ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করলে ফের কর্মসূচী ॥ যুক্তরাষ্ট্রকে উত্তর কোরিয়া

পরমাণু অস্ত্র তৈরির হুমকি

প্রকাশিত: ০৩:৪৮, ৫ নভেম্বর ২০১৮

পরমাণু অস্ত্র তৈরির হুমকি

উত্তর কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা না হলে পরমাণু অস্ত্র তৈরির দিকে তারা আবার দৃষ্টি দেবে। পরমাণু অস্ত্র তৈরির রাষ্ট্রীয় নীতি পুনরায় গ্রহণ করার বিষয়টি তারা ‘গুরুত্বের’ সঙ্গে বিবেচনা করছে বলে জানিয়েছে। এএফপি। পরমাণু অস্ত্র তৈরির রাষ্ট্রীয় নীতি উত্তর কোরিয়ায় ‘বাইউংজিন’ নামে পরিচিত। গত কয়েক বছর ধরে পিয়ংইয়ং নীতিটি অনুসরণ করেছে। এ বছর এপ্রিল থেকে কোরিয়া উপদ্বীপে শান্তির পরিবেশ তৈরি হয়েছে। কিম জং উন স্পষ্ট ঘোষণা দিয়ে বলেছিলেন, তার দেশ পরমাণু তৈরির চেষ্টা সম্পূর্ণ ত্যাগ করে ‘সমাজবাদী অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের ’ দিকে মনোযোগ দেবে। শুক্রবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র নীতি না পাল্টালে পিয়ংইয়ং পুরনো নীতিটি আবার বহাল করতে পারে।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাইউংজিন শব্দটি ফের খুবই গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে দেখা হচ্ছে। উত্তর কোরিয়ার বার্তা সংস্থা কেসিএনএ বিবৃতিটি প্রকাশ করে। জুনে সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ বিবৃতিতে সই করেছিলেন। ওই পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ বিবৃতিটি বেশ অস্পষ্ট ভাষায় লেখা ছিল। সিঙ্গাপুর বৈঠকের পর এ বিষয়ে সামান্যই অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। পিয়ংইয়ংয়ের বিরুদ্ধে ওয়াশিংটন অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞাগুলো এখন বজায় রেখেছে। ওয়াশিংটনের দাবি যতক্ষণ না এটি প্রমাণিত হচ্ছে উত্তর কোরিয়া পুরোপুরি নিরস্ত্রীকরণ করেছে ততক্ষণ নিষেধাজ্ঞাগুলো শিথিল বা উঠিয়ে নেয়া হবে না। পিয়ংইয়ংয়ের বক্তব্য, ওয়াশিংটন গ্যাংস্টারের মতো আচরণ করছে। দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ইনস্টিটিউট ফর আমেরিকান স্টাডিজের পরিচালক মনে করেন, পিয়ংইয়ং ওয়াশিংটনের আচরণে ক্রমাগত অসহিষ্ণু হয়ে উঠছে। গত মাসে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এ বিষয়ে এক হাজার ৭শ’ শব্দের একটি প্রতিবেদনে বলা হয় যুক্তরাষ্ট্র ‘বিল গেম’ খেলছে। পিয়ংইয়ংয়ের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে নিষেধ করে ট্রাম্পের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছিল। পরমাণু অস্ত্র সজ্জিত উত্তর কোরিয়ার প্রতিবেশী দক্ষিণ কোরিয়ায় বর্তমানে ২৮ হাজার ৫শ’ মার্কিন সৈন্য মোতায়েন আছে। তা সত্ত্বেও ওয়াশিংটন ও সিউলের সম্পর্কে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইন উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সম্পর্কে উন্নয়নে আগ্রহী। তিনি চলতি বছর একাধিকবার কিম উনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। উত্তর কোরিয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের চাপ বহাল থাকা অবস্থাতেই মুন দেশটির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ান। শুক্রবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও ফক্স নিউজকে দেয়া সাক্ষাতকারে পুনরায় বলেন যে, সিঙ্গাপুর সমঝোতা অনুযায়ী উত্তর কোরিয়া পুরোপুরি নিরস্ত্রীকরণ না করা পর্যন্ত দেশটির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হবে না। আগামী সপ্তাহে উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে তিনি জানান। ২০১৬ সালের মে মাসে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য প্রচারাভিযান চালানোর সময় ট্রাম্প বলেছিলেন তিনি প্রেসিডেন্ট হলে কিম জং উনের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। এমনকি গত বছর যখন দুই দেশের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ একে অন্যের বিরুদ্ধে বাগযুদ্ধে লিপ্ত তখনও তিনি সরাসরি বৈঠকে বসার বিকল্পটি হাতছাড়া করেননি।
×