ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

আইনশৃঙ্খলার অবনতির সুযোগ দেয়া হবে না ॥ আইজিপি

আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারে সারাদেশে শীঘ্রই অভিযান

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ১১ নভেম্বর ২০১৮

আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারে সারাদেশে শীঘ্রই অভিযান

শংকর কুমার দে ॥ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে শীঘ্রই সারাদেশে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র গোলাবারুদ উদ্ধারে বিশেষ অভিযান শুরু করবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নির্বাচনে যাতে সন্ত্রাসী, মস্তান, রংবাজরা পেশিশক্তি প্রদর্শন করতে না পারে সেজন্য নির্বাচনের আগে অস্ত্র উদ্ধারাভিযান পরিচালনা করা হবে। বিশেষ অভিযানে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার ও বৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পুলিশ সদর দফতরে ইতোমধ্যেই নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পুলিশ সদর দফতর সূত্রে এ খবর জানা গেছে। পুলিশের আইজি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেছেন, একাদশ নির্বাচনকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি বা অরাজকতা সৃষ্টির কোন সুযোগ কাউকে দেয়া হবে না। নির্বাচন সামনে রেখে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার রোধে ব্যবস্থা নিতে হবে। পুলিশ সদর দফতরের সম্মেলন কক্ষে অর্ধবার্ষিকী অপরাধ পর্যালোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। সভায় আইজিপি ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া তথ্য প্রচার করে অথবা গুজব ছড়িয়ে কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী যাতে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটাতে না পারে সে ব্যাপারে তৎপর ও সজাগ থাকার জন্য পুলিশ সুপারদের নির্দেশ দেন। অর্ধবার্ষিকী অপরাধ পর্যালোচনায় সভায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন আইজিপি। পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকা- বেড়ে যায়। জেলা, উপজেলা, শহর, গ্রামগঞ্জ পর্যায়ে অবৈধ অস্ত্রমুক্ত রাখা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত করার জন্য অপরিহার্য। নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রাখতে নিরলসভাবে কাজ করছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সীমান্তবর্তী জেলাগুলো অস্ত্র চোরাচালান রুট হিসেবে ব্যবহার করে আসছে অস্ত্র চোরাচালানিরা। অস্ত্র চোরাচালানিদের চোরাইপথে আনা অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে সন্ত্রাসীরা। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সন্ত্রাসীরা যাতে তৎপরতা বৃদ্ধি করতে না পারে, অস্ত্রের ব্যবহার না বাড়াতে পারে এজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও তৎপর থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পুলিশ সদর দফতরের এক কর্মকর্তা বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার যে কেউ করুক না কেন সাধারণ মানুষের জন্য এটা আতঙ্ক ও উদ্বেগের বিষয়। অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য অবৈধ অস্ত্র বড় অন্তরায়। এসব অস্ত্র নির্বাচনের আগে উদ্ধার করতে হবে। নির্বাচন সামনে রেখে কেউ যেন অবৈধ অস্ত্র রাখতে না পারে সে লক্ষ্যেই কাজ করছে পুলিশ প্রশাসন। নির্বাচন সামনে রেখে কোন অবৈধ কাজের সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। নির্বাচনের আগে এসব জেলাকে অবৈধ অস্ত্র মুক্ত করতে এবং নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ গড়ে তোলার জন্য দিনরাত নিরলসভাবে কাজ করছে পুলিশ প্রশাসন। পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, পুলিশ সদর দফতরের সম্মেলন কক্ষে অর্ধবার্ষিকী অপরাধ পর্যালোচনা সভায় সার্বিক অপরাধ পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করা হয়। পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত ৬ মাসে সারাদেশে ১ লাখ ১৪ হাজার ১শ’ ২৪টি মামলা দায়ের হয়েছে। এসব মামলার মধ্যে রয়েছে ডাকাতি, দস্যুতা, দ্রুত বিচার, দাঙ্গা, নারী ও শিশু নির্যাতন, অপহরণ, সিঁধেল চুরি, চুরি, সড়ক দুর্ঘটনাসহ নানা ধরনের অপরাধের। পর্যালোচনায় দেখা যায়, সারাদেশে মাদকদ্রব্য এবং চোরাচালানদ্রব্য উদ্ধারের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় এই ঘটনায় মামলা দায়েরের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবির এক কর্মকর্তা বলেছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে মাদকদ্রব্য ও অবৈধ অস্ত্র; দুটোর বিরুদ্ধেই সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে বিজিবি। পাশাপাশি অবৈধ অস্ত্রের অনুপ্রবেশ যাতে না ঘটে সেজন্য কাজ করছে বিজিবি। সীমান্তবর্তী জেলা এলাকায় বিজিবির টহল আরও জোরদার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে সীমান্তের কাছ দিয়ে কোন প্রকারের লোকজনের যাওয়া-আসার ওপর কঠোর নজরদারি করা হচ্ছে।
×