ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করছে চীন

প্রকাশিত: ০৪:১১, ৭ নভেম্বর ২০১৮

নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করছে চীন

ইরানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা সোমবার থেকে বলবত হয়েছে। তবে চীন, ভারত ও জাপানসহ আটটি দেশ ইরান থেকে তেল আমদানি করতে পারবে। দেশগুলোকে সাময়িকভাবে ছাড় দেয়া হয়েছে বলে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও সোমবার জানিয়েছেন। তিনি তেহরানকে চাপে রাখতে পুনরায় প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। চীন বলেছে, তারা মার্কিন নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ইরানের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক অব্যাহত রাখবে। নিউইয়র্ক টাইমস ও এএফপি। যুক্তরাষ্ট্র যে আটটি দেশকে নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকার সুযোগ দিয়েছেÑ ভারত, ইতালি, গ্রিস, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান ও তুরস্ক। দেশগুলোকে সাময়িকভাবে ইরান থেকে তেল কেনার সুযোগ দেয়া হয়েছে। ইরান এবং বিশ্বের ছটি শক্তিশালী দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তি (জয়েন্ট কম্প্রিহেন্সিভ এ্যাকশন প্ল্যান বা জেসিপিএ) থেকে বেরিয়ে গিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। যেসব দেশকে নিষেধাজ্ঞার আওতা থেকে বাইরে রাখা হয়নি তারা ইরান থেকে তেল আমদানি করলে যুক্তরাষ্ট্র সেসব দেশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। পম্পেও শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নকে এই ছাড় দেয়া হবে না। ইরানের ওপর সর্বশেষ আরোপিত মার্কিন নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্য তেহরানের রফতানি এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আর্থিক লেনদেন বন্ধ করা। ট্রাম্প মে মাসে চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেয়ার পর ইরানের দৈনিক তেল রফতানি প্রায় এক মিলিয়ন ব্যারেল কমে গেছে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সোমবার নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, একতরফা নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং অন্য দেশের ওপর নিজের আইন চাপিয়ে দেয়াকে চীন সমর্থন করে না। আমরা মনে করি আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে ইরানের সঙ্গে আমাদের ব্যবসা করার বৈধ অধিকার আছে এবং একে সম্মান করা উচিত। চীন ইরানের সঙ্গে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা থেকে অব্যাহতি পেয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক আইনের কাঠামোর মধ্যে তেহরানের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে। সর্বশেষ নিষেধাজ্ঞার ফলে তেল রফতানি ও আন্তর্জাতিক বাজারে আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে ইরান ফের সমস্যার মুখে পড়েছে। মার্কিন চাপে অনেক দেশ বাধ্য হয়ে ইরানের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক কমাতে বা পুরোপুরি ত্যাগ করতে বাধ্য হচ্ছে। ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকে ইরানের তেল রফতানি প্রায় এক-তৃতীয়াংশ কমে গেছে। সোমবার থেকে ইরানের ৬০০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান বিপাকে পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে কংগ্রেসের মধ্যবর্তী নির্বাচনের ঠিক একদিন আগে ইরানের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা বলবত হওয়া বাড়তি রাজনৈতিক গুরুত্ব পেয়েছে। নির্বাচনী প্রচারে ট্রাম্প বিষয়টি পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে নিজের সাফল্য হিসেবে তুলে ধরার সুযোগ পেয়েছেন। নিষেধাজ্ঞা এড়ানোর উপায় হিসেবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন একটি বিশেষ আর্থিক লেনদেন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে যাচ্ছে, যাতে ইরানের সঙ্গে ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি মার্কিন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। এই প্রক্রিয়া ব্যাংকের মতো স্পেশাল পারপোজ ভিহাইকেল বা এসপিভির মাধ্যমে ইরান ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে লেনদেন করা সম্ভব হবে। ইরান ইউরোপের কোন দেশে তেল রফতানি করলে সেই দেশের কোন কোম্পানি এসপিভির মাধ্যমে দাম পরিশোধ করবে। ইরান সেই অর্থ ক্রেডিট হিসেবে ইইউভুক্ত দেশ থেকে এসপিভির মাধ্যমে পণ্য কিনতে পারবে।
×