ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

‘টেস্টের বাংলাদেশ এখনও অর্ডিনারি’

প্রকাশিত: ০৬:৫০, ৭ নভেম্বর ২০১৮

‘টেস্টের বাংলাদেশ এখনও অর্ডিনারি’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ রঙিন পোশাকে, বিশেষ করে ওয়ানডেতে বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশ এখন সমীহজাগানিয়া এক নাম। সম্প্রতি দুই পরাশক্তি পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কাকে পেছনে ফেলে এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলাই সেটি প্রমাণ করে। কিন্তু স্ট্যাটাস পাওয়ার দেড় যুগ পরও টেস্টে টাইগারদের পারফর্মেন্স মোটেই আশানুরূপ নয়। ২০১০ সালে বাংলাদেশ সফরের আগে বাংলাদেশকে ‘অর্ডিনারি’ দল বলে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন বীরেন্দর শেবাগ। মঙ্গলবার সিলেট টেস্টে মাত্র সাড়ে তিনদিনে জিম্বাবুইয়ের কাছে হার ১৫১ রানে। টানা আট ইনিংসে দুই শ’ পেরোতে ব্যর্থ বাংলাদেশ। দুই ইনিংসে স্বাগতিকরা গুটিয়ে গেছে মাত্র ১৪৩ ও ১৬৯ রানে। প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং ভরাডুবির পর ক্রিকেটের জনপ্রিয় সাইট ক্রিকইনফোর ধারাবিবরণীতে সাবেক ভারতীয় ড্যাশিং ওপেনার এবার লিখেছেন, ‘আমি এখনও বাংলাদেশকে অর্ডিনারিই (সাধারণ) বলব।’ ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে শেবাগ সেখানে আরও উল্লেখ করেন, ‘আমি টেস্টের বাংলাদেশকে এখনও অর্ডিনারি দল বলব। হয়তো তারা যে কোন স্থানেই জিততে পারে; কিন্তু এই জয়ের জন্য অনেকগুলো বিষয় তাদের পক্ষে থাকতে হয়। যেমন: টস, প্রতপক্ষের কোয়ালিটি, ভেন্যু, পিচ ইত্যাদি...। আমার মতে এখনও তারা একটি অর্ডিনারি দলই।’ সিলেটে জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে দুই ম্যাচ সিরিজে মাঠে নামার আগে ছয় টেস্ট ইনিংসে বাংলাদেশের দলীয় সংগ্রহ ছিল ১১০, ১২৩, ৪৩, ১৪৪, ১৪৯ ও ১৬৮। এবার মাহমুদুল্লাহ রিয়াদরা গুটিয়ে গেল ১৪৩ ও ১৬৯ রানে। অর্থাৎ সাদা পোশাকে টানা আট ইনিংসে দুই শ’ পেরোতে ব্যর্থ টাইগাররা। ২০১০ সালে বাংলাদেশ সফরের আগে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশকে ‘অর্ডিনারি দল’ বলে উল্লেখ করে শেবাগ বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশ একটি অর্ডিনারি দল, যারা ভারতের ২০ উইকেট নেয়ার সামর্থ্য রাখে না। তারা হয়তো ওয়ানডেতে চমক দেখাতে পারে, তবে সাদা পোশাকে কখনই নয়।’ এবার ঘরের মাটিতে জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের এভাবে ভেঙ্গে পড়া দেখে ক্রিকেট বিষয়ক জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ক্রিকইনফোর ধারাবিবরণীতে একই মন্তব্য করেন শেবাগ। যেখানে তিনি টেস্টের বাংলাদেশ পারিষ্কার ‘অর্ডিনারি’ বলে উল্লেখ করেন। টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার ১০ বছর পর ২০১০ সালে প্রথম বাংলাদেশ সফরের সেই দলে ভারতের হয়ে ওপেনিং করেছিলেন শেবাগ। দুই ম্যাচের সিরিজে সফরকারীদের কাছে ‘হোয়াইটওয়াশ’ হলেও ব্যাটিং এখনকার মতো এত জঘন্য ছিল না। দুই টেস্টের চার ইনিংসেই টাইগারদের স্কোর ছিল ২০০’র ওপরে, তারমধ্যে দুইবার তিন শতাধিক। চট্টগ্রামে প্রথম টেস্টে ২৪২ ও ৩০১, ঢাকায় দ্বিতীয় টেস্টে ২৩৩ ও ৩১২। অতিমাত্রায় ওয়ানডে-টি২০ খেলা, ঘরোয়া প্রথমশ্রেণীতে দুর্বল পিচ ও কন্ডিশনের কারণে দীর্ঘ ১৮ বছরেও টেস্টের বাংলাদেশ এখনও মানসম্পন্ন হয়ে উঠতে পারেনি। খারাপ শোনালেও শেবাগের কথা অনেকটাই সত্য। গত দেড় মৌসুমে ঘরের মাটিতে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সাফল্য এসেছিল একেবারে নিজেদের কন্ডিশনের ফয়দা নিয়ে। উপমহাদেশে স্পিনের বিপক্ষে দল দুটির চিরন্তন দুর্বলতা কাজে লাগিয়ে নায়ক হয়ে উঠেছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ-সাকিব আল হাসানরা। কেবল পিচ-কন্ডিশনই নয়, সফল হওয়া অধিকাংশ ম্যাচে টসের সাহায্যও পেয়েছিল বাংলাদেশ। সিলেটে কিন্তু সেটিও হয়নি।
×