ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সন্দ্বীপে এক সপ্তাহের ব্যবধানে ৩০ ভারি অস্ত্র উদ্ধার

প্রকাশিত: ০৪:২৩, ৫ নভেম্বর ২০১৮

সন্দ্বীপে এক সপ্তাহের ব্যবধানে ৩০ ভারি  অস্ত্র উদ্ধার

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ মাত্র এক সপ্তাহে দু’দুবার সন্দ্বীপে অস্ত্রের সন্ধান ও উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে। উদ্ধার হয়েছে ৩০টি ভারি অস্ত্র ও ৩শ’টি অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম। ফলে দ্বীপবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। কারণ সন্দ্বীপের ১৫টি ইউনিয়নের প্রত্যেকটি বাড়িতেই প্রবাসী রয়েছে। আবার উপজেলা প্রশাসনের তথ্যানুযায়ী ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার সময় অনেক ভোটারকে প্রবাসে থাকার কারণে পাওয়া যায় না এমন অভিযোগও রয়েছে। এদিকে, মাত্র এক সপ্তাহের এক সন্ত্রাসীর অস্ত্র কারখানা আরেক তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসীর কাছ থেকে মজুদ রাখা ভারি অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় দ্বীপবাসী অনেকটা আতঙ্কেই দিনাতিপাত করছেন। তবে ছোট্ট এই পরিসরেও অস্ত্রের কারখানা পুলিশের সন্ধানে বেরিয়ে আসায় আরও অস্ত্র উদ্ধারের সম্ভাবনা রয়েছে এমন বক্তব্য সচেতন নাগরিকদের। অভিযোগ রয়েছে, অন্ধকারকে পুঁজি করেই অপরাধীরা ভারি অস্ত্র বহনসহ অস্ত্রের কারখানা গড়ে তুলেছে। এ ধরনের কারখানায় পরিবারের সদস্যরাই কাজ করছে এমন ধারণা পুলিশের। সম্প্রতি ধরা পড়া ও অস্ত্র কারখানায় অভিযানের ঘটনার পর এসব তথ্য পেয়েছে পুলিশ। অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের ভয়ে অনেক প্রবাসীর পরিবার সন্দ্বীপে বসতি ছেড়ে চট্টগ্রাম শহরে থাকছেন। চট্টগ্রাম থেকে সম্পূর্ণ আলাদা জনবসতি গড়ে উঠা সন্দ্বীপে দিনের বেলায় স্বাভাবিক হলেও রাতের বেলায় ঘুটঘুটে অন্ধকার। জেনারেটরের মাধ্যমে মাত্র কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুত বিতরণ করা হয় প্রতিদিন সন্ধ্যার পর। তবে অল্প কিছুদিনের মধ্যে বাংলাদেশ বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রাম থেকে বিদ্যুত সরবরাহের প্রকল্প শেষ করবে। এক্ষেত্রে প্রথম দফায় ১০ হাজার গ্রাহককে বিদ্যুত সংযোগ করা হবে। জানা গেছে, শুক্রবার দুপুরে সন্দ্বীপ থানার তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী ও অবৈধ অস্ত্রধারী জাহিদ সরওয়ার প্রকাশ শিমুলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পেশায় সে ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বার হলেও থানার খাতায় সে অপরাধী। তালিকাভুক্ত এ সন্ত্রাসীকে দীর্ঘদিন ধরে পুলিশ হন্যে হয়ে খুঁজছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মগধারা ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ডের প্যালিশ্যার বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সে এবং তার সঙ্গীয়রা গুলি করতে করতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছুঁড়ে। পুলিশ ও সন্ত্রাসীদের মধ্যে প্রায় ১ ঘণ্টাব্যাপী গুলি বিনিময় হয়। এই ঘটনায় আসামিরা প্রায় শতাধিক রাউন্ড এবং পুলিশ ২৩ রাউন্ড কার্তুজ ব্যবহার করে। একপর্যায়ে আসামি পক্ষের গুলি শেষ হয়ে গেলে আসামি জাহিদ সরওয়ার প্রকাশ শিমুল মেম্বারের বসত ঘরে তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ। সন্ত্রাসী জাহিদ সরওয়ার প্রকাশ শিমুল মেম্বারের বাড়িতে তল্লাশি করে ১টি দোনালা বন্দুক, ২টি একনালা বন্দুক, ২টি এলজি, ১৯ রাউন্ড কার্তুজ, ২ রাউন্ড চায়না রাইফেলের গুলি, ৮টি ছোরা এবং ১টি রামদা উদ্ধার করে। এছাড়া ঘটনাস্থল হতে ৮টি কার্তুজের খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। অবৈধ অস্ত্রশস্ত্র নিজের কাছে রাখা এবং পুলিশ আক্রমণের ঘটনায় সন্দ্বীপ থানায় ২টি মামলা দায়ের হয়েছে। এদিকে, গত ২৫ অক্টোবর সন্দ্বীপ থানার তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী ও অবৈধ অস্ত্রধারী মোঃ ইউসুফ প্রকাশ কালা মনিরের বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে।
×