ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকা আন্তর্জাতিক লোকসঙ্গীত উৎসব শুরু ১৫ নবেম্বর

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ৬ নভেম্বর ২০১৮

ঢাকা আন্তর্জাতিক লোকসঙ্গীত উৎসব শুরু ১৫ নবেম্বর

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশ-বিদেশের লোকগানের সুরে আবার আলোড়িত হবে শহর ঢাকা। আগামী ১৫ নবেম্বর থেকে বনানীর বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়ামে শুরু হচ্ছে ঢাকা আন্তর্জাতিক লোকসঙ্গীত উৎসব। বরাবরে মতো চতুর্থতম আসরটিও হবে তিন দিনের। এবারের উৎসবে স্বাগতিক বাংলাদেশসহ অংশ নেবে সাত দেশের ১৭৪ জন কণ্ঠ ও যন্ত্রসঙ্গীতশিল্পী। শেকড়ের গানের সঙ্গে থাকবে নৃত্য পরিবেশনা। দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত সঙ্গীতাসরটির অনলাইন নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে আজ মঙ্গলবার থেকে। প্রতিবছরের মতো এবারও দর্শকরা বিনা দর্শনীতে অনলাইন নিবন্ধনের মাধ্যমে উপভোগ করতে পারবেন আন্তর্জাতিক এই লোকসঙ্গীতানুষ্ঠান। আজ মঙ্গলবার থেকে বিকেল তিনটা থেকে নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়ে চলবে ১০ নবেম্বর পর্যন্ত। এজন্য শ্রোতাদের www.dhakainternationalfolkfest.com ওয়েবসাইটে গিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। এছাড়াও ংযড়যড়ু.পড়স/বাবহঃং এবং শুধুমাত্র গ্রামীণফোন গ্রাহকরা মাইজিপি এ্যাপের মাধ্যমেও নিবন্ধন করতে পারবেন। নিবন্ধনের জন্য পাসপোর্ট সাইজের ছবি এবং জাতীয় পরিচয়পত্র/ড্রাইভিং লাইসেন্স/পাসপোর্টের স্ক্যান কপি প্রয়োজন হবে। নিবন্ধনের পর ই-মেইলের মাধ্যমে শ্রোতারা পেয়ে যাবেন প্রবেশপত্র। উৎসবস্থলের প্রবেশপথে প্রতিদিনের প্রিন্টকৃত প্রবেশপত্র দেখিয়ে প্রবেশ করতে হবে। সান ফাউন্ডেশন আয়োজিত ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ফোক ফেস্টের মূল পৃষ্ঠপোষক মেরিল। সহযোগী পৃষ্ঠপোষক হিসেবে রয়েছে ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, গ্রামীণফোন ও রাঁধুনী। উৎসবের ব্যবস্থাপনা সহযোগী হিসেবে রয়েছে সান কমিউনিকেশন। সোমবার রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ সব তথ্য জানান সান ফাউন্ডেশন ও সান কমিউনিকেশনস লিমিটেডের চেয়ারম্যান অঞ্জন চৌধুরী। এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নন্দিত লোকসঙ্গীত শিল্পী ও সাংসদ মমতাজ বেগম, বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের, ঢাকা ব্যাংক লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান এবং গ্রামীণফোনের চীফ বিজনেস অফিসার মাহমুদ হোসেন। অঞ্জন চৌধুরী বলেন, মূলত দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের বাউল শিল্পীদের বিশ^ দরবারে তুলে ধরতেই এ উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। একইসঙ্গে এ আয়োজনের মাধ্যমে লোকসঙ্গীত শিল্পীদের সহায়তার পাশাপাশি তাদের গানের স্বত্ব¡ নিশ্চিত করাও অন্যতম উদ্দেশ্য। মমতাজ বেগম বলেন, এ উৎসবটি আমাদের প্রাণের উৎসবে পরিণত হয়েছে। বছরজুড়ে দর্শক-শ্রোতারা এ উৎসবের অপেক্ষায় থাকেন। নিজের শিল্পী পরিচয় দিয়ে তিনি বলেন, আজকে আমার যে অর্জন তার পুরোটুকু লোকসঙ্গীত শিল্পী হিসেবে। আমার শেকড়টা গাঁথা এই লোকসঙ্গীতে। কেউ যদি আমাকে বলে রাজনীতিবিদ ও বা লোকসঙ্গীত শিল্পীর মধ্যে যে কোন একটি পরিচয়কে ধারণ করতে, আমি শিল্পীর পরিচয়কেই বেছে নেব। চতুর্থতম