ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

একনেকে ২৮ প্রকল্প অনুমোদন

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ৮ নভেম্বর ২০১৮

একনেকে ২৮ প্রকল্প অনুমোদন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পসহ ২৮ প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। বাস্তবায়নে খরচ ধরা হয়েছে ৩০ হাজার ২৩৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারী তহবিল থেকে ২৪ হাজার ৮৫৪ কোটি ৬৮ লাখ টাকা, বাস্তবায়নকারী সংস্থা ৫৩৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা ও বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৪ হাজার ৮৪০ কোটি ৭৫ লাখ টাকা খরচ করা হবে। বুধবার শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৪ হাজার ২৮০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারী তহবিল থেকে ৩৯৪ কোটি ৬৩ লাখ এবং বিশ্ব ব্যাংকের ঋণ সহায়তা থেকে ৩ হাজার ৮৮৫ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা সচিব জিয়াউল ইসলাম, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম ও আইএমইডির সচিব মফিজুল ইসলাম। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, নির্দিষ্ট প্রাণিসম্পদ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি ও ভ্যালু-চেন পরিচালনার ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র খামারি ও কৃষি উদ্যোক্তাদের উৎপাদনশীলতা, বাজার অংশীদারিত্ব এবং জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার সক্ষমতা বৃদ্ধি করা। সুষম খাদ্য এবং উন্নত স্বাস্থ্য ও প্রজনন সেবা দেয়ার মাধ্যমে পারিবারিক পর্যায়ে গবাদিপশুর স্বতন্ত্র উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, ৫ হাজার ৫০০ উৎপাদক সংগঠনকে প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের সঙ্গে সংযুক্ত করার মাধ্যমে ভ্যালু চেন এবং মার্কেট লিংকেজ উন্নয়ন, নিরাপদ প্রাণিজ উৎপাদন ব্যবস্থা এবং মান নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি প্রবর্তন, টেকসই উন্নয়নের জন্য পরিবেশ বান্ধব প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন, জ্ঞান প্লাটফর্ম এবং প্রাণিসম্পদ বীমা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হবে। পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, এখন থেকে জমি বাঁচাতে জেলা পর্যায় সব সরকারী অফিসকে এক জায়গায় অর্থাৎ এক বড় বিল্ডিংয়ে নিয়ে আসার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া নেত্রকোনার শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্প অনুমোদন দিতে গিয়ে তিনি বলেন, পর্যাপ্ত খেলার মাঠ রাখা এবং হাওর কেন্দ্রিক ব্যাপক গবেষণা করতে হবে। চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীকে দূষণমুক্ত রাখারও নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে উপজেলা ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস তৈরির সময় এগুলো যাতে দুর্যোগে সাইক্লোন সেল্টার হিসেবে ব্যবহার করা যায় সেজন্য তাগিদ দিয়েছেন তিনি। একনেকে অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পগুলো হচ্ছে, চট্টগ্রাম মহানগরীর পয়ঃনিষ্কাশন স্থাপন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৮০৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন কঠিন বর্জ্য সংগ্রহ এবং অপসারণ ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৩৪৫ কোটি ৯১ লাখ টাকা। বহদ্দারহাট বাড়ইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত খাল খনন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১ হাজার ২৫৬ কোটি ১৬ লাখ টাকা। চা বাগান কর্মীদের জন্য নিরাপদ সুপেয় পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৬২ কোটি ১৪ লাখ টাকা। সিলেট ওসমানি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ২ হাজার ৩০৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। উপজেলা ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৭৪৬ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। বিনিয়োগ বোর্ড ভবন নির্মাণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১৯৮ কোটি টাকা। ১১টি মর্ডান ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন নির্মাণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৬২৯ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। মাদারীপুর সরকারী অফিসসমূহের বহুতল ভবন নির্মাণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৮৩ কোটি টাকা। শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয় নেত্রকোনা স্থাপন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ২ হাজার ৬৩৭ কোটি ৪১ লাখ টাকা। নির্বাচিত ৯ সরকারী কলেজের উন্নয়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৬২৯ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। শেখ রাসেল উচ্চ বিদ্যালয়, সদর গোপালগঞ্জ ও শেরেবাংলা বালিকা মহাবিদ্যালয় সূত্রাপুর ঢাকার অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৭১ কোটি টাকা। চট্টগ্রাম খুলনা রাজশাহী এবং রংপুর বিভাগে একটি করে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১ হাজার ২২২ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। শহীদ কামারুজ্জামান টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট স্থাপন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১৫৬ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। ভোলা টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট স্থাপন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১০৫ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। র‌্যাব ফোর্সেস এ অভিযানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১ হাজার ৩৩ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। জয়িতা ফাউন্ডেশনের সক্ষমতা বিনির্মাণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ২৬২ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। ডিপিসির আওতাধীন এলাকায় বিদ্যুত বিতরণ ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১ হাজার ৯৫৭ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। সোনাগাজী ৫০০ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুত নির্মাণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৭৪৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। বীজ প্রত্যয়ন কার্যক্রম জোরদারকরণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৭৮ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। আনুসঙ্গিক সুবিধাদিসহ বিশেষ ধরনের নির্মাণ ও স্থাপন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১৬২ কোটি ৭১ লাখ টাকা। বৃহত্তর রাজশাহী জেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৬২৩ কোটি ২৭ লাখ টাকা। বৃহত্তর নোয়াখালী পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৭৪০ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। পানিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৪ হাজার ২৮০ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। বাঙালী-করতোয়া ফুলজোর-হুরাসাগর নদী সিস্টেম ড্রেজিং পুনর্খনন ও তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ২ হাজার ৩৩৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা। ৬৪ জেলার অভ্যন্তরে ছোট নদী খাল এবং জলাশয় পুনর্খনন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ২ হাজার ২৭৯ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। ইমারজেন্সি মাল্টি-সেক্টর রোহিঙ্গা ক্রাইসিস রেসপনস প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৩৩৭ কোটি ৮৯ লাখ টাকা।
×