ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

তফসিল ঘোষণাই শেষ কথা নয়॥ মওদুদ

প্রকাশিত: ০৪:৩৯, ৫ নভেম্বর ২০১৮

তফসিল ঘোষণাই শেষ কথা নয়॥ মওদুদ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণাই শেষ কথা নয়। তফসিল যে আবার ঘোষণা করা যাবে না তেমন নয়। নির্বাচন কমিশন বলেছে, ৮ নবেম্বর তফসিল ঘোষণা করা হবে, এখনও তো করা হয়নি। করা হলেও এটা শেষ কথা নয়। রবিবার রাতে রাজধানীর মতিঝিলে নিজ চেম্বারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও আইনজীবীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। সঙ্কট নিরসনের চাবিকাঠি প্রধানমন্ত্রীর হাতে ॥ রিজভী এদিকে দেশের চলমান সঙ্কট নিরসনের চাবিকাঠি প্রধানমন্ত্রীর হাতে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। রবিবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ করে রিজভী বলেন, চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তফসিল ঘোষণা থেকে বিরত থাকুন। ‘একদিকে আলোচনা অন্যদিকে আন্দোলন, এটি আমার বোধগম্য নয়’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া এমন বক্তব্যের জবাবে রিজভী বলেন, এখনও তো সেই অর্থে জোরালো আন্দোলন শুরু হয়নি। আপনি সংলাপের মাধ্যমে সঙ্কট নিরসন করতে পারলে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো আন্দোলনের পথে যাবে না। তা না হলে আন্দোলন করেই দাবি আদায় করা হবে। রিজভী বলেন, আলোচনার আহ্বান তো জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে অব্যাহত আছে। তবে আপনাকে কালের যাত্রার ধ্বনি শুনতে হবে। কালের যাত্রার ধ্বনি হচ্ছে জনগণের দাবিÑ যা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সাত দফা দাবির মাধ্যমে উত্থাপন করেছে। আপনি সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নেন তাহলে তো কোন সঙ্কট থাকার কথা নয়। রিজভী বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যে সংলাপ চলছে, সেই সংলাপে এখনও সঙ্কট নিরসনের বিষয়টি সুরাহা হয়নি। কিন্তু তার আগেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তোড়জোড় করছে নির্বাচন কমিশন, যা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এমনকি নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের মতামতকেও অগ্রাহ্য করা হচ্ছে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে তফসিল পেছানোর আবেদন করা হলেও ইসির সচিব তা অস্বীকার করে বলেছেন তারা কোন চিঠি পাননি। এ সপ্তাহের মধ্যেই তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান। আমি নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে বলতে চাই নিজ আইনসঙ্গত ক্ষমতাবলে জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিন। রিজভী অভিযোগ করেন, সারা দেশে নির্বাচনী কর্মকর্তা অর্থাৎ প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার বাছাই করছে পুলিশ। বিভিন্ন থানা নির্বাচন কর্মকর্তারা নির্বাচনী কর্মকর্তাদের তালিকা তৈরি করে পুলিশের হাতে তুলে দিচ্ছে। পুলিশ তালিকা ধরে ধরে কারা সরকারদলীয় সমর্থক তাদের নাম বাছাই করছে নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে। এমনকি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে যাচাই করছে, ফোন করে জিজ্ঞাসা করছে আপনি কোন রাজনৈতিক দলের সদস্য। যদি কোন শিক্ষক বিএনপি সমর্থক হয়ে থাকে তাকে বলা হচ্ছে আপনার নির্বাচনের দায়িত্ব পালনের দরকার নেই। জনগণ এমন কর্মকা-কে ভোট কারচুপির পূর্ব প্রস্তুতি বলেই মনে করছে। সরকারের হুকুমেই এমন নজিরবিহীন কর্মকা- চলছে বলে জনগণ বিশ্বাস করে। রুহুল কবির রিজভী বলেন, জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সারা দেশে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা করা হচ্ছে। মামলা দেয়ার পর এখন দেশজুড়ে গণগ্রেফতারের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে পুলিশ। গণগ্রেফতারের সঙ্গে চলছে রমরমা অর্থ আদায় বাণিজ্য। পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মী ও সমর্থকদের আটক করে অথবা মামলায় নাম জড়িয়ে গ্রেফতারের হুমকি দিয়ে অর্থ আদায়ের ঘৃণ্য পথ বেছে নিয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, সহ-দফতর সম্পাদক মুনির হোসেন, দলের নেতা সামসুল আলম তোফা প্রমুখ।
×