ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

কলড্রপ সমস্যা

প্রকাশিত: ০৬:১৯, ৮ নভেম্বর ২০১৮

কলড্রপ সমস্যা

কলড্রপ বাংলাদেশের একটি স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কখনও কথা বলতে বলতে হঠাৎ মোবাইল ‘নীরব’ হয়ে যাচ্ছে। কখনও আবার এক প্রান্তের মানুষ কথা শুনতে পাচ্ছেন তো আরেক প্রান্তে কিছুই শোনা যাচ্ছে না। কোন সময় ঘ্যাড় ঘ্যাড় শব্দ হচ্ছে, তারপর একটা সময় পর কলড্রপ হচ্ছে। কোন কোন ক্ষেত্রে কাউকে ফোন করলেই শুনিয়ে দেয়া হচ্ছে, আপনার ডায়াল করা নম্বরটি এখন পরিষেবাসীমার বাইরে। ঠিক পরক্ষণেই ডায়াল করলে পাওয়া যাচ্ছে। কখনও আবার একজনকে ফোন করলে মাঝে অন্য কারও কথা শোনা যাচ্ছে। ক্রস কানেকশন, সংযোগ না পাওয়া, কথা বলতে বলতে ফোন কেটে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা। মোবাইল সংস্থাগুলো এর জন্য দায়ী করছে প্রয়োজনের তুলনায় কম টাওয়ারের সংখ্যাকেই। তাদের দাবি, টাওয়ার বাড়ানো গেলেই কমবে সমস্যা। অতিরিক্ত টাওয়ার বসানো যাচ্ছে না, তাই সমস্যা। সত্যিই কি তাই? টেলিকম বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু টাওয়ার বাড়ালেই সমাধান হবে এমন ভাবার কোন কারণ নেই। অনেক বেশি সংযোগ আর গতির দৌড়ই বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে মোবাইলে স্পষ্ট কথা শোনা, কলড্রপ ঠেকানোয়। তাদের কথায়, রেডিও তরঙ্গের মাধ্যমে একজনের কথা দ্রুত ভাসতে ভাসতে আরেকজনের কাছে পৌঁছায়। এ কাজে সাহায্য করে নির্দিষ্ট কোড। যার মাধ্যমে নির্দিষ্ট এক ব্যক্তির মোবাইল থেকে আরেকজনের কাছে টাওয়ার হয়ে রেডিও তরঙ্গে ভাসতে ভাসতে কথা পৌঁছায়। বার্তার আদানপ্রদান হয়। মোবাইলে কথা স্পষ্ট শুনতে গেলে চাই কম মেগাহার্ৎসের রেডিওকম্পন। যত কম কম্পন, তত স্পষ্ট কথা। মোবাইল সংস্থাগুলো প্রচুর সংযোগ দিচ্ছে। তুলনায় টাওয়ার অপর্যাপ্ত। অনেক সময় এমনও হচ্ছে, একই টাওয়ার এলাকায় প্রচুর মানুষ মোবাইলে কথা বলছেন। অথচ এত লোকের কথা এক মোবাইল থেকে আরেকটিতে ঠিকঠাকভাবে পৌঁছে দেয়ার মতো ক্ষমতা সেই টাওয়ারের নেই। তখনই ঘটছে বিপত্তি। সাময়িক ‘ডেড’য়ে যাচ্ছে কোন কোন মোবাইল নেটওয়ার্ক। ক্রস কানেকশন হয়ে অন্যের কথা শুনতে হচ্ছে। একই তরঙ্গসীমার মধ্যে বেশি ইন্টারনেটের ব্যবহার হলে অনেক সময় ফোনে কথা বলতে বলতে থমকে যায়। মোবাইল সংস্থাগুলোর ভাষায় একে বলে ‘কল ব্রিথিং’। কিছুক্ষণ এ রকম চললে ঘটে কলড্রপ। অনেক সময় সুউচ্চ বহুতলও বাধা তৈরি করছে। ২জি-এর ক্ষেত্রে কল আর ইন্টারনেটের ডেটা পৃথক তরঙ্গে যাতায়াত করে। এখানে কথা বেশি হয়। ৩জি কিংবা ৪জি-এর ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ব্যবহার বেশি। দ্রুতগতির ইন্টারনেট সংযোগ থাকলে তবেই ভিডিও বা সিনেমা দ্রুত মোবাইলের পর্দায় ফুটে উঠবে। ডেটা লাগে অনেক। আর এই গতির সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়েই হচ্ছে সমস্যা। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে চতুর্থ প্রজন্মের ৪এ সেবায় দেশের বিভিন্ন স্থানে ৩এ পাওয়াই কষ্টসাধ্য ব্যাপার। এখন আমাদের নিজস্ব স্যাটেলাইট রয়েছে। তবুও কলড্রপ সমস্যা দূর হচ্ছে না। শ্রীনগর, মুন্সীগঞ্জ থেকে
×