ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আত্মবিশ্বাসী আরিফুলের লক্ষ্য অনেক বড়

প্রকাশিত: ০৭:১৩, ১০ নভেম্বর ২০১৮

 আত্মবিশ্বাসী আরিফুলের লক্ষ্য অনেক বড়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দীর্ঘদিন ধরেই ওয়ানডে ও টি২০ ফরমেটে জাতীয় দলের সঙ্গে ছিলেন। তবে ক্যারিয়ার শুরু হতে বেশ দেরি হয়েছে আরিফুল হকের। ৬ টি২০ খেলার পর এবার জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে অভিষেক হয়েছে। আর জাতীয় ক্রিকেট লীগে এবার ২৩১ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে প্রথমবার টেস্ট দলে ডাক পেয়েই অভিষেক হয়েছে। দলের হার হলেও সিলেট টেস্টের প্রথম ইনিংসে সর্বোচ্চ অপরাজিত ৪১ এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৮ রান করেছেন ৭ নম্বরে নেমে। আর সে জন্য আত্মবিশ্বাস বেড়েছে বলে দাবি করলেন আগামী ১৮ নবেম্বর ২৬ বছর ছুঁতে চলা রংপুরের এ ডানহাতি অলরাউন্ডার। শুক্রবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে দুপুরে দলের সঙ্গে অনুশীলনের পর আরিফুল জানিয়েছেন তার লক্ষ্য আরও অনেক বড়। ৭৭টি প্রথমশ্রেণীর ম্যাচ খেলে তবেই টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়েছেন আরিফুল। মূলত এক পেসার নিয়ে একাদশ সাজানোয় তাকে বিকল্প পেসার হিসেবেও একাদশে নেয়া হয়। তবে প্রথম ইনিংসে মাত্র ৪ ওভার বোলিং করার সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু ব্যাট হাতে ঠিকই নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন। দুই ইনিংসেই তার ব্যাটিং ছিল চোখে লাগার মতো। দলের চরম বিপর্যয়ের মুখেও তিনি অন্যদের ব্যর্থতার ভিড়ে সাবলীল ভঙ্গিমায় ব্যাট চালিয়েছেন। ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট নিয়ে আরিফুল বলেন, ‘প্রথম টেস্ট যেহেতু ভালই গিয়েছে। আমার আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বোলাররা সহজে বাজে বল দেবে না। আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে। আসলে শেষ টেস্টটা খেলে আমার চিন্তা-ভাবনায় পরিবর্তন এসেছে। এনসিএলে দুই শ’ রানের ইনিংস খেলার পর আমার আত্মবিশ্বাস ভালই ছিল। শেষ টেস্টেও হয়তো ভাল ব্যাটিং করেছি। এতে আমার আত্মবিশ্বাস বেড়েছে।’ তবে আরিফুল প্রথমমত নির্বাচকদের নজরে এসেছিলেন বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) টি২০ খেলে। ব্যাটে-বলে অলরাউন্ড নৈপুণ্য দেখিয়েছিলেন বলেই আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শুরু হয়েছে তার টি২০ দিয়ে। কিন্তু এখন তিনি ৩ ফরমেটেই খেলে ফেলেছেন জাতীয় দলের হয়ে। এ বিষয়ে আরিফুল বলেন, ‘আমার আসলে স্বপ্ন ছিল টেস্ট খেলার। আমি চাই দীর্ঘ সময় টেস্ট দলে বা জাতীয় দলে থাকতে। আমার সব ফরমেটে খেলার ইচ্ছা। যে ফরমেটে যেভাবে খেলা দরকার সেভাবেই খেলার চেষ্টা করি। আসলে জাতীয় দলে না খেললেও আপনি সঙ্গে থাকলে অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন হয়। বড় দলের সঙ্গে খেলা বা বড় বড় খেলোয়াড়দের সঙ্গে ড্রেসিং রুম ভাগাভাগি করা, বড় ভাইরা যখন কিছু বলে তখন এসব অনেক কাজে দেয়। তখন ধারণা পাওয়া যায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটটা কি রকম হতে পারে। দলের সঙ্গে থাকলে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় হয়।’ এখন তিন ফরমেটেই খেলা হয়ে গেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। সবচেয়ে মর্যাদার ফরমেট টেস্টেও অভিষেক হয়েছে। সেই অভিষেকটা মন্দ হয়নি। আত্মবিশ্বাসী আরিফুল অবশ্য আরও দারুণ কিছু করতে চান। তিনি বলেন, ‘প্রথমত আমার হাতে নেই আমি কোন ম্যাচে খেলব, কোন ম্যাচে খেলব না। আমি মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকার চেষ্টা করি। আমি না খেললে আমার করণীয় কাজ করে যাব। আমি টেস্টে রান করেছি, কিন্তু আমি এটা ভুলে যেতে চাই। পেছনে যা খেলেছি সেটা ভুলে সামনে এগোতে চাইব। আমার লক্ষ্য আরও বড়। বাকিটা দেখা যাক। আমার ভেতরের লক্ষ্য যেন আমি পূরণ করতে পারি। আত্মতৃপ্তি আসলে আমি নিতে চাই না। কারণ এখনও আমি ওই রকম কিছুই করিনি। আমি আরও বড় কিছু করার চিন্তা করি। লক্ষ্য শতভাগ পূর্ণ না করতে পারলেও ৯০ ভাগ পর্যন্ত যেন অর্জন করতে পারি।’ আরিফুলের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ব্যাটিং করার সুযোগ লোয়ার অর্ডারেই হয়েছে। বিষয়টিকে বেশ সহজভাবেই নিয়েছেন তিনি। আর বোলিং নিয়েও কাজ করছেন যাতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বেশি ওভার বোলিংয়ের সুযোগ পান। এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘আমি বিসিএল, এনসিএলে লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানদের সঙ্গেই বেশিরভাগ সময় ব্যাট করে থাকি। ওই সময় পরিকল্পনাটা একটু অন্যরকম থাকে। আপনাকে হয়তো চারটি বল খেলতে হবে, দু’একটা বল আরেকজনকে দিতে হবে। আপনি টেল এন্ডারের কাছ থেকে ওইভাবে কিছু আশা করতে পারেন না। হয়তো হয়নি প্রথম টেস্টে, কিন্তু ওরাও চেষ্টা করেছে সুযোগ দেয়ার। আমরা চেষ্টা করছি আমি বেশিরভাগ বল খেলে একটা বল আরেকজনকে দিয়ে খেলার। বোলিং নিয়েও আমি কাজ করছি। আসলে যে উইকেটটা ছিল সেখানে আমার বোলিং মানানসই ছিল না। উইকেট পক্ষে থাকলে হয়তো আমি বোলিং করতাম। আমি মনে করি আমাকে ঘরোয়া ক্রিকেটে আরও ভাল বোলিং করতে হবে। বিপিএল বা অন্য টুর্নামেন্টে যদি আমি ভাল বল করি তাহলে অবশ্যই জাতীয় দলে বোলিংয়ের সুযোগ পাব।’
×