ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিএসএমএমইউয়ে স্টেম সেল থেরাপি চালুর উদ্যোগ

হার্ট ফেইলিওর রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে

প্রকাশিত: ০৬:২৩, ৪ নভেম্বর ২০১৮

হার্ট ফেইলিওর রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ হার্ট ফেইলিউর প্রতিরোধে গণসচেতনতা গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ কনক কান্তি বড়ুয়া। তিনি বলেন, হার্ট ফেইলিউর রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েই চলছে। প্রতি বছর ১ লাখ মানুষের ৩৭০ জন মারা যায় অসংক্রামক রোগে। এর মধ্যে ১৭২ জন মারা যায় শুধুমাত্র হৃদরোগে। তাদের অধিকাংশের বয়স ৩০ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে। বর্তমানে হৃদরোগ একটি গ্লোবাল সমস্যা হিসেবে পরিচিত। এ সমস্যা সমাধানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে কার্ডিওলজি বিভাগে ডিভিশন অব হার্ট ফেইলিউর, রিহ্যাবিলিটেশন এ্যান্ড প্রিভেন্টিভ কার্ডিওলজির মাধ্যমে স্টেম সেল থেরাপি চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শনিবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বি ব্লকে শহীদ ডাঃ মিলন হলে হার্ট ফেইলিউর বিষয়ে প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্ডিওলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডাঃ সৈয়দ আলী আহসান ও ক্লিনিক্যাল কার্ডিওলজি ডিভিশন-এর প্রধান অধ্যাপক ডাঃ সজল কৃষ্ণ ব্যানার্জীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শহীদুল্লাহ সিকদার, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডাঃ মুহাম্মদ রফিকুল আলম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ মোহাম্মদ আতিকুর রহমান। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন হার্ট ফেইলিউর ডিভিশন-এর প্রধান অধ্যাপক ডাঃ হারিসুল হক, কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ডাঃ এস এম মোস্তফা জামান, যুক্তরাজ্যের ডাঃ মনজুর শওকত, ডাঃ রেশম বড়ুয়া, ডাঃ ইমানুয়েল অকো, ডাঃ আবি হোসাইনি প্রমুখ। অন্য বক্তারা বলেন, হার্টের বিভিন্ন কারণ যেমন করোনারি আর্টারি ডিজিস, উচ্চ রক্তচাপ, কনজেনিটাল হার্ট ডিজিসসহ ইনফেকশন, কিডনি ও লিভার ফেইলিউর, বিভিন্ন ড্রাগস যেমন কেমোথেরাপি ইত্যাদি কারণে হার্ট ফেইলিউর হয়ে থাকে। সারা বিশ্বে প্রতি বছর ২৩ মিলিয়নেরও অধিক লোক হার্ট ফেইলিউর-এ আক্রান্ত হয়। এই রোগীদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ হাসপাতাল থেকে ডিসচার্জ নেয়ার পরও পুনরায় ভর্তি হতে হয় বিধায় এ সকল রোগীদের সেবা প্রদান ও চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করা রোগীর পরিবারের জন্য অত্যন্ত কষ্টসাধ্য। তাই এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। হার্ট ফেইলিউর হওয়ার কারণ হিসেবে অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সাধারণত বিভিন্ন রকম হার্টের রোগ যখন অগ্রবর্তী পর্যায়ে চলে যায়, তখন হার্ট ফেইলিউর তৈরি হয়। যেমন একিউট মায়োকার্ডিয়াল ইনফেকশনের পরে হার্টের মাংসপেশিগুলো যদি দুর্বল হয়ে পড়ে, যাদের হার্টের পাম্পিং একশন কমে যায়, ৪০ ভাগের নিচে নেমে যায়, তখন রোগীর বেশ কিছু লক্ষণ দেখা দেয়। যেমন রোগীর শ্বাসকষ্ট হয়, পায়ে পানি আসে, পেটে পানি আসে, রোগী রাতের বেলা শুতে পারে না। শুলেই তার ফুসফুসে পানি জমে যায়। একে আমরা বলি পারকসিজনাল নকটারনাল ডিসনিয়া। এই রোগীদের আমরা ক্লাসিফাই করি হার্ট ফেইলিউর হিসেবে। শুধু যে হার্ট এ্যাটাকের পরে হার্ট ফেইলিউর বাড়ে তা নয়, রোগীর যদি ভাল্বে সমস্যা থাকে, হার্টের মধ্যে জন্মগতভাবে কোন ফুটা থাকে, অথবা ভাইরাল ইনফেকশনের পরে রোগীদের হার্টের পাম্পিং একশন দুর্বল হয়ে যেতে পারে। একে আমরা বলি ডায়লেটেড কার্ডিওমায়োপ্যাথি। এরপর অনেক সময় গর্ভাবস্থা, ও গর্ভাবস্থার পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে, নারীদের হঠাৎ করে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যেতে পারে। তাদেরও এ রকম ডায়লেটেড কার্ডিওমায়োপ্যাথি তৈরি হয়। একে আমরা বলি প্যারিপারটাম কার্ডিওমায়োপ্যাথি। সে ক্ষেত্রেও তাদের হার্টের পাম্পিং খুব কমে যায়। গর্ভাবস্থায় ও সন্তান জন্মদানের ছয় মাসের মধ্যেও বৃদ্ধি পেতে পারে।
×