ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কওমি শিক্ষক শিক্ষার্থীসহ ১০ লাখ লোক সমাগমের আশা

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রধানমন্ত্রীকে আজ হেফাজতের সংবর্ধনা

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ৪ নভেম্বর ২০১৮

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রধানমন্ত্রীকে আজ হেফাজতের সংবর্ধনা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কওমি মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদিস সনদের সরকারী স্বীকৃতি বিল জাতীয় সংসদে পাস হওয়ায় আজ প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শোকরানা মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি’আতিল কওমিয়া বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত মাহফিলে সারাদেশের আলেম ওলামা, কওমি শিক্ষক শিক্ষার্থীসহ ১০ লাখ লোক যোগ দেবেন বলে আশা করছেন জাতীয় দ্বীনি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ। এদিকে অনুষ্ঠানস্থল ও এর আশপাশের এলাকায় যানবাহনসহ চলাচল পরিহার করার অনুরোধ জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফীর নেতৃত্বাধীন আল-হাইআতুল উলয়া লিল জামিআতিল কওমিয়া বাংলাদেশ আয়োজিত শোকরানা মাহফিলস্থল শনিবার পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার চেয়ারম্যান আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ। এ সময় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আমরা আশা করছি দশ লাখেরও বেশি মানুষ শোকরানা মাহফিলে উপস্থিত হবেন। নির্বাচনের আগে এমন একটি সমাবেশ কোন প্রভাব ফেলবে কি না জানতে চাইলে আল্লামা মাসঊদ বলেন, এটি নির্বাচনী সমাবেশ নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই কওমি মাদ্রাসার জন্য নজিরবিহীন একটি কাজ করেছেন। যা ইতোপূর্বে কেউই করেনি। আমরা তাকে শুকরিয়া জানাতেই একত্র হবো। আল্লামা আহমদ শফী শোকরানা মাহফিলে উপস্থিত থাকবেন কিনা সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইনশা আল্লাহ উপস্থিত থাকবেন। তিনি নিজেই তো প্রধানমন্ত্রীকে দাওয়াত দিয়েছেন। এ মাহফিলে সভাপতিত্বও করবেন তিনি। আমরা দোয়া করছি, তাকে আল্লাহ তাআলা সুস্থ রাখুন। হেফাজতে ইসলাম একসময় সরকারের বিরুদ্ধে শাপলায় অবস্থান নিয়েছিল এখন পক্ষে চলে এসেছে কীভাবে- এমন প্রশ্ন করলে আল্লামা মাসঊদ বলেন, হেফাজতে ইসলাম সরকারের বিরুদ্ধে ছিল না। তারা শাপলা চত্বরে তাদের দাবি সরকারের কাছে পেশ করেছিল। আর এখন তো অনেক বড় একটি কাজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করে দিয়েছেন। কওমি মাদ্রাসার স্বীকৃতি প্রদান, আইন পাস করানো ছোট কোন বিষয় নয়। এটা নজিরবিহীন। আলেমদের বিশাল এই সমাবেশে প্রধানমন্ত্রীর কাছে কোন দাবি রাখা হবে কিনা জানতে চাইলে আল্লামা মাসঊদ বলেন, সেরকম কোন বিষয়ে সম্মিলিত পরামর্শ হয়নি। তবে জামায়াত নিষিদ্ধকরণ, কাদিয়ানিদের মিথ্যাচার প্রচারের বিরুদ্ধে আলোচনা হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়েও ভাল ভূমিকা রাখতে পারেন। পরিদর্শনকালে আরও ছিলেন, জাতীয় দ্বীনি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের সহ-সভাপতি মাওলানা ইয়াহয়া মাহমুদ, মহাসচিব মুফতি মুহাম্মদ আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা ইমদাদুল্লাহ কাসেমী, বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার মহাসচিব মাওলানা আবদুর রহীম কাসেমী, অভিভাবক পরিষদ সদস্য মাওলানা আইয়ুব আনসারী, ঢাকা মহানগরীর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা সদরুদ্দীন মাকনুন, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মাওলানা মাসউদুল কাদির প্রমুখ। এদিকে আয়োজন সম্পর্কে জানতে চাইলে আয়োজকদের একজন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মঈনুদ্দীন