ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

জীবনবোধের ভাবনাতাড়িত নাটক ‘চার্লি’ মঞ্চস্থ

প্রকাশিত: ০৪:৪২, ৫ নভেম্বর ২০১৮

জীবনবোধের ভাবনাতাড়িত নাটক ‘চার্লি’ মঞ্চস্থ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে মঞ্চে আসে নাট্যধারার নতুন নাটক ‘চার্লি’। নাট্যদলটির ২৫তম প্রযোজনাটিতে উঠে এসেছে জীবনবোধের কথা। অপূর্ণতার মাঝে খোঁজা হয়েছে জীবনের মানে। এই মানের পেছনেই ছুটে চলেছেন চার্লি। চলচ্চিত্রে যে চার্লি চ্যাপলিনকে দেখে আমরা অট্টহাসিতে ফেটে পড়ি, তার রয়েছে এক গভীর জীবনদর্শন। সেই দর্শনকে উপজীব্য করে নির্মিত নাটক চার্লি। রচনার পাশাপাশি প্রযোজনাটির নির্দেশনা দিয়েছেন লিটু সাখাওয়াত। রবিবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে নাটকটি মঞ্চস্থ হয়। প্রযোজনাটি প্রসঙ্গে লিটু সাখাওয়াত বলেন, আমাদের চার্লি আসলে এক অপূর্ণতা, যার পূর্ণতায় জীবনের মানে খুঁজে পাওয়া যাবে। আট আনার অর্থনৈতিক মুক্তি, আট আনার সাংস্কৃতিক মুক্তি, আট আনার সাম্প্রদায়িক মুক্তি আর আট আনার মানবিক মুক্তি। মোট দুই টাকা। দুই টাকার প্রাপ্তিতে জীবনের মানে মিলবে। তাই তো পুরো নাটকজুড়ে দুই টাকার সন্ধানে সদা ব্যস্ত থাকে চার্লি। চার্লি নাটকে জীবনের মানে খোঁজার অভিযানে যোগ দেন সক্রেটিস, লালন ও রবীন্দ্রনাথের মতো প্রখ্যাত ব্যক্তিরা। চার্লির দর্শনের সঙ্গে মিল রেখে নাটকে আগমন ঘটে একজন পতিতার। জীবনের ঘাত-প্রতিঘাতে জর্জরিত সেই পতিতার মুখ থেকে শোনা যায়, ‘চার্লি আমগো শেখায় হাজার কষ্টের মাঝে কেমন কইরা সুখে থাকতে হয়।’ ঘটনা পরম্পরায় সেই দর্শনকে তিনজন মনীষী নিয়ে যান আরেক সিঁড়ি ওপরে। এক পর্যায়ে চার্লি অস্থির হয়ে পড়ে। তার মস্তিষ্কে ঘুরঘুর করে সক্রেটিস, লালন ও রবীন্দ্রনাথ। বাঁকে বাঁকে তারা এসে দাঁড়ায় চার্লির সামনে। এভাবেই জীবনদর্শন ও সামাজিক বাস্তবতাকে কেন্দ্র করে এগিয়ে যায় ঘটনাপ্রবাহ। জীবনের পথে সব ঘাত-প্রতিঘাতে হাসিমুখে বেঁচে থাকার মন্ত্র ছড়ায় চার্লি নামের চরিত্রটি। যে জীবন সুন্দর, যে জীবন নান্দনিক, অপার সম্ভাবনাময়, নিঃস্বার্থ, যে জীবন প্রেমময় ও ভালবাসায় পরিপূর্ণ সেই জীবনের সাধনা করে। প্রযোজনাটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছে লিটুু সাখাওয়াত, দীপান্বিতা ইতি, নাসির উদ্দিন ভুঁইয়া, সব্যসাচী চঞ্চল, কামাল হোসেন, রফিকুল ইসলাম, গাজী রহিসুল ইসলাম, হাফসা আক্তার, রবিন, মিরাজ, নাঈম, রুবেল, রাফসান, ইমরান, ছন্দা রিনা গীতিসহ দলের অন্য শিল্পীরা। ‘সংস্কৃতির বন্ধনই হোক বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের মূল ভিত্তি’ ॥ রবিবার জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘সংস্কৃতির বন্ধনই হোক বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের মূল ভিত্তি’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এই সেমিনারে বক্তারা বলেন, সংস্কৃতিই সমাজ ও জাতির মধ্যে সমৃদ্ধি এবং সম্প্রীতির সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করে। সংস্কৃতি বিনিময়ের কারণেই যুদ্ধ বন্ধ হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রচিত হয়েছে পারস্পরিক বন্ধুত্বের সেতুবন্ধন। প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারত-বাংলাদেশের নিবিড় সম্পর্ক দুই দেশের কোটি কোটি মানুষের সুখ ও শান্তিপূর্ণ বসবাসের জন্য অপরিহার্য। যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদ ও ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশনের ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র (আইজিসিসি)। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। মুখ্য আলোচক ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান, সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট সানজিদা খানম ও এ্যাডভোকেট নূরজাহান মুক্তা এবং ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পরিচালক নীপা চৌধুরী। প্রতিদিনের সংবাদের প্রকাশক ও বিদ্যুত, জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটির সভাপতি তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রাবন্ধিক ফনিন্দ্র সরকার। আ.ক.ম মোজাম্মেল হক বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক অনেক গভীর ও আত্মীক। যে চেতনা নিয়ে আমরা দেশ স্বাধীন করেছি, সেই চেতনা আমরা লালন করতে পারছি। এবং অসাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি প্রতিবেশী দেশ ভারতের সহযোগিতা কারণে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের উৎপত্তি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভারতের সঙ্গে সাংস্কৃতিক বন্ধন তৈরি হয়েছে। বর্তমান সময়ে সংস্কৃতির পাশাপাশি অর্থনৈতিক গভীর বন্ধনও তৈরি হয়েছে। ভারতের সঙ্গে আমাদের যে ঐক্য বন্ধন তৈরি হয়েছে, তা আত্মা ও রক্তের সম্পর্কে তৈরি হয়েছে। এটা যদি অব্যাহত রাখতে চাই তাহলে ভারতকেও আমাদের কিছু দিতে হবে। মূল প্রবন্ধে ফনিন্দ্র সরকার বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের স্থিতিশীলতায় সংস্কৃতির গতিকে কাজে লাগাতে হবে। পারস্পরিক ভাব বিনিময়ের মধ্য দিয়ে যুক্ত হবে বহুমাত্রিক সংস্কৃতি এবং বিশ্বজনীন সচেতনতা, সমাজে আসবে সংহতি ও মৈত্রী। দূর হবে অশান্তি, পরাজিত হবে অশুভ শক্তি। তাই সংস্কৃতির ভিত্তিকে মজবুত করতে হবে। সংস্কৃতিই যে সম্পর্কের মূল ভিত্তি এ সত্যকে ধারণ করেই সবাইকে কাজ করতে হবে।
×