ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সোডিয়াম সালফেট আমদানি বন্ধ চায় লবণ ব্যবসায়ীরা

প্রকাশিত: ০৬:২৫, ৮ নভেম্বর ২০১৮

সোডিয়াম সালফেট আমদানি বন্ধ চায় লবণ ব্যবসায়ীরা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ অবাধে বিষাক্ত সোডিয়াম সালফেটের আমদানির সুযোগে দেশীয় লবণ শিল্প ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ লবণ মিল মালিক সমিতি। সংগঠটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক সোডিয়াম সালফেট খাবার লবণ হিসেবে ব্যবহার, সোডিয়াম সালফেটের নামে ফিনিশড লবণ আমদানি, বৈষম্যমূলক শুল্কনীতি এবং বিসিকের তথ্যবিভ্রাটের কারণে দেশীয় লবণ শিল্প ও চাষীরা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে। ইতোমধ্যে ৩ শতাধিক মিল বন্ধ হয়ে প্রায় লক্ষাধিক শ্রমিক বেকার হওয়ার পথে রয়েছেন। অপরদিকে, সোডিয়াম সালফেট খেয়ে ভোক্তাদের লিভার, কিডনি ও পাকস্থলীর মতো শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ জটিল রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। অচিরেই সোডিয়াম সালফেট খাবার লবণ হিসেবে ব্যবহার বন্ধ না হলে পুরোজাতি মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়বে। একই সঙ্গে চাষীরা আগামী লবণ উৎপাদন মৌসুমের উৎপাদিত প্রাকৃতিক লবণ বিক্রি করতে পারবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে সংগঠনটির পক্ষ থেকে। বুধবার রাজধানীর স্থানীয় এক হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ লবণ মিল মালিক সমিতির পক্ষ থেকে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। ওই সময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির সভাপতি নুরুল কবির। তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, মানবদেহের জন্য বিষাক্ত সোডিয়াম সালফেট দিয়ে তৈরি হচ্ছে খাবার লবণ। প্রায় বিনাশুল্কে আমদানি করা যায় সোডিয়াম সালফেট, অন্যদিকে অপরিশোধিত বোল্ডার লবণ আমদানিতে প্রায় ৯০ শতাংশ কাস্টমস ডিউটি প্রদান করতে হয়। এতে করে শিল্পে ব্যবহারের জন্য সোডিয়াম সালফেট আমদানি করে পরবর্তীতে তাই খাবার লবণ হিসেবে বাজারজাত করা হচ্ছে। এছাড়া অনুমতি না থাকার পরও একটি অসাধু ব্যবসায়ী চক্র সরাসারি ফিনিশড লবণ আমদানি করছে। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন বিসিক বিষয়টি জানার পরও সোডিয়াম সালফেট আমদানি নিয়ন্ত্রণে কর্ণপাত করছে না। বরং লবণ ঘাটতির যে তথ্য দিয়েছে বিসিক তাও সঠিক নয়। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে লবণের ঘাটতি পূরণ হচ্ছে সোডিয়াম সালফেট দিয়ে। তিনি বলেন, বছর প্রায় ৫ লাখ মেট্রিক টন (বিসিকের হিসেব মতে ১ লাখ ২৮ হাজার মেট্রিক টন) লবণ ঘাটতি থাকা সত্ত্বেও আজ পর্যন্ত কোন লবণ আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। পাশাপাশি প্রতিনিয়ত চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে হাজার হাজার টন সোডিয়াম সালফেট দেশে আনা হচ্ছে। এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে শক্তিশালী সিন্ডিকেট চক্র। সোডিয়াম সালফেট বাজারজাত করার কারণে দেশের ৩ শতাধিক লবণ মিল এখন বন্ধ প্রায়। এ অবস্থায় কিছু চিহ্নিতকারী অসাধু সিন্ডিকেট চক্র এ শিল্প ধ্বংসে মিল মালিক ও চাষীদের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। আমরা লবণ মিলমালিকদের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে বলতে চাই, লবণ চাষী ভাইয়েরা এবং লবণ মিলমালিকরা একে অপরের পরিপূরক। এ অবস্থায় দেশীয় লবণ শিল্প রক্ষায় জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় নিয়ে সোডিয়াম সালফেট আমদানি নিষিদ্ধ করার দাবি জানানো হয়েছে। অথবা দেশীয় লবণ শিল্প রক্ষায় সোডিয়াম সালফেট আমদানিতে ১০০ ভাগ কাস্টমস ডিউটি আরোপ করার কথা বলা হয়েছে।
×