ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

প্রাণীদের বিচিত্র শিকার কৌশল

প্রকাশিত: ০৭:২২, ৯ নভেম্বর ২০১৮

প্রাণীদের বিচিত্র শিকার কৌশল

সেক্রেটারি পাখি এই পাখিগুলো নিবাস আফ্রিকার সাহারা সন্নিহিত অঞ্চলে। আচরণ ও শিকার পদ্ধতিতে তারা ব্যতিক্রমী এই দিক দিয়ে যে তারা মাটিতেই শিকার করেÑ বেশিরভাগ শিকারি পাখি যা করে না। এক্ষেত্রে এই পাখিরা শিকারকে ঘায়েল করতে তাদের পদদ্বয় ও নখরকে কাজে লাগায়। ইঁদুরের মতো ছোট ছোট শিকারকে তারা ঠোকর মেরে বা নখর দিয়ে মুহূর্তের মধ্যে আঁকড়ে ধরতে পারে। তবে সাপ ও অন্যান্য বড় আকারের শিকারকে তারা পদাঘাত ও নখরাঘাত করতে করতে মেরে ফেলে। তারা মাত্র ১৫ মিলি সেকেন্ডের ব্যবধানে এক একটা লাথি মারতে পারে। পেলিকেন মাকড়সা বিলুপ্ত হয়ে গেছে বলে ধরেই নেয়া হয়েছিল এমন ১৮টি নতুন প্রজাতির পেলিকেন মাকড়সা সম্প্রতি মাদাগাস্কারে আবিষ্কৃত হয়েছে। তবে এটাই যে তাদের একমাত্র অবাক করার মতো ব্যাপার তা নয়। পেলিকেন মাকড়সার একমাত্র শিকার অন্যান্য প্রজাতির মাকড়সা। এদের তারা ওদের রেখে যাওয়া রেশমী সুতার লাইন অনুসরণ করে খুঁজে বের করে। তারা মাকড়সার জাল টেনে ওদের কাছে নিয়ে আসে। পাশ থেকে দেখলে মনে হবে পেলিকেন পাখির মতো বিশাল ঠোঁট যেন ওদের আছে। আসলে ওটা ঠোঁট নয় বরং শক্তিশালী চোয়াল যার প্রান্তভাগে রয়েছে বিষদাঁত। পেলিকেন মাকড়সা এই দাঁত দিয়ে শিকার কামড় দেয়ার পর বিশাল শক্তিশালী চোয়ালে ধরে সেই মাকড়সাটি মারা না যাওয়া পর্যন্ত অনেক দূর পর্যন্ত টেনে নিয়ে যেতে পারে। তবে আতঙ্কিত বোধ করার কোন কারণ নেই। এই মাকড়সা মাত্র এক সেন্টিমিটার লম্বা। নারিকেল অক্টোপাস ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরের উষ্ণ জলরাশির এলাকায় এই নারিকেল অক্টোপাস ব্যাপক পরিসরে পাওয়া যায়। এটা একটা বুদ্ধিমান সেফালোপড প্রাণী। নামটা এসেছে এর বর্ম হিসেবে ব্যবহারের জন্য নারিকেল খোল বা সামুদ্রিক ঝিনুকের খোল বয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রবণতা থেকে। মাঝারি আকৃতির এই অক্টোপাস বিষাক্ত নয়। শুঁড়সহ এদের শরীর লম্বায় প্রায় ৬ ফুট হয়। ওজন হয় ৭ থেকে ৯ আউন্স। এরা মাছ, চিংড়ি ও অন্যান্য খোলসযুক্ত প্রাণী খায়। এরা নির্জনবাসী। সারা জীবন একা একাই থাকে। সন্ধ্যা ও ভোরবেলায় এরা শিকার করে, বেশিরভাগ সময় তারা শুধু চোখ দুটো ছাড়া গোটা শরীর বালুর ভেতর লুকিয়ে রাখে। কালো বক কালো বকের বাস মধ্য ও পূর্ব আফ্রিকায়। এরা ব্ল্যাক হেরোন ও ছাতা পাখি (আমব্রেলা বার্ড) নামেও পরিচিত। গভীর পানিতে তারা চুপিসারি শিকারের দিকে অগ্রসর হয়। মাছ ধরার সময় তারা পানির উপরিভাগ থেকে ঠিকরে আসা আলোয় যাতে চোখে ধাঁধা না লাগে তার জন্য বার বার তারা ছাতার মতো তাদের ডানাদ্বয় মেলে ধরে। এই ডানা মেলার কারণে শিকার এতে ছায়া দেখতে পায় না। কুমির ও এলিগেটর এরা যে খুবই চতুর ও দুর্দান্ত শিকারি তা সবাই জানে। তবে দু-একটা প্রজাতির শিকারের কৌশলের মধ্যে অদ্ভুত বিশেষত্ব আছে। যেমন এক জাতের আমেরিকান এলিগেটর ও কুমির আছে যারা পাখিদের প্রলুব্ধ করার জন্য টোপ ব্যবহার করে। টোপটা তারা নিজেদের মুখেই ধরে রাখে। যেখানে সারস ও বকদের আনাগোনা বেশি সেখানে তারা পানির নিচে মাথাশুদ্ধ শরীরটা ডুবিয়ে রাখে। শুধু মুখে একটা কাঠি ধরে সেটা পানির ওপর উঁচিয়ে রাখে। পাখিরা যারা বাসা বাঁধতে কাঠি বা খড়কুটো খুঁজতে আসে তারা কুমিরের মুখে ধরা ওই কাঠি তুলে নেয়ার জন্য এগিয়ে আসে। আর তখনই কম্ম সারা। বেশ চমৎকার এক ভোজ হয়ে যায় কুমিরের।
×