ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

জলজ ৪ ঢাকার রাস্তা চিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধন আলিয়ঁসে সংস্কৃতি সংবাদ

প্রকাশিত: ০৫:০১, ১০ নভেম্বর ২০১৮

 জলজ ৪ ঢাকার রাস্তা চিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধন আলিয়ঁসে সংস্কৃতি সংবাদ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গ্যালারিতে শোভা পাচ্ছে শুধুমাত্র জনবহুল রাজধানী ঢাকার চিত্র। বৃষ্টিস্নাত রাজধানীতে ছাতা মাথায় অসংখ্য লোকের চলাচল, কেউ চলেছে রিক্সায় কেউ বা হেঁটে, কেউ বৃষ্টির কারণে আশ্রয় নিয়েছে কোন ফটকের নিচে, জনযান সিএনজি আর রিক্সা পড়ে আছে চালকবিহীন অবস্থায়, মতিঝিলের শাপলা চত্বরের দৃশ্য, আবার কোথাও রয়েছে লেগুনায় চলাচলের মুহূর্ত, ঢাকার পুরনো বাড়িঘর, মার্কেটের সম্মুখের দৃশ্যসহ বেশ কিছু চিত্র রয়েছে দেয়ালে দেয়ালে। জল রংয়ে আঁকা ঢাকার এসব চিত্র ফুটে উঠেছে শিল্পীদের তুলির আঁচড়ে। এসব ছবি নিয়ে ঢাকার আলিয়ঁস ফ্রঁসেসে শুরু হয়েছে ‘জলজ ৪ ঢাকার রাস্তা’ শীর্ষক দলীয় চিত্র প্রদর্শনী। প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছেন শিল্পী বিপ্লব চক্রবর্তী, মোঃ আজমল উদ্দিন, গোলাম মশিউর রহমান চৌধুরী, আল-আখির সরকার, শ্যামল বিশ্বাস ও সাদেক আহমেদ। এই প্রদর্শনীতে শিল্পীরা মূল বিষয়বস্তু হিসেবে বেছে নিয়েছেন ঢাকার রাস্তাকে। তাদের রং তুলির আঁচড়ে ফুটে উঠেছে ঢাকার রাস্তার দেখা অদেখা নানান দিক। পক্ষকালব্যাপী এ চিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন হয় শুক্রবার বিকেলে। শিল্পী আল আখির সরকার তার স্বতন্ত্র স্টাইলটিকে শাণিত করেছেন, যেখানে তিনি ক্যানভাসে গতিময়তাকে ফুটিয়ে তুলেছেন রঙিন ছোট্ট ছোট্ট বিন্দুর মধ্যদিয়ে। হয়তো তা অবিরত ঝরে পড়া বৃষ্টিধারার স্থবির কোন মুহূর্ত হতে নেয়া অথবা শিশির ফোঁটা, কিংবা বায়ুম-লেরই ভেসে বেড়ানো কোন উপকরণ। যেন পৃথিবীর সব যান্ত্রিক চলিষ্ণুতা একটি স্থিরবিন্দুতে এসে পৌঁছেছে, যেমন হয় ঢাকার যে কোন জ্যামে। শিল্পী বিপ্লব চক্রবর্তীর চিত্রেও রয়েছে ঢাকার রাস্তাঘাট। চালকবিহীন একটি রিক্সা কিংবা একটি জনবহুল শহুরে রাস্তা। তার ছবিতে ছায়া ও কালের এমন স্বকীয় ছাপ আলাদা করে ফুটে উঠেছে। শিল্পী গোলাম মশিউর রহমানের চিত্রে ফুটিয়ে তুলেছেন বৃষ্টিস্নাত রিক্সা এবং যানবাহন, সেই সঙ্গে মেগালোপলিটান বহুত্বধারার এই নগরীর দূরতম আলোর ঝলকানি প্রতিভাস, উজ্জ্বল রং এবং ছায়ার কারুকাজ। শিল্পী মোহাম্মদ আজমল উদ্দীন ঢাকার রাস্তাঘাটের একটি বিশেষ এবং প্রতিনিধিত্বশালী উপকরণকে ছবির উপজীব্য করে তোলেন কাক। তার নীলচে ক্যানভাসের মধ্য দিয়ে যেন কালো এ পাখির কর্কশ ডাক শ্রুতিগ্রাহ্য হয়ে উঠেছে। ঢাকার যে কোন রাস্তা এই কাাে কাক ছাড়া যেন পূর্ণতা পায় না। রিক্সা, মানুষ অথবা পথচারী এবং ঢাকার রাস্তাঘাট শিল্পী সাদেক আহমেদের ছবিতে স্থান পেয়েছে অন্যান্য সহশিল্পীদের তুলনায় একটু যেন নাটকীয়তায়। শিল্পী শ্যামল বিশ্বাসের লেন্স তার বিষয়বস্তুর নিকটতর অন্তরঙ্গতায় ভাস্বর। যেন তিনি আলাদা কোন দৃষ্টিকোনে আরও ভাল করে অনুধাবনে তৎপর। রাস্তার এক অংশ অত্যন্ত অন্তরঙ্গ আবহে উঠে আসে সেই দৃশ্যে। প্রদর্শনীতে প্রায় ৬০টি চিত্রকর্ম স্থান পেয়েছে। চলবে ২৪ নবেম্বর পর্যন্ত। সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা এবং শুক্র ও শনিবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা এবং বিকেল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রদর্শনীটি খোলা থাকবে। রবিবার সাপ্তাহিক বন্ধ। প্রদর্শনীটি সবার জন্য উন্মুক্ত। নারী উদ্যোক্তাদের শীতবস্ত্র মেলার উদ্বোধন ॥ বিভিন্ন স্টলে শোভা পাচ্ছে বাহারী রকমের পোশাক, মানিব্যাগ, পার্টস ব্যাগ, সোনা ও মুক্তার গহনা, আকর্ষণীয় জুয়েলারি, জুতা, মণিপুরি, জামদানি ও তাঁতের শাড়ি। এছাড়াও রয়েছে যশোরের ঐতিহ্যবাহী খেঁজুরের গুড়, পিঠা ও খাঁটি মধু, ঘর সাজানো বিভিন্ন শোপিচসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় নানা রকম পণ্য। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের অর্ধশতাধিক নারী উদ্যোক্তাদের এসব সৃষ্টিশীল কাজ নিয়ে রাজধানীর গুলশান দুইয়ের সিক্স সিজন হোটেলে শুরু হয়েছে বর্ণাঢ্য শীতবস্ত্র মেলা। যদিও নাম রাখা হয়েছে বস্ত্রমেলা কিন্তু বস্ত্রের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই এ মেলা। এখানে ঘটেছে নারী উদ্যোক্তাদের সৃষ্টিশীল কাজের সমাহার। দুই দিনব্যাপী এ মেলার আয়োজন করেছে উইমেনস এম্পাওয়ার্মেন্ট অর্গানাইজেশন। শুক্রবার দুপুরে মেলার উদ্বোধন করেন ফেইথ বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক, উইমেনস এন্টারপ্রেনার এ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নিলুফার করিম। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মহিলা বিষয়ক অধিদফতরের জেলা বিষয়ক কর্মকর্তা আয়শা নার্গিস ও মেলার স্পন্সর লারিনার পক্ষে রেহেনা আক্তার। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন স্টেপ ওয়ান গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মাসুদুল হাসান ও টেকনো এ্যাপোজির কর্মকর্তা রায়হান উদ্দিন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উইমেনস এম্পাওয়ার্মেন্ট অর্গানাইজেশনের প্রেসিডেন্ট, নন্দিনী ফ্যাশনের কর্ণধার, স্টেপওয়ান গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমা মাসুদ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে নিলুফার করিম বলেন, একজন পুরুষের চেয়ে যদি একজন নারী দ্বিগুণ গুণাবলী সম্পন্ন না হয়, তাহলে উনি পুরুষের সে জায়গায় পৌঁছাতে পারবেন না। নারীর মধ্যে অনেক গুণাবলী থাকলেই তিনি একজন সফল উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে পারেন। নারী উদ্যোক্তাদের পরিশ্রমী, অধ্যবসায়ী, সৃষ্টিশীল, দূরদর্শী, ঝুঁকি নেয়ার ক্ষমতা অর্জন, দৃঢ় মনোবল এবং প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব থাকতে হবে। তাকে মনে করতে হবে বাধা আসতে পারে, তা পেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। তিনি নতুন নারী উদ্যোক্তা তৈরি করতে সবার সহায়তা কামনা করেন। তিনি আর বলেন, একজন নারীকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে হলে নিজেকে একজন পুরুষের চাইতেও বেশি কাজ করে তার নিজ যোগ্যতা প্রমাণ করতে হয়। আয়শা নার্গিস বলেন, নারীরা এখন সর্বক্ষেত্রে সাফল্য নিয়ে আসছে। দেশের উন্নয়নের মূলে স্রোতধারায় নারীরা এমনভাবে সম্পৃক্ত হয়েছে যে কোন ক্ষেত্রেই তারা আর পিছিয়ে নেই। সরকারের উদ্যোগে নারীর ক্ষমতায়ন আজ এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে কোন বাবা যদি তার কন্যা শিশু সন্তানকে বিয়ে দিতে উদ্যত হন তাহলে শিশুটির মা আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারবেন। দুস্থ কর্মক্ষম নারীরা যেন বিনা পয়সায় তাদের হাতের কাজ প্রদর্শন করে স্বাবলম্বী হতে পারেন, তাদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা মহিলা বিষয়ক অধিদফতর গ্রহণ করবেন বলেও জানান। নাজমা মাসুদ নারীর ক্ষমতায়নের এই মহতী উদ্যোগকে সবার কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন। মেলা চলবে আজ শনিবার দিনব্যাপী।
×