ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নারী জাতীয় ফুটবল দলের জন্য হাইপ্রোফাইল কোচ দরকার!

প্রকাশিত: ০৬:৪২, ১২ নভেম্বর ২০১৮

নারী জাতীয় ফুটবল দলের জন্য হাইপ্রোফাইল  কোচ দরকার!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ নিষ্ঠুর বাস্তবতা বুঝতে পারছেন বাংলাদেশের মেয়েরা। অনুর্ধ পর্যায়ে তাক লাগানো সাফল্য পেলেও জাতীয় দলে অনুজ্জ্বল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। এর অন্যতম কারণ জাতীয় দল গঠনের মতো পর্যাপ্ত সিনিয়র খেলোয়াড় না থাকা। যার খেসারত দিতে হলো টোকিও অলিম্পিকে মেয়েদের ফুটবলের বাছাইপর্বে গ্রুপপর্বেই বিদায় নিয়ে। রবিবার ইয়াঙ্গুনের থুয়ুন্না স্টেডিয়ামে গ্রুপপর্বে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশের মেয়েরা। স্বাগতিক মিয়ানমারের কাছে ০-৫ গোলে হেরে মিশন শুরু করা গোলাম রব্বানী ছোটনের দল এই ম্যাচে আরও বড় হারের লজ্জায় ডুবেছে। ভারতের কাছে হেরেছে ৭-১ গোলের বিশাল ব্যবধানে। বিজয়ী দলের বালা দেবী হ্যাটট্রিকসহ একাই করেন চার গোল। বাংলাদেশের হয়ে সান্ত¡নার একমাত্র গোল করেন কৃষ্ণা রানী সরকার। প্রাথমিক পর্বের বাছাইয়ে চার গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন ও সেরা দুই রানার্সআপ পাবে দ্বিতীয় রাউন্ডের টিকেট। কিন্তু টানা দুই হারে গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে বাংলাদেশের। মঙ্গলবার একই ভেন্যুতে নেপালের বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচ খেলবেন সাবিনা, মৌসুমী, কৃষ্ণারা। ম্যাচের কোন সময়ই ভারতের বিরুদ্ধে মাথা তুলে খেলতে পারেননি বাংলার মেয়েরা। প্রথমার্ধেই তিন গোল হজম করে লড়াই থেকে ছিটকে পড়ে। দ্বিতীয়ার্ধে আরও চার গোল খেলে বড় হারের লজ্জা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় ছোটনের শিষ্যদের। ম্যাচের ১৬ মিনিটে পেনাল্টি থেকে ভারতের হয়ে গোলোৎসবের সূচনা করেন কমলা দেবী। এরপর ২২ ও ২৩ মিনিটে বালা দেবী পরপর দুই গোল করে বাংলাদেশকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেন। প্রথমার্ধের বাকি সময়ে দুর্গ অক্ষত রাখতে পারলেও বিরতির পর আবারও বেহাল দশা শুরু হয় মৌসুমী-সাবিনাদের। ৫৩ মিনিটে নিজের জোড়া ও দলের চার নম্বর গোল করেন কমলা দেবী। ৬২ মিনিটে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন বালা দেবী। ৭৩ মিনিটে ভারতের পক্ষে ষষ্ঠ গোল করেন সাঞ্জু যাদব। দুই মিনিট পর বালা দেবী নিজের চতুর্থ ও ভারতের পক্ষে সপ্তম গোল করেন। ম্যাচের ৮১ মিনিটে বাংলাদেশের পক্ষে একমাত্র গোলটি করেন কৃষ্ণা রানী সরকার। এই ম্যাচে মাঠে নামার আগে হেড টু হেড ও পরিসংখ্যানে যোজন যোজন পিছিয়ে ছিল বাংলাদেশের মেয়েরা। মাঠের লড়াইয়ে আরেকবার সেটা প্রমাণ হয়েছে। এ নিয়ে আটবারের মোকাবেলায় সাতটিতেই জিতেছে ভারত। বাংলাদেশ শুধু একটি ম্যাচ ড্র করতে পেরেছে। ম্যাচগুলোতে বাংলাদেশ গোল করেছে মাত্র ৪টি। সেখানে ভারত করেছে ৩৬ গোল। অথচ বয়সভিত্তিক ফুটবলে ভারতকে প্রায়ই হারিয়ে থাকে বাংলাদেশের মেয়েরা। কিন্তু জাতীয় দলে সেই পারফর্মেন্সের ধারা থাকছে না। সিনিয়র টিম গঠন করার মতো পর্যাপ্ত খেলোয়াড় না থাকাই এর বড় কারণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এই আসরে বাংলাদেশ খেলতে গেছে মাত্র একজন সিনিয়র খেলোয়াড় নিয়ে। শুধু অধিনায়ক সাবিনা খাতুন ছাড়া বাকিরা সবাই অনুর্ধ পর্যায়ের খেলোয়াড়। যে কারণে জাতীয় দলের ভার বহন করতে ব্যর্থ হচ্ছেন মেয়েরা। অনেকের দৃষ্টিতে জাতীয় দলের জন্য হাইপ্রোফাইল কোচ প্রয়োজন। কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন একই ধাঁচের গতানুগতিক স্টাইলে মেয়েদের খেলানোর কারণে সাফল্য মিলছে না। এমন মনে করছেন অনেকে। কারণ, অনুর্ধ-১৪ থেকে ১৮ পর্যন্ত ছোটনের প্রশিক্ষণে, কৌশলে একই ঘরানার ফুটবল খেলছে বাংলাদেশের মেয়েরা। প্রতিপক্ষ বুঝে দক্ষ ফর্মেশন সাজাতে প্রায় ব্যর্থই বলা যায় ছোটনকে। কর্নার কিকের পরিবর্তে ছোট পাস, ফ্রি কিকের ক্ষেত্রেও দেখা যায় একজন ডজ দিচ্ছে অন্যজন কিক নিচ্ছে। প্রতি ম্যাচেই এই দৃশ্য চোখে পড়ে।
×