ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

চাঁপাই সীমান্তে অবৈধ খাটাল ॥ বেপরোয়া চোরাকারবারিরা

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ১০ নভেম্বর ২০১৮

চাঁপাই সীমান্তে অবৈধ খাটাল ॥ বেপরোয়া  চোরাকারবারিরা

ডি.এম তালেবুন নবী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ॥ অনুমোদনবিহীন বাখের আলী বিট খাটালকে ঘিরে একদল যুবক বেপরোয়া হয়ে উঠেছে পশু আনার কাজে। এরা কয়েকটি ইউনিয়নের অধিবাসী। একই সঙ্গে এই বিট খাটাল দিয়ে পাচার হয়ে আসছে মাদক, অস্ত্র ও বিস্ফোরক। যার কারণে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তৎপর হলেও একপর্যায়ে অনেকটাই নিষ্ক্রিয় হয়ে হাল ছাড়ার মতো অবস্থা। নির্বাচনের আগে এদের তৎপরতা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে অনেকে। সম্প্রতি বিজিবির হাতে ধরা পড়ে ১৬ রাখাল, যারা গরু আনতে ভারতে যাচ্ছিল। জানা গেছে, ধরা পড়া রাখালদের অধিকাংশের পরিবার বিএনপি ও মৌলবাদী গোষ্ঠীর সমর্থক। তাদের অধিকাংশ সঙ্গীসাথী সাঈদীর চাঁদে দেখা আন্দোলনে কানসাট বিদ্যুত কেন্দ্র পুড়িয়ে দেয়া মামলার আসামি। এরা বিনা পুঁজিতে বিশাল অর্থের বিনিময়ে ভারত থেকে গরু-মহিষ নিয়ে আসে। ১৬ রাখাল আটকের বিষয়টি স্বীকার করে তৎপরতা অব্যাহত রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করেন বিজিবি কর্মকর্তা। এদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে কোর্টহাজতে পাঠানো হয়েছে। এরা দীর্ঘ সময় ধরে ভারতীয় গরু আনার কথা স্বীকার করেছে। এরা উৎসাহ পেয়েছে পশু পাচারকারী সিন্ডিকেট দ্বারা। অবৈধ পথে আসা এই সব পশুর বৈধতা দিচ্ছে বাখের আলী টি খাটাল। বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে, ভারত থেকে আনা এসব গরু, মহিষের মূল্য পরিশোধ হচ্ছে হুন্ডির মাধ্যমে। এই ব্যবসায় হুন্ডির মাধ্যমে পাচার হচ্ছে প্রতি সপ্তাহে কয়েক শ’ কোটি টাকা। ফলে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে হুন্ডি ব্যবসায়ীরা। অধিকাংশ হুন্ডি ব্যবসায়ী বিএনপি, মৌলবাদী গোষ্ঠীর হলেও সীমান্তের একশ্রেণীর ক্ষমতাসীনকে হাত করে এই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে চরবাগডাঙ্গা ও বাখের আলী বিওপির অধীন সীমান্তে প্রতিদিনই অবৈধ পথে গরু-মহিষ আসছে। এসব পশু আনছে চোরাকারবারিরা। তারা বাখের আলী বিট খাটাল থেকে এসব পশুর বৈধতা আদায় করছে পয়সার বিনিময়ে। সূত্র আরও বলছে, সিন্ডিকেট চোরাকারবারির ৩০/৩৫ সদস্য ভারতীয় গরু আনছে। বিট খাটাল মালিকরা এসব পশুর বৈধতা দেবার নামে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। একই সঙ্গে আসছে মাদকসহ অস্ত্র ও বিস্ফোরকের চালান। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এসব অভিযোগ স্বীকার করে বলছে চলমান অভিযানে মাদক নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে একটি বাহিনী। একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে, চিহ্নিত হুন্ডি ব্যবসায়ী ও চোরাকারবারি চক্রের হোতা জনৈক ব্যক্তি গরু পাচার ও বিট খাটাল চাঁদাবাজির নেতৃত্ব দিচ্ছেন। চাঁপাইয়ের পুলিশ সুপার স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, বিট খাটাল স্থাপনের কারণে মাদক, অস্ত্র ও হুন্ডির চোরাচালান বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিট খাটালের কারণেই অনায়াসে প্রবেশ করছে মাদক ও অবৈধ অস্ত্র। তিনি জানান, সীমান্তে বিট খাটাল থাকলে অবৈধ অস্ত্রের আমদানি ও মাদক নিয়ন্ত্রণ কঠিন হয়ে পড়ছে। বিট খাটালের কারণে সরকার কিছু রাজস্ব পেলেও অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে। গরুর সঙ্গে প্রবেশ করেছে মাদক। এছাড়াও বিট খাটালের যারা অনুমতি পাচ্ছে তারা চিহ্নিত চোরাকারবারি। আর এই কারণেই মাদক ও অস্ত্রের ভয়াবহতা থামানো যাচ্ছে না।
×