উৎসবের আর্কষণ : আগামী ১৫ থেকে ১৭ নবেম্বর পর্যন্ত চলবে আন্তর্জাতিক লোকসঙ্গীত উৎসব। প্রতিদিন সন্ধ্যা ছয়টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত শ্রোতারা উপভোগ করবেন দেশ-বিদেশের শেকড়ের গান। লোকসঙ্গীত উৎসব চলবে। বাংলাদেশের শিল্পীদের মধ্যে এবারের আসরে অংশ নেবেন মমতাজ বেগম, বাউল আব্দুল হাই দেওয়ান, বাউল কবির শাহ, অর্ণব, নকশিকাঁথা, স্বরব্যাঞ্জো ও ভাবনা নৃত্য দল। ভারত থেকে অংশ নেবেন ওয়াদালি ব্রাদার্স, রাঘু দীক্ষিত ও সাত্যকি ব্যানার্জী। পাকিস্তান থেকে অংশ নেবেন শাফকাত আমানাত আলী, বাহ্রাইন থেকে লোকগানের দল মাজায, যুক্তরাষ্ট্র থেকে গ্র্যামি পুরস্কারজয়ী লোকসঙ্গীত দল লস টেক্সমেনিয়াক্স, পোল্যান্ড থেকে লোকগানের দল দিকান্দা এবং স্পেন থেকে অংশ নিচ্ছে লোকসঙ্গীত দল লাস মিগাস। কিংবদন্তি গণসঙ্গীত শিল্পী ভূপেন হাজারিকা স্মরণ ॥ সোমবার স্মরণ করা হলো উপমহাদেশের কিংবদন্তি গণসঙ্গীত শিল্পী ভূপেন হাজারিকাকে। শিল্পীর সপ্তম প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে এদিন সন্ধ্যায় এ স্মরণানুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে ‘আজ জীবন খুঁজে পাবি’ শীর্ষক আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে শিল্পীর স্মরণে এক মিনিটের নীরবতা পালন এবং মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্বালন করা হয়। এরপর অতিথিদের উত্তরীয় প্রদান করেন একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। এ সময় আয়োজনের সহযোগী সংগঠন ব্যতিক্রম মাসদো-এর পক্ষ থেকে একাডেমির মহাপরিচালকের হাতে ভূপেন হাজারিকার আত্মজীবনীসহ তাঁর লেখা ১৮টি বই ও ২টি প্রামাণ্যচিত্র তুলে দেয়া হয়। আলোচনা পর্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন ভূপেন হাজারিকার বোন বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী সুদক্ষিণা শর্মা, শিল্পীর আত্মজীবনী গ্রন্থের ওপর আলোচনা করেন আত্মজীবনী গ্রন্থের অনুলেখক পদ্মশ্রী সূর্যকান্ত হাজারিকা। এছাড়াও আলোচনায় অংশ নেন ড. সৌমেন ভারতীয়া ও ড. তিমির দে। সভাপতিত্ব করেন একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। ‘নকশিকাঁথা : বাংলাদেশের নন্দিত শিল্পের স্মারক’ ॥ লোকজ বাংলার অনন্য শিল্প নকশিকাঁথার ইতিহাসকে এক মলাটে তুলে এনেছেন গবেষক ও সংগ্রাহক মালেকা খান। নকশিকাঁথার পুঙ্খানুপুঙ্খ ইতিহাস নিয়ে লোক ও কারুশিল্প বিশেষজ্ঞ মালেকা খান লিখেছেন ‘নকশিকাঁথা : বাংলাদেশের নন্দিত শিল্পের স্মারক’ শীর্ষক সচিত্র গ্রন্থ। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের গবেষণা প্রকল্পের অংশ হিসেবে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় বইটি প্রকাশ করেছে পাক্ষিক অনন্যা। সোমবার বিকেলে বিশ^সাহিত্য কেন্দ্রে গ্রন্থটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়। প্রকাশনা উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। দৈনিক ইত্তেফাক ও পাক্ষিক অনন্যা সম্পাদক তাসমিমা হোসেনের সভাপতিত্বে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্পী হাশেম খান, সাবেক সচিব আক্তারী মমতাজ, জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক আব্দুল মান্নান ইলিয়াস প্রমুখ। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বইটির লেখক মালেকা খান। আলোচনা পর্ব শেষে সঙ্গীত পরিবেশন করেন লালন স¤্রাজ্ঞী খ্যাত শিল্পী ফরিদা পারভীন।
×