ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

খুলনায় আওয়ামী লীগ সরব মাঠে, বিএনপি কর্মসূচী পালনে ব্যস্ত

প্রকাশিত: ০৫:১০, ১২ নভেম্বর ২০১৮

 খুলনায় আওয়ামী লীগ সরব মাঠে, বিএনপি কর্মসূচী পালনে ব্যস্ত

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা অফিস ॥ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এখন দোরগোড়ায়। আসন্ন এই জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে খুলনার সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে গভীর আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। মাঠে, ঘাটে, হাটে, বাজারে, চায়ের দোকানে, আড্ডায় সর্বত্র এখন নির্বাচন নিয়ে জল্পনা-কল্পনা, আলোচনা। কে কোন দলের প্রার্থী হতে পারেন, কাকে কোন আসনে মনোনয়ন দেয়া হতে পারে, কে ভাল বা কে মন্দ ইত্যাদি বিষয় আলোচনায় উঠে আসছে। মূলত ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ এবং দশম জাতীয় সংসদ বর্জনকারী ২০ দলের প্রধান দল বিএনপিকে নিয়েই আলোচনা আবর্তিত হচ্ছে। আওয়ামী লীগ বেশ আগে ভাগেই নির্বাচনী প্রচার শুরু করলেও বিএনপির নির্বাচনমুখী তৎপরতা ভেতরমুখী। এই দলের নেতাকর্মীরা দলীয় চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার কারামুক্তিসহ বিভিন্ন দাবিতে কর্মসূচী পালনের মধ্যে সীমাবদ্ধ। অপরদিকে বর্তমান জাতীয় সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির (এরশাদ) অবস্থা খুলনায় নড়বড়ে। বিএনপির শরিকদল জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করে নির্বাচন কমিশন প্রজ্ঞাপন জারি করায় দলটি নতুন করে সঙ্কটে পড়েছে। তবে নির্বাচনী প্রচারে সম্ভাব্য প্রার্থীর চেয়ে বিশেষ সুবিধায় রয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্যরা। তারা সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে তদারকিতে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আবারও আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছেন। খুলনায় এবার সম্ভাব্য প্রার্থীরা ব্যক্তিগত পরিচিতির পাশাপাশি সবাই ভোট চাইছেন দলীয় প্রতীকে। পাশাপাশি নিজের অবস্থান জানান দিয়ে নিজেকে সেরা প্রমাণের চেষ্টা করছেন নানাভাবে। খুলনার ছয়টি আসনের মধ্যে মহানগরীতে দুটি ও জেলায় রয়েছে চারটি আসন। এর মধ্যে একাধিক আসনে এবার প্রার্থী পদে নতুন মুখ দেখা যাবে বলে অনেকটা নিশ্চিত করেছেন দলীয় নেতারা। ছয়টি আসনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা দীর্ঘ। তারা সাংগঠনিক কার্যক্রমের মাধ্যমে জনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। কেন্দ্রে তদবির লবিংয়ের পাশাপাশি অনেকে প্রার্থী হওয়ার আশায় দলের কাছ থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। আবার ফরম পূরণ করে জমাও দিয়েছেন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। খুলনায় নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সরব এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে উৎসাহ সৃষ্টি হলেও বিএনপি কেন্দ্র ঘোষিতসহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালনের মধ্যে এখনও সীমাবদ্ধ। ৭ দফা এবং নির্বাচনী তফসিল একমাস পেছানো সাপেক্ষে নির্বাচনে যাওয়ার জন্য বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় বিএনপি নেতারা কেন্দ্রের দিকে তাকিয়ে আছেন বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে। সূত্র মতে খুলনায় ঐক্যফ্রন্টের অন্য দলের সাংগঠনিক ভিত্তি নেই। তার পরও ফ্রন্টগত নির্র্র্বাচন হলে প্রার্থী নিয়ে হয়ত নতুন করে ভাবতে হবে। নিবন্ধন বাতিল হওয়া জামায়াতে ইসলামী খুলনার দুটি আসনে দুই নেতাকে প্রার্থী করার জন্য কৌশলে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। জামায়াত রাজপথে না থাকলেও ভেতরমুখী তৎপরতা রয়েছে বেশ। সব মিলিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো প্রায় সবাই এখন নির্বাচনমুখী। শহর থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত তাদের পক্ষে পোস্টার-ব্যানারে ছেয়ে গেছে। বিভিন্ন উৎসবে তারা সাধারণ মানুষের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। কুশলবিনিময় করছেন। খুলনা-১ (বটিয়াঘাটা-দাকোপ) ॥ এটি আওয়ামী লীগের নিশ্চিত আসন হিসেবে পরিচিত। যতগুলো সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নিয়েছে তার সবকটিতেই আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা জয়লাভ করেছেন। এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি পঞ্চানন বিশ্বাস। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও প্রার্থী হওয়ার জন্য তিনি তৎপর রয়েছেন। এছাড়া এ আসনে সাবেক সংসদ সদস্য ননী গোপাল মন্ডল, খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশিদ, দাকোপ উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ আবুল হোসেন, বটিয়াঘাটা উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম খান, শ্রীমন্ত অধিকারী (রাহুল) আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে তৎপর রয়েছেন। মনোনয়ন প্রত্যাশীরা কেন্দ্রের সঙ্গে লবিং করে চলেছে। গ্রুপিং কোন্দলের কারণে এ আসনে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই প্রার্থী হতে পারেন এমন গুঞ্জনও শোনা যাচ্ছে। এই আসনে জাতীয় পার্টির (এরশাদ) সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে তৎপর রয়েছেন প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায়। এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীর সংখ্যা অধিক হলেও বিএনপির প্রার্থী এখন পর্যন্ত মাত্র একজন। তিনি হলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমীর এজাজ খান। নবম সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কাছে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে পরাজিত হন। এ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী হলেন দলটির খুলনা জেলার সহসভাপতি মাওলানা আবু সাঈদ। এছাড়া সিপিবির সম্ভাব্য প্রার্থী খুলনা জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট রুহুল আমিন। খুলনা-২ (সদর ও সোনাডাঙ্গা) ॥ জেলার ছয়টি আসনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ আসন এটি। এ আসনটি বিভগীয় ও জেলা সদরের প্রাণ কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত এবং সিটি কর্পোরেশন এলাকায় অবস্থিত। ১৯৭৩ সালের পর এ আসনে আওয়ামী লীগের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়া ছাড়া সফলতা মাত্র একবার। তাও দশম সংসদ নির্বাচনে। বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট ওই নির্বাচনে অংশ না নেয়ায় মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এবারও তিনি মনোনয়ন প্রত্যাশা করলেও গুরুত্বপূর্ণ এ আসনটি আওয়ামী লীগ নিজেদের দখলে রাখার জন্য কিছুটা আগেভাগেই নতুন মুখ হিসেবে শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েলকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। তিনি (জুয়েল) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দ্বিতীয় ভ্রাতুষ্পুত্র। শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল ইতোমধ্যে নির্বাচনী গণসংযোগ, দলীয় সভা-সমাবেশ, ঘরোয়া বৈঠকের পাশাপাশি সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন। এ অসনে প্রার্থী হওয়ার জন্য দলীয় মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন তিনি। খুলনা-২ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে দলের মহানগর সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জুর মনোনয়ন এখন পর্যন্ত অনেকটাই নিশ্চিত। বিগত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তিনি পরাজিত হন। এদিকে চরমোনাই পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী হিসেবে সংগঠনের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর হাফেজ মাওলানা আব্দুল আউয়াল তৎপর রয়েছেন। জাসদের (ইনু) প্রার্থী হিসেবে ১৪ দলের অন্যতম নেতা খালিদ হোসেনের নাম শোনা যাচ্ছে। এ আসনে সিপিবির সম্ভাব্য প্রার্থী সংগঠনের মহানগর সভাপতি এইচ এম শাহাদৎ হোসেন। খুলনা-৩ (খালিশপুর থানা, দৌলতপুর থানা ,খানজাহান আলী ও আড়ংঘাটা থানার আংশিক) ॥ এ আসনটি শ্রমিক অধ্যুষিত এলাকা হিসেবে পরিচিত। আগামী সংসদ নির্বাচনে খুলনা-৩ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য সাবেক শ্রুম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে শতভাগ আশাবাদী। তবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এস এম কামাল হোসেনও মনোনয়ন পেতে চান। তিনি কেন্দ্রীয় নেতা হলেও খুলনার রাজনীতিতে বেশ সময় দেন। ছাত্র আন্দোলনে খুলনার রাজপথ কাঁপানোর পর ছাত্রলীগের কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করেন। গত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর পক্ষে ব্যাপক জনসংযোগ, কর্মী সভায় অংশগ্রহণ করেন তিনি। আগামী নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে এমনটি ধরে নিয়ে প্রার্থী হওয়ার জন্য চার নেতা তৎপরতা রয়েছেন। এরা হলেন বিএনপি খুলনা মহানগর শাখার সহ-সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সেকেন্দার আলী ডালিম, যুগ্ম সম্পাদক অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ আরিফুর রহমান মিঠু এবং ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা রকিবুল ইসলাম বকুল। এদের মধ্যে মিঠু ও বকুলের উপস্থিতি নানাভাবে জানান দিচ্ছে তাদের অনুসারীরা। এ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে দলটির খুলনা মহানগর শাখার সভাপতি মাওলানা মুজ্জাম্মিল হক। জাতীয় পার্টির (জেপি) সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে তৎপর আছেন জেপির কেন্দ্রীয় ভাইস-চেয়ারম্যান শরীফ শফিকুল হামিদ চন্দন। খুলনা-৪ (রূপসা, তেরখাদা ও দিঘলিয়া) ॥ আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ, বিএনপি, খেলাফত মজলিসের নবীন-প্রবীণ মিলে প্রায় দশ নেতা তৎপর রয়েছেন। সবার টার্গেট দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা। আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে বিবেচিত এ আসনের প্রয়াত সংসদ সদস খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মোস্তফা রশিদী সুজার শূন্য হওয়া আসনে উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সাবেক কৃতী ফুটবলার বিশিষ্ট শিল্পপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। একাদশ সংসদ নির্বাচনেও সালাম মুর্শেদী এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হবেন বলে ধরে নেয়া যায়। তিনি নিয়মিত নির্বাচনী এলাকায় জনসংযোগ, সভা সমাবেশ অব্যাহত রেখেছেন। এলাকায় দলীয় কোন্দল মেটাতেও কাজ করে চলেছেন। তিনি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এছাড়া এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রাত্যাশীরা হলেন সাবেক সংসদ সদস্য মোল্লা জালাল উদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামরুজ্জামান জামাল, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট সুজিত অধিকারী, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তেরখাদা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সরফুদ্দিন বিশ্বাস বাচ্চু, প্রয়াত মোস্তফা রশিদী সুজার ছেলে খালেদীন রশিদী সুকর্ণ। বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা হলেন কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক শরীফ শাহ কামাল তাজ এবং কেন্দ্রীয় তথ্য সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল। তবে তারা এলাকায় আসেন কম। তাদের অনুসারীরা সাংগঠনিক কাজের মধ্য দিয়ে কৌশলে নির্বাচনমুখী তৎপরতা চালাচ্ছেন বড় দুই দলের বাইরে রূপসা উপজেলার বাসিন্দা ও খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন এ আসনে প্রার্থী হওয়ার জন্য তৎপর রয়েছেন। এ আসনে ইসলামী অন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ আলহাজ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমেদ সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে গণসংযোগ, কর্মী সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করছেন। খুলনা-৫ (ডুমুরিয়া-ফুলতলা) ॥ আসনটি মর্যাদার ও ভিআইপি আসন হিসেবে বিবেচিত। এই আসনটির বর্তমান সংসদ সদস্য সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শিক্ষাবিদ নারায়ন চন্দ্র চন্দ। একাদশ সংসদ নির্বাচনেও তিনি মনোনয়ন প্রাত্যাশী। স্থানীয়রা জানায়, মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর নারায়ন চন্দ্র চন্দ এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। হামলা, মামলা ও নির্যাতনের হাত থেকে রেহাই পেয়েছে এখানকার মানুষ। গ্রামের একজন সাধারণ মানুষও তার সঙ্গে দেখা করতে পারেন। এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তালিকায় আরও রয়েছেন বিএমএর সাবেক মহাসচিব ডাঃ কাজী শহিদুল আলম, বঙ্গবন্ধু পরিষদের খুলনা জেলা সহ-সভাপতি প্রফেসর ড. মাহাবুব উল ইসলাম, ফুলতলা উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ আকরাম হোসেন, ডুমুরিয়ার গুটুদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও খুলনা থেকে প্রকাশিত দৈনিক প্রবর্তন সম্পাদক মোস্তফা সরোয়ার। এ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে তৎপর রয়েছেন বিএমএ’র সাবেক কেন্দ্রীয় মহাসচিব অধ্যাপক ডাঃ গাজী আব্দুল হক। আলোচনায় রয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ড. মামুন রহমান। এ ছাড়া ডুমুরিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খান আলী মুনসুর সাংগঠনিক কাজ ও সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের মাধ্যমে জনসম্পৃক্ততা অব্যাহত রেখেছেন। এ আসন থেকে নবম সংসদ নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের প্রার্থী হিসেবে জামায়াত নেতা মিয়া গোলাম পরওয়ার এমপি নির্বাচিত হন। নিবন্ধন বাতিল হলেও জামায়াত হাল ছাড়েনি। এলাকায় প্রকাশ্য তৎপরতা না থাকলেও এই সংগঠনের নেতাকর্মীরা গোপন বৈঠকসহ নানা কৌশলে নির্বাচনমুখী কার্র্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। এ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী হিসেবে তৎপর রয়েছেন মাওলানা মুজিবর রহমান। খুলনা-৬ (কয়রা-পাইকগাছা) ॥ এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তালিকা বেশ দীর্ঘ। যে কারণে দলীয় কোন্দলও এখানে বেশি বলে স্থানীয় তৃণমূলের নেতাকর্মীরা জানান। তারা জানান, এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা এ্যাডভোকেট শেখ মোঃ নুরুল হক সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে তৎপর রয়েছেন। এছাড়া মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হলেন সাবেক এমপি প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা এ্যাডভোকেট সোহরাব আলী সানা, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষযক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আক্তারুজ্জামান বাবু, সাবেক ছাত্র নেতা কেন্দ্রীয় বিএমএর দফতর সম্পাদক অধ্যাপক ডাঃ মোহাঃ শেখ শহীদ উল্লাহ, পাইকগাছা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও পাইকগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব মোঃ রশিদুজ্জামান এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক প্রেম কুমার ম-ল। তবে বর্তমানে বিভাজন কোন্দল কিছুটা কমেছে এবং সম্ভাব্য প্রার্থীদের কয়েকজন ড. মসিউর রহমানের সমর্থনে কাজ করছেন বলে স্থানীয় একাধিক নেতাকর্মী জানান। এদিকে এ আসনে বিএনপির সমর্থনে ২ বার জামায়াতের প্রার্থী জয়লাভ করেছে। আগামী নির্বাচনে বিএনপি এখানে জামায়াতকে ছাড় দিতে রাজি নয়। এ আসনে কয়রা উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোমরেজুল ইসলাম এবং জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মনিরুজ্জামান মন্টু সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে অনেক আগে থেকেই তৎপর থাকলেও বর্তমানে তারা নির্বাচনী মাঠে সরব নয়। এ আসনে জেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনার নামও শোনা যাচ্ছে। তবে বিএনপির প্রার্থী হওয়া বা না হওয়া তা ঐক্যফ্রন্টগতভাবে সিদ্ধান্ত বা বিএনপি জামায়াতকে ছাড় দেবে কিনা তার ওপর নির্ভর করছে বলে দলীয় একাধিক সূত্র জানায়। এ আসনে জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে খুলনা মহানগর আমির আবুল কামাল আজাদের পক্ষে দলটির নেতাকর্মীরা নানা কৌশলে তৎপর রয়েছে। জাতীয় পার্টির (এরশাদ) সম্ভাব্য প্রার্থী হলেন পার্টির জেলা সভাপতি শফিকুল ইসলাম মধু ও পাইকগাছা উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি মোস্তফা কামাল জাহাঙ্গীর। এ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী হলেন ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন খুলনা জেলা সভাপতি মাওলানা গাজী নুর আহমেদ এবং সিপিবির সম্ভাব্য প্রার্থী সুভাস সানা মহিম।
×