নবেম্বর সন্ধ্যা ৭টায় জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে আগামী ২৩ ডিসেম্বর ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান। এর মধ্যে রবিবার বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা দেয়। একই সঙ্গে তারা নির্বাচন পেছানোরও দাবি জানান। এই প্রেক্ষাপটে সোমবার সিইসি ভোট গ্রহণের তারিখ এক সপ্তাহ পিছিয়ে ৩০ ডিসেম্বর পুনর্নির্ধারণের ঘোষণা দিয়েছেন।
×