ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মার্কিন কংগ্রেসের মধ্যবর্তী নির্বাচন আজ

দুই প্রেসিডেন্টের লড়াই

প্রকাশিত: ০৪:২৪, ৬ নভেম্বর ২০১৮

দুই প্রেসিডেন্টের লড়াই

মঙ্গলবার মার্কিন কংগ্রেসের মধ্যবর্তী নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হচ্ছে। প্রচারাভিযানের শেষ মুহূর্তে বর্তমান ও সাবেক প্রেসিডেন্ট তুমুল বাগযুদ্ধে লিপ্ত হয়েছেন। বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার পূর্ববর্তী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার পাল্টাপাল্টি প্রচারাভিযান জমে উঠেছে। ট্রাম্প অর্থনীতি নিয়ে নিজের সাফল্য তুলে ধরার পাশাপাশি অভিবাসী ইস্যুতে কঠোর অবস্থান তুলে ধরেন। অন্যদিকে ওবামা নাম উল্লেখ না করে বলেন, তার উত্তরসূরি নিজেই এখন এক বড় হুমকি। এএফপি ও গার্ডিয়ান। প্রচারাভিযানের শেষ পর্যায়ে ওবামা ডেমোক্র্যাটদের পক্ষে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন। এই নির্বাচন কংগ্রেসে রিপাবলিকানদের নিয়ন্ত্রণকে ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা। মাত্র কয়েকদিন আগেই ফ্লোরিডায় এক গোঁড়া ট্রাম্প সমর্থক ওবামাসহ কজন ট্রাম্পবিরোধীর চিঠিতে বোমা পাঠানোর অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন। এছাড়া পেনসিলভানিয়ার পিটসবার্গের এক সিনাগগে বন্দুক হামলায় ১১ জন নিহত হয়েছেন। এই মুহূর্তে দেশ মূলত দুটি শিবিরে বিভক্ত। ট্রাম্পের সমালোচকরা বলছেন, তিনি এমন একটি পরিবেশ তৈরি করেছেন যেখানে হামলাকারী অবাধে তাদের কর্মকা- চালিয়ে যেতে পারছে। তবে ট্রাম্প বলেছেন, রিপাবলিকান দল এই মধ্যবর্তী নির্বাচনে ভাল অবস্থানে রয়েছে। প্রচারে তিনি নতুন কর্মসংস্থানের পরিসংখ্যান তুলে ধরে অর্থনৈতিক গতিশীলতার যুক্তি দেন। ট্রাম্প তার ভাষায় বিদেশী অপরাধী ও উগ্র সমাজবাদীদের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, এরা যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টায় লিপ্ত। প্রচারাভিযানের শেষ পর্যায়ে ট্রাম্প আর ওবামা প্রায় মুখোমুখি অবস্থানে চলে এসেছেন। প্রচারের লড়াই মূলত দুই প্রেসিডেন্টের লড়াইয়ে রূপ নিয়েছে। শুক্রবার ফ্লোরিডার জনসভায় জনগণের দৃষ্টি ওবামার দিকে নিবদ্ধ ছিল। ওবামা রবিবার প্রথমে শিকাগো এর পর ইন্ডিয়ানার গ্যারি ও তারপর জর্জিয়ার আটলান্টায় প্রচারাভিযান চালান। শিকাগোতে ডেমোক্র্যাট সিনেটর জো ডানেলিরর অবস্থান কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ। আটলান্টায় ওবামা স্ট্যাসি আব্রামসকে সমর্থন দেয়ার জন্য ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। আব্রামস প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী যিনি যুক্তরাষ্ট্রের কোন অঙ্গরাজ্যের গবর্নর হতে যাচ্ছেন। ওবামা বলেন, আমেরিকা আজ দুই শিবিরে বিভক্ত। তাদের একটা বিরাট অংশ প্রেসিডেন্টকে নিয়ে উদ্বেগে দিন কাটাচ্ছে। কারণ প্রেসিডেন্ট এমন এক ব্যক্তি যিনি মানুষের উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ দেখতে মোটেই আগ্রহী নন। পারস্পরিক ঘৃণা ও বিদ্বেষ থেকে বের হয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করার কোন আগ্রহ তার নেই। এদিকে ডেমোক্র্যাটদের কৃষ্ণাঙ্গ আব্রামসকে প্রার্থী করার সমালোচনা করে ট্রাম্প বলেন, আপনারা এর মধ্য দিয়ে আমেরিকাকে ভেনিজুয়েলা বাননোর চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, আব্রামস আপনাদের এই সুন্দর অঙ্গরাজ্যটিকে বিদেশী অপরাধীদের অভয়ারণ্যে পরিণত করবেন। জর্জিয়ার নিরীহ জনসাধারণকে তখন অপরাধী চক্রের দয়ায় বেঁচে থাকতে হবে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প ইতোমধ্যেই নিজের আচরণের মধ্য দিয়ে প্রমাণ করেছেন তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে যথপোযুক্ত নন। তিনি প্রায়ই জাতিকে বিভক্ত করার মতো বক্তব্য দিয়ে থাকেন। গণমাধ্যমকে তিনি যখন ‘জনগণের শত্রু’ আখ্যায়িত করেন তখন সমর্থকরা গণমাধ্যমের ওপর হামলা চালাতে উৎসাহ বোধ করেন। মধ্যবর্তী নির্বাচনকে আগাম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পূর্বাভাস হিসেবে ধরা যেতে পারে। এবার প্রতিনিধি পরিষদ ডেমোক্র্যাটদের নিয়ন্ত্রণে গেলে ট্রাম্প বেকায়দায় পড়তে পারেন। পারিবারিক ব্যবসা, আয়কর বিবরণী, রাশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ বিষয়গুলো নিয়ে নতুন করে তদন্ত শুরু হবে। ট্রাম্প যদি সিনেটে নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে পারেন তবে সেই চাপ কিছুটা কম পড়বে। তবে এবারের নির্বাচনে সিনেটও রিপাবলিকানদের হাত থেকে বেরিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
×