ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ছাত্রলীগের ব্যানারে চবিতে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটাতে তৎপর শিবির!

প্রকাশিত: ০৬:২৩, ৪ নভেম্বর ২০১৮

ছাত্রলীগের ব্যানারে চবিতে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটাতে তৎপর শিবির!

চট্টগ্রাম অফিস/বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতা ॥ দীর্ঘদিন নিষ্ক্রিয় ও ঘাপটি মেরে থাকার পর মৌলবাদী শিবিরচক্র চবি ক্যাম্পাসকে আবার অস্থিতিশীল করে তোলার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে বলে প্রতীয়মান। মূলত বিবদমান ছাত্রলীগের একটি গ্রুপের সঙ্গে হাত মিলিয়ে শিবিরচক্র গত বৃহস্পতিবার রাতে অস্ত্রসাজে সজ্জিত হয়ে অপর একটি গ্রুপের ওপর হামলে পড়ার ঘটনা ঘটেছে বলে ক্যাম্পাস সূত্র নিশ্চিত করেছেন। এ ঘটনা নিয়ে শুক্রবার রাতে প্রশাসনের সঙ্গে দুই গ্রুপের বৈঠকে কোন সুফল আসেনি। জানা গেছে, এক গ্রুপ আরেক গ্রুপের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করার উদ্যোগ নিয়েছে। এ অবস্থায় প্রশাসন ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন অব্যাহত রেখেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণার পক্ষে নয়। বরং পরিস্থিতি সামলে রাখতে যা যা প্রয়োজনীয় সে ব্যবস্থাই করে যাবে। এদিকে, শারদীয় দুর্গাপূজা, শরৎকালীন ছুটি এবং ভর্তি পরীক্ষা শেষে ১৬ দিন বন্ধ থাকার পর গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয় খুলেছে। এ সময় থেকে শাটলট্রেনও পূর্বনির্ধারিত সময়সূচী অনুযায়ী চলছে। ওইদিন রাতেই ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করে এ্যাকাডেমিক শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার এস এম আকবর হোছাইন জানিয়েছেন, দুর্গাপূজা, শরৎকালীন ছুটি ও ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে ১৬ দিন বন্ধ থাকার পর বিশ্ববিদ্যালয় বৃহস্পতিবার খোলার পরই এ ঘটনা। ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের পর শুক্রবার বিকেল থেকে ফের উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। যে কোন সময় সংঘর্ষ হতে পারে এমন আশঙ্কায় ক্যাম্পাসে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। ক্যাম্পাস সূত্র জানায়, বিবাদমান দুটি পক্ষের মধ্যে একটি আওয়ামী লীগ নেতা ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী বলে চিহ্নিত। শেষ খবর পর্যন্ত মেয়র নাছিরের অনুসারীরা শাহ জালাল হল ও নওফেলের অনুসারীরা শাহ আমানত হলকে কেন্দ্র করে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অবস্থান নিয়ে আছে বলে ক্যাম্পাস সূত্র জানিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মোঃ আক্তারুজ্জামান জানিয়েছেন, পূর্ব শত্রুতার জের হিসেবে ছাত্রলীগের ব্যানারে দুটি পক্ষ বৃহস্পতিবার রাতে সংঘর্ষে জড়ায়। শুক্রবার বিকেলে ফের দুই পক্ষ দুই হলে অবস্থান নেয়। যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমরা শক্ত অবস্থানে আছি। এদিকে, ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে, ছাত্রলীগের একটি গ্রুপের সঙ্গে শিবিরের ক্যাডাররা হাত মিলিয়েছে। এরা এখন ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করে ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করার অপতৎপরতায় লিপ্ত। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইতোমধ্যে দু’গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমনে তারা চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। এরপরও যদি অনাকাক্সিক্ষত কোন ঘটনা ঘটায় তাহলে দায়ীদের চিহ্নিত করে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। ক্যাম্পাস সূত্র আরও জানিয়েছে, আগামী সংসদ নির্বাচন যেখানে আসন্ন এবং সারাদেশের জনগণ এখন নির্বাচনমুখী সেখানে হঠাৎ করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করে তোলার নেপথ্যে সরকার বিরোধী চক্রের ইন্ধন যে রয়েছে তাতে কোন সন্দেহ নেই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও বিষয়টি আঁচ করতে পারছে। এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ নেতা নাছির ও নওফেল গ্রুপ নামটি ব্যবহার করে সরকারের ভাবমূর্তিকেই নষ্ট করছে বলে প্রতীয়মান। ভিসি প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী শনিবার সন্ধ্যায় জনকণ্ঠকে জানান, অনাকাক্সিক্ষত যে কোন ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণার যে অপতৎপরতা চলছে তা কোনভাবে সফল হতে দেয়া হবে না। যে কারণে ক্যাম্পাসজুড়ে পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। কারা এ ঘটনায় জড়িত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অপতৎপরতায় যারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, ক্যাম্পাসে যে কোন মুহূর্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে। মৌলবাদী শিবিরগোষ্ঠীর কিছু ক্যাডার ছাত্রলীগের ছত্রছায়ায় রয়েছে। এরা সুবিধাবাদী অর্থাৎ ছাত্রলীগের জন্য হাইব্রিড হিসেবে চিহ্নিত।
×