ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

অলিম্পিক বাছাইয়ে ভাল খেলার প্রত্যাশা সাবিনাদের

প্রকাশিত: ০৪:৪৮, ৫ নভেম্বর ২০১৮

 অলিম্পিক বাছাইয়ে ভাল খেলার প্রত্যাশা সাবিনাদের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশের নারী ফুটবলারদের সামনে আরেকটি চ্যালেঞ্জ। এবার আরও কঠিন পরীক্ষা। অলিম্পিক গেমস ফুটবলের বাছাই। ২০২০ সালে টোকিও অলিম্পিকে মেয়েদের ফুটবলে এশিয়ান অঞ্চলের বাছাইয়ের প্রথম রাউন্ডে খেলতে আজ মিয়ানমারের উদ্দেশে দেশ ছাড়ছে বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দল। বাছাইপর্বে বাংলাদেশ খেলবে ‘সি’ গ্রুপে। বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও স্বাগতিক মিয়ানমারকে নিয়ে এই গ্রুপের খেলা শুরু হবে ৮ নবেম্বর। ওইদিন স্বাগতিকদের বিরুদ্ধে ম্যাচ দিয়ে মিশন শুরু করবেন সাবিনা-মৌসুমী-মারিয়ারা। অবশ্য গতকাল ‘এ’ গ্রুপের খেলা দিয়ে বাছাইপর্বের যজ্ঞ শুরু হয়ে গেছে। কঠিন চ্যালেঞ্জ সামনে রেখে রবিবার বাফুফে ভবনে সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের লক্ষ্য ও প্রত্যাশার কথা শুনিয়েছেন কোচ ও অধিনায়ক। প্রতিপক্ষদের সমীহ করে ভাল খেলার প্রত্যয়ের কথা শুনিয়েছেন অধিনায়ক সাবিনা খাতুন ও কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন। কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমরা অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য যাচ্ছি। মেয়েরা সবাই প্রস্তুত। ভারত ও নেপালের বিরুদ্ধে অনেক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা আছে আমাদের মেয়েদের। মিয়ানমার শুধু আমাদের কাছে নতুন। আশাকরি সমস্যা হবে না। ছোটন আরও বলেন, এটা মেয়েদের জন্য চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ নিতে হবে। সাবিনা খাতুন ছাড়া আমাদের সিনিয়র খেলোয়াড় নেই। তারপরও আমরা ভাল কিছুর লক্ষ্যেই মিয়ানমার যাচ্ছি। লাল-সবুজের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন বলেন, আমাদের লক্ষ্য ভাল খেলা। সবাই নিজের সেরাটা দিতে প্রস্তুত। নেপাল ও ভারতের সঙ্গে আমাদের আগে খেলার অভিজ্ঞতা আছে। আশা করছি ওদের হারাতে পারব। আর মিয়ানমার সম্পর্কে আমরা তেমন কিছু জানি না। তবে চেষ্টা থাকবে ভাল খেলার। সবমিলিয়ে আমরা ভাল খেলার জন্যই যাচ্ছি। দীর্ঘ সময় খেলার বাইরে থাকা প্রসঙ্গে সাবিনা বলেন, আমি গত দেড় বছর না খেললেও বয়সভিত্তিক দলগুলোর সঙ্গেই ছিলাম। তাদের সঙ্গে নিজেকে সবসময় প্রস্তুত রেখেছি। আশা করছি খুব একটা সমস্যা হবে না। অলিম্পিক বাছাই খেলতে যাওয়ার আগে প্রস্তুতিটা প্রত্যাশা মতো হয়নি বাংলার মেয়েদের। দিনকয়েক আগে তাজিকিস্তান থেকে ফিরে যেটুকু অনুশীলন হয়েছে তাতে মন ভরেনি স্বয়ং কোচের। দেশ ছাড়ার আগে মাত্র তিনদিন অনুশীলন করেছে দল। এশিয়ার ৪৭ দেশের মধ্যে ২৫ দেশ অংশ নিচ্ছে বাছাইয়ে। এর মধ্যে প্রথম রাউন্ডে অংশ নিচ্ছে ১৮ দেশ ৪ গ্রুপে ভাগ হয়ে। ফিফা মহিলা র‌্যাঙ্কিং অনুযায়ী ভিয়েতনাম ও উজবেকিস্তান খেলবে সরাসরি দ্বিতীয় রাউন্ডে। র‌্যাঙ্কিংয়ে আরও ওপরের ৫ দেশ অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, উত্তর কোরিয়া, চীন ও থাইল্যান্ড সরাসরি খেলবে তৃতীয় রাউন্ডে। প্রথমপর্বের প্রতিটি গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন দলে উঠে যাবে দ্বিতীয় রাউন্ডে। পাশাপাশি চার গ্রুপের সেরা দুই রানার্সআপ দলও একই রাউন্ডের টিকেট পাবে। এই রাউন্ডে ১২ দল খেলবে ভিয়েতনাম ও উজবেকিস্তানের সঙ্গে। তিন গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলার পর গ্রুপ চ্যাম্পিয়নরা যোগ দেবে তৃতীয় রাউন্ডে অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, উত্তর কোরিয়া, চীন ও থাইল্যান্ডের সঙ্গে। অলিম্পিক গেমসে পুরুষ ফুটবল দল অনুর্ধ-২৩ হলেও মেয়েদের প্রতিযোগিতা জাতীয় দলের। চ্যালেঞ্জটা এ জন্যই বেশি বাংলাদেশের। কারণ জাতীয় দল তৈরির মতো সিনিয়র খেলোয়াড় নেই বাংলাদেশে। একদল মেয়ে দিয়েই বিভিন্ন বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টে খেলাচ্ছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। যে কারণে সিনিয়র টুর্নামেন্টে খেলতে গিয়ে অসম প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে মেয়েদের। বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টে দক্ষিণ এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের দলগুলোর জালে গোল উৎসব করলেও বাংলাদেশের মেয়েরা বাস্তবতা বুঝতে পারছেন বড় টুর্নামেন্টে গিয়ে। যার প্রমাণ মিলেছে তাজিকিস্তানে। এএফসির এই আসরে দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে ৭-০ আর চাইনিজ তাইপের কাছে ২-০ গোলে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে আগেই বিদায় নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের। শেষ ম্যাচে স্বাগতিক তাজিকিস্তানকে ৫-১ গোলে হারিয়ে সান্ত¡নার জয় নিয়ে ঘরে ফিরেছে বাংলার মেয়েরা। এ জয়ের তৃপ্তি নিয়েই মিয়ানমারে ভাল কিছু করার আশা বাংলাদেশের মেয়েদের।
×