ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

অবশেষে জয় দেখল অস্ট্রেলিয়া

প্রকাশিত: ০৭:১৫, ১০ নভেম্বর ২০১৮

 অবশেষে জয় দেখল অস্ট্রেলিয়া

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ঘরের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে সিরিজের প্রথম ম্যাচটা ছিল ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়ার টানা সপ্তম হার। নিজেদের লজ্জার রেকর্ডটা কী আরও লম্বা হবে? হতেই পারত। দ্বিতীয় ম্যাচে অনেকটা নাটকীয়ভাবে মাত্র ৭ রানে জিতে গেছে এ্যারন ফিঞ্চের দল। এ্যাডিলেডে ৪৮.৩ ওভারে ২৩১ রানে অলআউট হয় স্বাগতিকরা। জবাবে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২২৪ রানে থামে সফরকারী প্রোটিয়াদের সংগ্রহ। দারুণ বোলিংয়ে অসিদের ঘুরে দাঁড়ানো জয়ের অন্যতম রূপকার তিন পেসার মার্ক স্টয়নিস (৩/৩৫), মিচেল স্টার্ক (২/৫১) ও জস হ্যাজলউড (২/৪২)। তবে লো-স্কোরিং ম্যাচে ৪১ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংসটির জন্য ম্যাচসেরা হয়েছেন এই সিরিজেই ওয়ানডে অধিনায়কের দায়িত্ব পাওয়া ফিঞ্চ। হোবার্টে সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ রবিবার। ১৯৯৬ সালের শেষদিকে টানা ছয় ওয়ানডে হারের খেসারত গুণে স্টিভ ওয়াহর কাছে নেতৃত্বভার হারিয়েছিলেন মার্ক টেলর। ফিঞ্চের সামনে এ ধরনের কোন খড়গ ছিল না। তবে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটে চলতি সময়টা যে মোটেও ভাল যাচ্ছে না। বছরের শুরুতে কেপটাউনে বহুল আলোচিত সেই বল টেম্পারিংয়ের রেশ কাটেনি। কিছুদিন আগে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া সভাপতির (সিএ) পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন ডেভিড পিভার। মাঠে দলও হারের বৃত্ত কেটে বেরিয়ে আসতে পারছিল না। আমিরাতে পাকিস্তানের কাছে বিধ্বস্ত হয় ওয়ানডে’র বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। ঘোরতর বিপদের মধ্যে এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে অস্ট্রেলিয়া শুধু ১-১ ব্যবধানে সমতায় ফিরল না, সঙ্গে আত্মবিশ্বাসও বাড়ল। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে আরও একবার ব্যর্থতার পরিচয় দেন অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানরা। কাগিসো রাবাদা, প্রিটোরিয়াস, ডেল স্টেইনদের তোপের মুখে মাত্র ২৩১ রানেই গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস। অস্ট্রেলিয়ার টানা অষ্টম পরাজয়কেই তখন মনে হচ্ছিল নিয়তি। কিন্তু বল হাতে দৃশ্যমান সেই নিয়তি বদলে দিয়েছেন স্টয়নিস, মিশেল স্টার্ক, হ্যাজলউডরা। অগ্নিঝরা বোলিং করে তারা দলকে এনে দিয়েছেন মধুর এক জয়। এ্যাডিলেডের বাউন্সি উইকেটে পেসাররা আগুন ঝরাবেন, সেটা সকালে পিচ পরিদর্শনে গিয়েই বুঝতে পেরেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক ফ্যাফ ডুপ্লেসিস। তিনি তাই টস জিতে প্রথমে বল তুলে দেন বোলারদের হাতে। রাবাদা, প্রিটোরিয়াস, ডেল স্টেইনরা অধিনায়কের প্রত্যাশা পূরণও করেন। অস্ট্রেলিয়ার কোন ব্যাটসম্যানকেই তারা চোখ রাঙাতে দেননি। তিন তিনজন হাফসেঞ্চুরির পথে হাঁটলেও কাউকেই তা ছুঁতে দেননি। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে তাই সর্বোচ্চ ৪৭ রান এ্যালেক্স ক্যারে। এছাড়া ক্রিস লিন ৪৪, এ্যারন ফিঞ্চ ৪১ রান করেন। প্রোটিয়াদের মধ্যে বল হাতে সবচেয়ে সফল রাবাদা। তিনি নেন ৪ উইকেট। প্রিটোরিয়া নেন ৩টি, স্টেইন ২টি, এনগিগি ১টি। অসি বোলাররাও কোন প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানকে বিপজ্জনক হয়ে উঠতে দেননি। অধিনায়ক ডুপ্লেসিস ও ডেভিড মিলার যা একটু চোখ রাঙিয়েছেন। ডুপ্লেসিস করেছেন ৪৭ রান। মিলার ফিরেছেন ৫১ রান করে। এছাড়া আর কেউই ২০-এর কোটা পেরোতে পারেননি। অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল স্টয়নিস। তিনি ৩৫ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। স্টার্ক ও হ্যাজলউড নিয়েছেন ২টি করে, প্যাট কামিন্স নিয়েছেন ১টি। তবে মজার ব্যাপার হলো বোলার তা বের এই ম্যাচে ম্যাচসেরা হয়েছেন একজন ব্যাটসম্যান। তিনি অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক ওপেনার এ্যারন ফিঞ্চ। যিনি ৬৩ বলে খেলেছেন ৪১ রানের ইনিংসে। ব্যাট হাতে এ ইনিংস খেলার পাশাপাশি তিনি বোলারদের দারুণভাবে ব্যবহার করেছেন। যা ম্যাচসেরার পুরস্কারটি পেতে তাকে সাহায্য করেছে।
×