ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সিরাজগঞ্জে মাঠে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা, বিএনপি নামেনি এখনও

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ৪ নভেম্বর ২০১৮

সিরাজগঞ্জে মাঠে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা, বিএনপি নামেনি এখনও

বাবু ইসলাম, সিরাজগঞ্জ ॥ উত্তরাঞ্চলের প্রবেশদ্বার যমুনাপারের জেলা সিরাজগঞ্জে ছয়টি নির্বাচনী আসনজুড়েই ভোটের ঢেউ বইছে। নেতাকর্মীসহ প্রার্থীরা ছুটছেন তাদের নির্বাচনী এলাকার সাধারণ ভোটারের কাছে। আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিপারে অবস্থিত সিরাজগঞ্জে সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাঠে নেমেছেন। আওয়ামী লীগ নির্বাচনী প্রচারে এগিয়ে। সরকার গঠন এবং সংসদ নির্বাচনে সিরাজগঞ্জ একটি মর্যাদাপূর্ণ জেলা। স্বাধীনতার পর প্রতিটি সরকারের আমলেই সিরাজগঞ্জের এমপি কেউ না কেউ মন্ত্রীর মর্যাদা পেয়েছেন। ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে ঘাতকের বুলেটে নিহত জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এম মনসুর আলী সিরাজগঞ্জ-১ (কাজীপুর) আসন থেকে বার বার নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি দেশের প্রধানমন্ত্রীর পদমর্যাদায় আসীন হয়েছেন। জাতীয় নেতার মর্যাদা পেয়েছেন। তারই সুযোগ্য সন্তান ও রাজনৈতিক উত্তরসূরি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ১৪ দলের মুখপাত্র স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তার বাবার রেখে যাওয়া আসন থেকে বার বার নির্বাচিত হয়েছেন, একাধিকবার মন্ত্রী হয়েছেন, জাতীয় নেতা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, মাওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগীশ, কবি-সাহিত্যিক সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী, তৎকালীন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় শিল্পমন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদও সিরাজগঞ্জের সন্তান। ক্ষণজন্মা এসব ব্যক্তিত্বের জন্মভূমি সিরাজগঞ্জের মর্যাদা জাতীয় পর্যায়ে অনেক বেশি। সিরাজগঞ্জের ৬ আসনে ইতোমধ্যেই আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। নির্বাচনী মাঠে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ এগিয়ে। বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের প্রার্থীরা তাদের নির্বাচনী মাঠ এখনও গোছাতে পারেননি। নবম সংসদে জেলার ৬ আসনের মধ্যে তিনটিতে আওয়ামী লীগ ও তিনটিতে বিএনপি প্রার্থী বিজয়ী হয়েছিল। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনে দশম সংসদের মতো একাদশ সংসদ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ ৬ আসনই ধরে রাখতে চায়। বিএনপি এবং অন্যান্য সমমনা দল নির্বাচনে অংশ নিয়ে কয়টি আসন পুনরুদ্ধার করতে পারবে তা সময়ই বলে দেবে। তবে এর মধ্যে যোগ্য প্রার্থী নির্বাচনে যে দল বিচক্ষণতা ও দক্ষতার পরিচয় দেবে, জয়ের পাল্লা তাদের দিকেই যাবে বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করে । সিরাজগঞ্জ-১ (কাজীপুর) ॥ কাজীপুরের ১৩ ইউনিয়ন, এক পৌরসভা ও সিরাজগঞ্জ সদরের ৫ ইউনিয়ন নিয়ে আসনটি আওয়ামী লীগের দুর্গ হিসেবে পরিচিত। প্রতিবারই আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ আসনে জয়লাভ করেছে। আওয়ামী লীগ প্রেডিয়াম সদস্য ও কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের নেতৃত্বে এ আসনে রয়েছে আওয়ামী লীগের শক্ত সাংগঠনিক ভিত্তি। তিনি প্রতিবারই এই আসনে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। তার নির্বাচনী এলাকায় গত পাঁচ বছরে স্বাস্থ্য খাতসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অবকাঠামোসহ দৃশ্যমান যে উন্নয়ন হয়েছে তা চোখে পড়ার মতো। এবারও তিনি এ আসনে একক প্রার্থী। