মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রামে টাইগারপাস এলাকায় রাতের আঁধারে গড়ে উঠছে অবৈধ স্থাপনা। ফুটপাথের ওপর গড়ে উঠছে অবৈধ দোকান। রেইনবো ফিলিং স্টেশন সংলগ্ন রেলের জায়গায় সন্ত্রাসী প্রহরায় নির্মাণ কাজ অব্যাহত রেখেছে অবৈধ দখলদাররা। গত মে মাসেও প্রধান ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা ও রেলওয়ে ম্যাজিস্ট্রেট ইশরাত রেজা এই স্থানে অভিযান চালিয়ে ইসরাত পরিবহনের একটি কাউন্টার উচ্ছেদ করেন। কিন্তু কয়েক মাসের ব্যবধানে আবারও গড়ে উঠেছে অবৈধ স্থাপনা।
অভিযোগ উঠেছে, রেল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশে শুধু টাইগারপাস এলাকাই নয় আকবরশাহ এলাকায়ও রেলের বেশিরভাগ ভূমি ও আবাসিক এলাকায় অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠছে। উর্ধতন কর্তৃপক্ষ এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে কোন ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় অবৈধ স্থাপনার সংখ্যা রেলের জায়গায় ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সিন্ডিকেট করেই অসাধু রেল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবৈধভাবে বস্তি নির্মাণ করে পাহাড়ের পাদদেশ এমনকি আবাসিক এলাকায়ও অবাধে গ্যাস ও বিদ্যুতের সংযোগ দিয়ে মাসিক অর্থবাণিজ্যও চালাচ্ছে। পিডিবি ও কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশনের অসাধু কর্মচারীরা মাসোয়ারা নিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে, সিআরবি এলাকা থেকে ইস্পাহানি রেলগেট পর্যন্ত অবৈধ স্থাপনার পরিমাণ লক্ষাধিক। আবাসিক এলাকা থেকে শুরু করে খেলার মাঠ এমনকি রেল লাইনের দু’ধারেও বস্তি গড়ে উঠছে প্রতিনিয়ত। রেল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিভিন্ন সিন্ডিকেট ও সংগঠন অবৈধ স্থাপনা নির্মাণে জড়িত রয়েছে। শুধু তাই নয়, রেলের বিভিন্ন আবাসিক এলাকা ও কোয়ার্টার সংলগ্ন খালি জায়গায় এক সময় নিজেদের ব্যবহারের রেল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গৃহনির্মাণ করলেও বর্তমানে ভাড়া বাণিজ্যের উদ্দেশ্যেই ঘর তোলার হিড়িক পড়ছে। এমনকি খালি জায়গা মোটা অর্থের বিনিময়ে দখল হস্তান্তরের ঘটনাও ঘটছে। কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবে এসব সিন্ডিকেট ফায়দা লুটতে মরিয়া।
অপরদিকে, রেল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কালো থাবায় গড়ে উঠা সেমিপাকা ঘরে গ্যাস, পানি ও বিদ্যুতের অবৈধ সংযোগের কারণে বিদ্যুতের লোডশেডিংসহ গ্যাসের স্বল্পতাও দেখা দিয়েছে। পাহাড়তলীর মাস্টার লেন, পাঞ্জাবী লেন, শহীদ লেন, নিউ শহীদ লেন, আমবাগান, টাইগারপাস, গলাচিপা পাহাড়, পাহাড়তলী ও সিআরবি হাসপাতাল কলোনি, ওয়ার্লেস, ঝাউতলা, সেগুনবাগান, টিকেট প্রিন্টিং প্রেস কলোনি, সিগন্যাল কলোনি, লোকো কলোনি এলাকায় শুধু বস্তিই নয় রেলের জায়গায় একাধিক স্কুল ও মাদ্রাসা নির্মাণ হয়েছে। প্রত্যেকটি স্থাপনায় রেলের বিদ্যুত ও পানির সংযোগ যেমন রয়েছে, তেমনি কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশনের অবৈধ সংযোগও দেয়া হয়েছে। সরকার রাজস্ব হারালেও ফায়দা লুটছে রেল, পিডিবি ও কেজিডিসিএল-এর অসাধুরা।
এ বিষয়ে রেলের পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা ইসরাত রেজা জনকণ্ঠকে জানিয়েছেন, টাইগারপাস মোড় সংলগ্ন রেইনবো সিএনজি ফিলিং স্টেশনের পাশে থাকা ইসরাত পরিবহনের বাস কাউন্টারটি উচ্ছেদ করা হয়েছিল গত ২০ মে। কিন্তু রাতের আঁধারে আবারও গড়ে উঠছে। রেলের জায়গা অবৈধ দখলমুক্ত করতে সচেষ্ট কর্তৃপক্ষ। রেলের জায়গায় গড়ে উঠা অবৈধ সকল স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান অব্যাহত থাকবে। এক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ কোন ধরনের বাধার সম্মুখীন হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।