ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়ায় সব দলকে স্বাগত

প্রকাশিত: ০৫:০৬, ১২ নভেম্বর ২০১৮

 নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়ায় সব দলকে স্বাগত

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ একাদশ জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়া জাতীয় ঐক্যফ্রন্টসহ সব দলকে স্বাগত জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা চাই নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হোক। নির্বাচনে জনগণ যাদের ভোট দেবে তারাই জয় লাভ করবে। আমরা সকলে মিলে নির্বাচন করব। জনগণ যাকে চাইবে তাকে ভোট দেবে, সেটাই আমরা করব। সবাই যেহেতু নির্বাচন করবে সেজন্য সবাইকে ধন্যবাদ ও স্বাগত জানাচ্ছি। রবিবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভায় সূচনা বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শুরুতেই ঐক্যফ্রন্টসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়ায় ধন্যবাদ ও স্বাগত জানান। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফর্ম সংগ্রহ ও জমার শেষ সময় আজ ১২ নবেম্বর সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। আগামী ১৪ নবেম্বর বুধবার সকাল ১১টায় মনোনয়ন প্রার্থীদের সাক্ষাতকার অনুষ্ঠিত হবে ধানম-ি ৩/এ অফিসে। সাক্ষাতকার একদিনেই শেষ হবে। আরও সিদ্ধান্ত হয়, মহাজোটগতভাবেই নির্বাচনে অংশ নেবে আওয়ামী লীগ। নৌকা প্রতীকে ১৪ দল এবং জাতীয় পার্টি লাঙ্গল মার্কা নিয়ে নির্বাচন করবে। নৌকা প্রতীক ১৪ দলেই সীমিত থাকবে। সূচনা বক্তব্যে পহেলা নবেম্বর থেকে সাত নবেম্বর বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে সংলাপের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনটা কিভাবে করব এবং নির্বাচন যাতে সুষ্ঠুভাবে হয় সে আলোচনা হয়েছে। অনেকে অনেক দাবি-দাওয়া করেছিল। বেশকিছু আমরা মেনে নেই। তাছাড়া নির্বাচনটা যেন সকলের জন্য অংশগ্রহণমূলক হতে পারে, সবাই যেন নির্বাচন করার সুযোগ পায় সেদিকে আমরা দৃষ্টি রাখব, সে কথা আমরা দিয়েছি। প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপে ২৩৪ জন নেতা ও ৭০টি রাজনৈতিক দল অংশ নেন। সাতদিনে ২৪ ঘণ্টা ৫ মিনিট সংলাপ হয়। সংসদীয় বোর্ডের সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবাইকে স্বাগত জানাই, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন বলে মতামত দিয়েছেন। যা গণতান্ত্রিক ধারাকে আরও শক্তিশালী করবে। অর্থনৈতিক গতিও ত্বরান্বিত করবে এটা আমি আশা করি। সরকার প্রধান বলেন, আমরা সবসময় এটাই চাই যে, আমরা যে উন্নয়নটা করেছি তার ধারা যেন অব্যাহত থাকে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এই গতিটা যেন কোনমতেই থেমে না যায়। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে আমরা যেভাবে গড়ে তুলতে চাই উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে, সেভাবে যেন গড়ে তুলতে পারি সেদিকে দৃষ্টি রেখেই আমরা আলাপ-আলোচনা করি। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরেরদিন শুক্রবার থেকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি ও জমা গ্রহণের প্রসঙ্গে তুলে ধরে দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, নমিনেশন পেপার দিয়েছি। চেষ্টা করব উপযুক্ত প্রার্থীকে নমিনেশন দিতে। সব সময় নিজেদের ৩০০ আসনে প্রার্থী ঠিক করলেও জোটের প্রার্থীদের জন্য পরে আসন ছেড়ে দেয়া হয় বলে জানান তিনি। তিনি জানান, দলীয় প্রার্থী ঠিক করতে পরে আরও সভা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সংসদীয় বোর্ডের সভায় বোর্ডের সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, রাশিদুল আলম ও সংসদীয় বোর্ডের সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। অসুস্থতার জন্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী ও অধ্যাপক ড. আলাউদ্দিন আহমেদ বৈঠকে উপস্থিত হতে পারেননি। সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ব্যাংককে চিকিৎসাধীন ও অপর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ বিদেশে রয়েছেন। ইসি তফসিল পেছালে আপত্তি নেই আ’লীগের- কাদের ॥ সংসদীয় বোর্ডের বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংকালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচন কমিশন ভোটের তারিখ পিছিয়ে দিলে আওয়ামী লীগের কোন অপত্তি থাকবে না। কারণ নির্বাচন পেছানোর বিষয়ে কোন দলের দাবি থাকলে তা ইসির এখতিয়ার। নির্বাচন কমিশন যদি সময় বাড়াতে চায় সেখানে আপত্তি থাকবে না। বৈঠকের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে তিনি জানান, আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফর্ম সংগ্রহ ও জমার শেষ সময় ১২ নবেম্বর (আজ সোমবার) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। ১৪ নবেম্বর মনোনয়ন প্রার্থীদের সাক্ষাতকার অনুষ্ঠিত হবে ধানমন্ডি ৩/এ অফিসে। সাক্ষাতকার একদিনেই শেষ হবে। নির্বাচনী জোটের বিষয়ে তিনি বলেন, নির্বাচন আমরা মহাজোটগতভাবেও করতে পারি। এখনও মেরুকরণের পালা শেষ হয়নি। এটা শেষ হলে জোটের সমীকরণে যেতে পারি। মহাজোটগতভাবে হলে জাতীয় পার্টি লাঙ্গল নিয়ে আর ১৪ দল নৌকা নিয়ে নির্বাচন করবে। নৌকা প্রতীক ১৪ দলের সীমিত থাকবে। জোটগতভাবে হলে আসন ভাগাভাগি হবে। আমরা তো সব কিছু নিয়ে আলোচনায় আছি। রাত ১১-১২টা পর্যন্ত আলোচনায় আছি। সবটাই তো আর আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো যায় না। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের সঙ্গে অধ্যাপক ডাঃ একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্টও নির্বাচন করতে পারে। যুক্তফ্রন্টের সঙ্গে আমাদের এ্যালায়েন্সও হতে পারে। আলোচনা চলছে। তবে তারা নৌকায় ভোট করবেন নাকি নিজেদের প্রতীকে ভোট করবেন সে সিদ্ধান্ত হয়নি। ধরে নিচ্ছি তারা নিজেদের প্রতীকে নির্বাচন করবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের জেতার মতো প্রার্থীকেই মনোনয়ন দেব। আমাদের জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে জিততে হবে। তাদের দুর্বল ভাবার কোন কারণ নেই। আমরা জেতার জন্য নির্বাচন করব। নেত্রী (শেখ হাসিনা) অনেকগুলো সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জরিপ চালিয়েছেন। এগুলো দেখেই যোগ্য প্রার্থী যারা জিততে পারবে তাদের মনোনয়ন দেয়া হবে। তিনি বলেন, আমরা আগে নিজেদের মনোনয়ন দেব। আসন ভাগাভাগি হলে আমাদের প্রার্থী প্রত্যাহার করে ফেলবে। জাতীয় পার্টির সঙ্গেও আসন ভাগাভাগি হতে পারে। আমরা তো বসে নাই। ভেতরে ভেতরে বৈঠক হচ্ছে। সময় বাড়ানোর কোন দাবি আমরা করিনি। আমাদের চিঠি চলে গেছে। এছাড়া বৈঠকে মনোনয়ন নিয়ে কিছু কথা হয়েছে।
×