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে কণ্ঠশিল্পী কনক চাপা, সিরাজগঞ্জ শহর বিএনপির সভাপতি টিএম নাজমুল হাসান রানা, উপজেলা বিএনপির সভাপতি সেলিম রেজা তালুকদার ও টিএম তাজিবুল ইসলাম তুষার মনোনয়ন চাইতে পারেন। সিরাজগঞ্জ-২ (সদর ও কামারখন্দ) ॥ এ আসন জেলা সদরের। এ আসন থেকেই নিয়ন্ত্রিত হয় সিরাজগঞ্জের রাজনীতি। সিরাজগঞ্জে পৌরসভা, সিরাজগঞ্জ সদরের পাঁচটি ও কামারখন্দ উপজেলার চারটি ইউনিয়ন নিয়ে সিরাজগঞ্জ-২ আসন। বর্তমান এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডাঃ হাবিবে মিল্লাত মুন্না এ আসনে নিশ্চিত প্রার্থী হিসেবে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। তিনি তার নির্বাচনী এলাকায় গত পাঁচ বছরে দৃশ্যমান অনেক উন্নয়ন করেছেন। একাদশ সংসদ নির্বাচনেও তিনি নির্বাচিত হলে সিরাজগঞ্জের বেকার সমস্যাকে প্রাধান্য দিয়ে জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাবেন। ইতোমধ্যেই অধ্যাপক মিল্লাত তার নির্বাচনী এলাকায় উন্নয়ন কর্মকা-ের ফিরিস্তি দিয়ে লিফলেট, পোস্টার, ব্যানারে ছেয়ে ফেলেছেন। অসংখ্য তোরণও নির্মাণ করা হয়েছে। তফসিল ঘোষণার আগেই তিনি নির্বাচনের অনেক কাজ গুছিয়ে নিয়েছেন। দলীয় নেতাকর্মী এবং জনগণের মধ্যে নির্বাচনী সেতুবন্ধও তৈরি হয়েছে। তিনি আশাবাদী, একাদশ সংসদ নির্বাচনে তার বিজয় কেউ ঠেকাতে পারবে না। অপরদিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আমিনুল ইসলাম ঝন্টু এই আসনে তাদের দলীয় প্রার্থী। ১৪ দলের শরিক জাসদের মনোনয়ন চাইবেন প্রাণগোবিন্দ চৌধুরী। এ আসনে নবম সংসদ নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী বিজয়ী হয়েছিল। এ নির্বাচনে এই আসনে বিএনপি প্রার্থী তাদের আসন পুনরুদ্ধার করতে মরিয়া হয়ে মাঠে থাকবে। কোন কারণে বিএনপির ইকবাল হাসান মাহমুদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারলে তার সহধর্মিণী ও জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি রুমানা মাহমুদের মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে রুমানা মাহমুদ এ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। সিরাজগঞ্জ-৩ (রায়গঞ্জ-তাড়াশ) ॥ রায়গঞ্জ উপজেলার ৯ ইউনিয়ন, এক পৌরসভা ও তাড়াশ উপজেলার ৮ ইউনিয়ন নিয়ে এ আসন। বর্তমানে এ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মম আমজাদ হোসেন মিলন। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আলহাজ ইসহাক হোসেন তালুকদার নির্বাচিত হয়েছিলেন। দশম সংসদেও ইসহাক হোসেন তালুকদার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হন। কিন্তু তিনি অসুস্থতাজনিত কারণে মারা যাবার পর উপনির্বাচনে মম আমজাদ হোসেন মিলন এমপি নির্বাচিত হন। বর্তমান এমপি তার নির্বাচনী এলাকায় অনেক দৃশ্যমান উন্নয়ন করেছেন। তিনি একাদশ সংসদ নির্বাচনেও মনোনয়ন প্রত্যাশী। অবশ্য দলের মনোনয়নের প্রত্যাশায় মাঠে আরও কাজ করছেন কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সুইট, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য শিল্পপতি লুৎফর রহমান দিলু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাদী আলমাজি জিন্নাহ, সাবেক এমপি ইসাহাক তালুকদারের ছেলে জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য ইমন তালুকদার। অপরদিকে, ২০ দলীয় জোটের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হলেন, সাবেক বিএনপি দলীয় এমপি আব্দুল মান্নান তালুকদার, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সাইফুল ইসলাম শিশির ও তাড়াশ উপজেলা বিএনপি সভাপতি খন্দকার সেলিম জাহাঙ্গীর। এই আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী আব্দুল মান্নান তালুকদার ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছিলেন। বিএনপি চায় আসনটি পুনরুদ্ধার করতে। সিরাজগঞ্জ-৪ (উল্লাপাড়া) ॥ ১৯৯১ থেকে এ আসনে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী প্রত্যেকেই তিনবার করে নির্বাচিত হয়েছেন। ১৯৯৬, ২০০৮ এবং ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের প্রাথী বিজয়ী হয়েছেন। এ আসনে বর্তমান আওয়ামী লীগের তানভীর ইমাম এমপি হিসেবে তার নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। অবকাঠামোগত দৃশ্যমান উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় তিনি আবারও মনোনয়ন প্রত্যাশী। এছাড়াও আওয়ামী লীগ থেকে ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিজয়ী সাবেক এমপি শফিকুল ইসলাম শফি, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ জাহেদুল ইসলাম জাহিদ, সাবেক এমপি আব্দুল লতিফ মির্জার মেয়ে মুক্তি মির্জা মনোনয়ন প্রত্যাশায় মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে সাবেক এমপি এম আকবর আলী, উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কাজী কামাল ও জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম খানও দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী। আওয়ামী লীগ, বিএনপি উভয় দলই বিভিন্ন সময় নির্বাচিত হয়েছেন। ভোটের সমীকরণে দেখা গেছে, এই আসনে কোন দলেরই একক প্রাধান্য নেই। সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগকে প্রার্থী মনোনয়নে কৌশলী এবং দক্ষতার পরিচয় দিতে হবে। বিএনপি-জামায়াত যদি একক প্রার্থী দেয় তবে আওয়ামী লীগ বেকায়দায় পড়তে পারে । সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি, এনায়েতপুর ও চৌহালী) ॥ তাঁতশিল্প সমৃদ্ধ বেলকুচি, এনায়েতপুর ও যমুনা নদীবেষ্টিত চৌহালী উপজেলা নিয়ে সিরাজগঞ্জ-৫। এ আসনে ১৯৯৬, ২০০৮ এবং ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ প্রার্থী জয়লাভ করেছে। ২০০৮ সালে এ আসন থেকে আব্দুল লতিফ বিশ্বাস এমপি নির্বাচিত হয়ে মন্ত্রী হয়েছিলেন। ২০১৪ সালে দল আব্দুল মজিদ ম-লকে মনোনয়ন দেয়। তবে একাদশ সংসদ নির্বাচনে মজিদ ম-ল স্বাস্থ্যগত কারণে অংশ নেবেন না বলে আগেই ঘোষণা দিয়ে তার পুত্র মোমিন ম-লকে মাঠে নামিয়েছেন। এ ছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস, ঢাকার বনানী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নবপ্রজন্মের অহঙ্কার মীর মোশাররফ হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান, বর্তমান এমপি আব্দুল মজিদ ম-লের ছেলে আব্দুল মোমিন ম-ল আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। মাঠে কাজ করছেন। অপরদিকে, ২০ দলের পক্ষ থেকে বিএনপি নেতা গোলাম মওলা খান বাবলু, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলীম, জেলা বিএনপির সদস্য রাকিবুল করিম পাপ্পু ও চৌহালী উপজেলা চেয়ারম্যান মেজর (অব) মামুনও গণসংযোগ করছেন। এই আসনে আওয়ামী লীগ চায় তাদের আসন ধরে রাখতে আর বিএনপি চায় আসন পুনরুদ্ধার। নবম ও দশম সংসদ নির্বাচনে এই আসনটি আওয়ামী লীগের দখলে রয়েছে। এর আগে এই আসন বিএনপির দখলে। সিরাজগঞ্জ-৬ (শাহজাদপুর) ॥ তাঁতশিল্প সমৃদ্ধ শাহজাদপুরের ১৩ ইউনিয়ন নিয়ে এ আসন। এ আসনে বর্তমান এমপি আওয়ামী লীগের হাসিবুর রহমান স্বপন। তিনি তার নির্বাচনী এলাকায় দৃশ্যমান ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। একাদশ সংসদ নির্বাচনেও হাসিবুর রহমান স্বপন মনোনয়ন প্রত্যাশী এবং মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। এ ছাড়াও আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি চয়ন ইসলাম, শেখ আব্দুল হামিদ লাভলুও মনোনয়ন প্রত্যাশী। তারাও মাঠে কাজ করছেন। অপরদিকে, বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট থেকে সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী প্রয়াত ডাঃ এমএ মতিনের ছেলে ডাঃ এমএ মুহিত, সাবেক এমপি কামরুদ্দিন এহিয়া খান মজলিশ ও কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি গোলাম সারোয়ার মনোনয়ন প্রত্যাশী। আসনটি অধিকাংশ সময় বিএনপির দখলে ছিল কিন্তু নবম ও দশম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দখলে আসে। এবার কোন্ দল এই আসন লাভ করবে সেটিই দেখার বিষয়। ইতোমধ্যেই প্রত্যেক প্রার্থী ভোটারদের নিজেদের পক্ষে আকৃষ্ট করতে নির্বাচনী এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন।
×