ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মনোনয়ন প্রত্যাশীদের বেশিরভাগ এখন রাজধানীতে

তফসিল ঘোষণার পরই চট্টগ্রামে নির্বাচনী মাঠ সরগরম

প্রকাশিত: ০৫:০৪, ১০ নভেম্বর ২০১৮

 তফসিল ঘোষণার পরই চট্টগ্রামে নির্বাচনী মাঠ সরগরম

মোয়াজ্জেমুল হক, চট্টগ্রাম অফিস ॥ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল বৃহস্পতিবার ঘোষিত হওয়ার অব্যবহিত পর চট্টগ্রামের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুনভাবে নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে। ১৬ আসন নিয়ে চট্টগ্রাম মহানগরী ও জেলা। আওয়ামী লীগ এবং এর নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীর অধিকাংশই বর্তমানে ঢাকায়। তাদের অনুসারীরা উল্লাসমুখর পরিবেশে রয়েছেন। তবে নবপ্রতিষ্ঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট জোটগতভাবে এবং শরিকদল বিএনপি এককভাবে নির্বাচনী ডামাডোল নিয়ে এক ধরনের অনিশ্চয়তায় রয়েছে। সবকিছু নির্ভর করছে কেন্দ্রীয় হাইকমান্ডের নির্দেশের ওপর। বৃহস্পতিবার তফসিল ঘোষণার পর পরই মহানগরী ও জেলার ১৬ সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা আনন্দ মিছিল করেছে। দলের অভ্যন্তরে বিভিন্ন বিবাদ থাকা সত্ত্বেও এখন সকলেই নির্বাচনী আমেজ নিয়ে উল্লসিত। এ ১৬ আসনে আওয়ামী লীগ ও এর নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের পক্ষে কে কোন্ আসনে মনোনয়নের টিকেট পাচ্ছেন তা একেবারে সুনিশ্চিত নয়। অনেকে সবুজ সঙ্কেত পেয়েছে বলে বিভিন্নভাবে দাবি করলেও শেষ মুহূর্তে কার ভাগ্যে চূড়ান্ত টিকেট মিলবে তা নিশ্চিত নন, তবে আশাবাদী। চট্টগ্রামের এ ১৬ আসনে বর্তমানে যারা এমপি পদে এদের শতভাগই নতুনভাবে মনোনয়ন লাভে তৎপর। তবে তাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মনোনয়নের প্রত্যাশায় মাঠে নেমেছেন একঝাঁক নতুন মুখ। কেন্দ্রে এদের জোর লবিং একেবারে দৃশ্যমান। ইতোমধ্যে দলীয় সভানেত্রী হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন- দলের যাকেই মনোনয়ন দেয়া হবে তা যেন সকলে মেনে নেয়; অন্যথায় বিদ্রোহী যে কোন কারোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারিও রয়েছে। ফলে দলের অভ্যন্তরে একটি ইতিবাচক ভূমিকা দৃশ্যমান। অভ্যন্তরীণ কোন্দল, গ্রুপিং যেটাই থাক না কেন তা কোনভাবেই প্রকট রূপ যে নেবে না তা নিশ্চিত। ফলে চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ এককভাবে বা জোটগতভাবে অতীতের চাইতে বহুগুণে প্লাস পয়েন্টে রয়েছে। অপরদিকে, বিএনপির পক্ষে যারা মনোনয়ন প্রত্যাশী তাদের অধিকাংশ বিভিন্ন মামলার আসামি হয়ে রীতিমত ঘরছাড়া। আবার অনেকে গ্রেফতার হয়ে জেল খাটছেন। জামায়াত দলের নিবন্ধন হারিয়ে একেবারে দুর্দশার চরম অবস্থানে পৌঁছে গেছে। মাঠে নামা দূরে থাক, নিজেদের ব্যক্তিগত অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রামে তারা ব্যস্ত। জামায়াত বিএনপির অন্যতম শক্তি বলে বিবেচিত। বিএনপিই যেখানে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পতাকাতলে একাকার হয়ে আছে সেখানে যুদ্ধাপরাধী দল হিসেবে চিহ্নিত জামায়াতের অবস্থান কি হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়। এছাড়া জাতীয় পার্টির চট্টগ্রাম ও জেলায় তিনটি আসন জোটগতভাবে পাওয়ার সম্ভাবনার কথা চাউর হয়ে আছে। শেষ পর্যন্ত তিনটি না হলেও দুটি যে নিশ্চিত তা বলার অপেক্ষা রাখে না। যে তিনটি আসনে জাতীয় পার্টি মনোনয়ন লাভের জন্য জোর লবিংয়ে তৎপর তা হচ্ছে-চট্টগ্রাম মহানগর (কোতোয়ালি), হাটহাজারী এবং বাঁশখালী)। বিগত সংসদ নির্বাচনে কোতোয়ালি ও হাটহাজারী আসনটি ১৪ দলীয় জোটের পক্ষে জাতীয় পার্টিকে দেয়া হয় এবং এ দলের দুই প্রার্থী নির্বাচিতও হন। আগামী সংসদ নির্বাচনে বাঁশখালী আসনটিও নিশ্চিত করতে তৎপর। এ আসনে বর্তমানে নির্বাচিত হয়ে আছেন আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী। তিনিও জোর লবিং চালাচ্ছেন আসনটি ধরে রাখতে। এ আসনে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য চট্টগ্রামের প্রথম মনোনীত মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী শক্ত অবস্থানে। বৃহস্পতিবার নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা যে হবে তা আগে থেকেই প্রচার ছিল। নিশ্চিত হয়ে মনোনয়নপ্রত্যাশীর অধিকাংশ ঢাকায় চলে যান। শুক্রবার সকালে পুরনো ও নতুনদের অনেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। মনোনয়নপত্র সংগ্রহের সুবিধা জেলায়ও রয়েছে। অনেকে জেলা থেকে সংগ্রহ করবেন। এরপর অপেক্ষা চূড়ান্ত সিগন্যালের। অতঃপর শুরু হবে ভোটের লড়াইয়ের যাবতীয় কার্যক্রম। ঐক্যফ্রন্ট বা বিএনপি যেভাবেই নির্বাচনে আসুক না কেন রাজনীতির মাঠ বহু আগে থেকেই আওয়ামী লীগ দলীয় নেতাকর্মী, সমর্থক ও শুভাকাক্সক্ষীর দখলে। এটাই আওয়ামী লীগের বড় প্লাস পয়েন্ট হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
×