রুহি বলেন, কওমি সনদের সরকারী স্বীকৃতি বিল জাতীয় সংসদে পাস হওয়ায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে রবিবার প্রধানমন্ত্রীকে সংবর্ধনা দেয়া হবে। এটি শোকরিয়া মাহফিল। সারা দেশ থেকে ওলামায়ে কেরামরা প্রধানমন্ত্রীর সংবর্ধনায় আসবেন। আমাদের টার্গেট ১০ লক্ষাধিক লোক সমাগমের। এদিকে সর্বসাধারণকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অনুষ্ঠানস্থল এবং এর আশপাশের এলাকা দিয়ে যানবাহনসহ চলাচল পরিহার করার অনুরোধ জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। এছাড়া অনুষ্ঠানে আগত ব্যক্তিদের ট্রাফিক ব্যবস্থা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, মাহফিলে আগত ব্যক্তিরা গাবতলী থেকে মিরপুর রোড হয়ে সাইন্সল্যাব-নিউমার্কেট হয়ে নীলক্ষেতে নেমে পায়ে হেঁটে টিএসসি হয়ে বিভিন্ন গেট দিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ করবেন। এ সময় মাহফিলে আগত ব্যক্তিদের বাসসমূহ বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল চত্বর এবং নীলক্ষেত হতে পলাশী পর্যন্ত রাস্তার উভয় পাশে এক লাইনে পার্কিং করবেন। উত্তরা হতে এয়ারপোর্ট রোড হয়ে মহাখালী- মগবাজার- কাকরাইল চার্চ- রাজমনি ক্রসিং- নাইটিংগেল- পল্টন মোড়-জিরো পয়েন্ট অথবা খিলক্ষেত ফ্লাইওভার-বাড্ডা-গুলশান-রামপুরা রোড-মৌচাক ফ্লাইওভার-মালিবাগ-শান্তিনগর- রাজমনি ক্রসিং- নাইটিংগেল হয়ে পল্টনমোড় জিরোপয়েন্ট হয়ে আগত ব্যক্তিদের পল্টন মোড়-জিরো পয়েন্টে নেমে পায়ে হেঁটে দোয়েল চত্বর হয়ে উদ্যানের বিভিন্ন গেট দিয়ে অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করবেন এবং তাদের বাসসমূহ মতিঝিল এলাকায় পার্কিং করবেন। উল্লেখ্য উত্তরা এয়ারপোর্ট হতে আগত গাড়িসমূহের পার্কিং স্থান মতিঝিল-গুলিস্তানে সংঙ্কুলান না হলে প্রয়োজনে হাতিরঝিল এলাকায় পার্কিং করা হতে পারে। চট্টগ্রাম, সিলেট হতে যাত্রাবাড়ী হয়ে এবং দক্ষিণাঞ্চল হতে পোস্তগোলা হয়ে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের ওপর দিয়ে আগত ব্যক্তিরা গুলিস্তানে নেমে পায়ে হেঁটে জিরো পয়েন্ট-দোয়েল চত্বর হয়ে অনুষ্ঠানস্থলে গমন করবেন এবং তাদের বাসসমূহ মতিঝিল-গুলিস্তান এলাকায় পার্কিং করবেন। যারা মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার এর ওপর দিয়ে চাঁনখারপুল হয়ে আসবেন তারা চাঁনখারপুল নেমে পায়ে হেঁটে দোয়েল চত্বর হয়ে উদ্যানের বিভিন্ন গেট দিয়ে অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করবেন এবং তাদের বাসসমূহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেশিয়াম মাঠে পার্কিং করবেন। বাবুবাজার ব্রিজ হয়ে আগত ব্যক্তিবর্গ গোলাপশাহ মাজারে নেমে পায়ে হেঁটে হাইকোর্ট-দোয়েল চত্বর হয়ে উদ্যানের বিভিন্ন গেট দিয়ে অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করবেন এবং তাদের বাসসমূহ গুলিস্তান এলাকায় পার্কিং করবেন। শাহবাগ হতে মৎস্য ভবন পর্যন্ত সড়ক সর্বসাধারণের চলাচলের জন্য বন্ধ থাকবে এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের চারদিকের রাস্তায় যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। অনুষ্ঠানস্থলে প্রধানমন্ত্রীসহ সম্মানিত ব্যক্তিদের গমনাগমন উপলক্ষে ভোর হতে অনুষ্ঠান শেষ না হওয়া পর্যন্ত অনুষ্ঠান স্থলের চারপাশের বিভিন্ন ইন্টার সেকশন যেমন-বাংলামটর, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল, শাহাবাগ, কাঁটাবন, নীলক্ষেত, পলাশী, বকশিবাজার, চাঁনখারপুল, গোলাপশাহ মাজার, জিরো পয়েন্ট, পল্টন, কাকরাইল চার্চ, অফিসার্স ক্লাব, মিন্টু রোড ক্রসিংগুলো হতে গাড়ি ডাইভারশন দেয়ার প্রয়োজন পড়তে পারে। অনুষ্ঠান স্থলে আগত ব্যক্তিরা কোন প্রকার হ্যান্ডব্যাগ, ট্রলি ব্যাগ, দাহ্য পদার্থ বা ধারালো কোন বস্তু বহন না করতে অনুরোধ জানিয়েছে ডিএমপি।
×