ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জেলহত্যা দিবসের আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী

অপমান সয়েও সংলাপে বসেছি দেশের মানুষের জন্য

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ৪ নভেম্বর ২০১৮

অপমান সয়েও সংলাপে বসেছি দেশের মানুষের জন্য

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বিএনপি-জামায়াত জোটের অগ্নিসন্ত্রাস, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাসহ তাকে বার বার প্রাণনাশের চেষ্টার কথা উল্লেখ করে বলেছেন: আমরা কোন কিছুই ভুলিনি, ভোলা যাবে না। আমরা চাই সবার অংশগ্রহণে আগামী নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হোক। এ কারণে এত অপমান, এত কিছু শুধু দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে; দেশের মানুষ শান্তিতে থাকুক, দেশের মানুষ তার ভোটটা শান্তিতে দিয়ে তাদের মনমতো সরকার বেছে নিতে পারে- সেই চিন্তাটা থেকেই আমরা তাদের (বিএনপি) সঙ্গে সংলাপে বসেছি, আলোচনা চলছে। যাতে দেশের মানুষ আর যেন জ্বালাও-পোড়াও, মানুষকে পুড়িয়ে হত্যার মতো ঘটনার সম্মুখীন না হয়। দেশের মানুষের কাছে আবারও নৌকা মার্কায় ভোট চাওয়ার পাশাপাশি সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, একমাত্র আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই দেশের উন্নয়ন হয়, আগামীতেও হবে। আগামী নির্বাচনে জনগণের ভোটে আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় এলেই দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। নইলে খুনী, লুটেরা, অগ্নিসন্ত্রাসকারী, জঙ্গীবাদ লালন-পালনকারী, গ্রেনেড হামলাকারী এরা যদি ক্ষমতায় আসে তবে এদেশের মানুষের ভাগ্যের আর পরিবর্তন হবে না। তারা আবারও দেশকে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যাবে। এ ব্যাপারে দেশবাসীকে সজাগ ও সচেতন থাকতে হবে। বাংলাদেশ আজ সবদিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে, দেশকে আমরা আরও এগিয়ে নেব। বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলবই। শনিবার বিকেলে রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত জেলাহত্যা দিবসের আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। সংলাপ চলার সময় বিএনপির আন্দোলন কর্মসূচী দেয়ার বিষয়ে প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন নিয়ে যখন আলোচনা চলছে, এ সময় দেখলাম আন্দোলনের কর্মসূচী দেয়া হলো! একদিকে আলোচনাও করবে আবার আরেকদিকে আন্দোলনের কর্মসূচী দেয়া হবে; তাহলে এটা কি ধরনের সংলাপ আর কি ধরনের কথা, আমাদের কাছে বোধগম্য নয়। জানি না দেশবাসী ও জাতি এটা কিভাবে নেবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিম-লীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, জাতীয় নেতা ক্যাপ্টেন শহীদ এম মনসুর আলীর পুত্র ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, জাতীয় নেতা শহীদ তাজউদ্দীন আহমদের কন্যা সিমিন হোসেন রিমি এমপি, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তরের সভাপতি এ কে এম রহমতুল্লাহ এমপি ও দক্ষিণের সভাপতি হাজী আবুল হাসনাত। আলোচনা সভা পরিচালনা করেন কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ ও উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমীন। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ও পরে নির্বাচন ও সরকার হঠানোর নামে বিএনপি-জামায়াতের জ্বালাও-পোড়াও, অগ্নিসন্ত্রাসের নির্মমতার সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। এ বিষয়ে তিনি বলেন, সামনে নির্বাচন। সেই নির্বাচন সামনে রেখে আমাদের কাছে যখন ঐক্যফ্রন্ট চিঠি দিল, তারা আমাদের সঙ্গে দেখা করতে চান। আমি সঙ্গে সঙ্গে স্বাগত জানালাম শত ব্যস্ততার মাঝেও। ময়মনসিংহে পাবলিক মিটিং করে এসেও আমরা আলোচনা করছি। ইতোমধ্যে ‘ঐক্যফ্রন্ট’ ও যুক্তফ্রন্ট’ দুটো গ্রুপের সঙ্গে মিটিং হয়ে গেছে। এরপরে আরও সবার সঙ্গে আমরা বৈঠক করব জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা আলাপ করতে চেয়েছে, সংলাপ করতে চেয়েছে, আমরা করেছি। একটা সুন্দর পরিবেশেই আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, সংলাপে তারা যে সমস্ত দাবিদাওয়া দিয়েছে, যেসব দাবিদাওয়া আমাদের পক্ষে পূরণ করা সম্ভব আমরা বলেছি, আমরা করব। তারা বলেছে, রাজবন্দীদের মুক্তি চাই। আমি বলেছি, রাজবন্দীদের তালিকা দেন। তাদের বিরুদ্ধে যদি কোন খুনের মামলা না থাকে, কোন ক্রিমিনাল অফেন্স তারা করে না থাকে- তাহলে অবশ্যই দেখা হবে। তবে আর আমরা তো কাউকে রাজনৈতিক কারণে গ্রেফতার করিনি। তা যদি করতাম তাহলে তো খালেদা জিয়া ২০১৪-১৫ সালে মানুষ পুড়িয়ে পুড়িয়ে হত্যা শুরু করল তখনই তাকে গ্রেফতার করতে পারতাম। আমরা কিন্তু সেটাও করিনি। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের দ-িত হওয়া প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা ও তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে যেসব মামলা এসব মামলা তো করেছে তাদেরই আপনজন। তাদেরই বানানো রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন, তাদেরই বানানো সেনাপ্রধান মঈনউদ্দিন, তাদেরই বানানো বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গবর্নর। তারা তো সবই বিএনপির তৈরি করা। তারাই ক্ষমতায় বসেছে এবং তারাই মামলা দিয়েছে। আর ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন তো বোধ হয় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের একজন উপদেষ্টাও। তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় আইনমন্ত্রী বোধ হয় ছিলেন, তাদের অনুমতি নিয়েই তো এসব মামলা হয়েছে। খালেদা জিয়ার মামলার বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, দশটা বছর ধরে মামলা চলেছে, সরকারের পক্ষ থেকে যদি আমাদের কোনরকম দুরভিসন্ধী থাকত তবে এই একটা মামলা শেষ হতে তো ১০ বছর লাগার কথা নয়। দশ বছর ধরে মামলা চলে মামলার রায় হয়েছে, সেই মামলায় তারা সাজাপ্রাপ্ত। এখানে আমাদের তো কিছু করার নেই। আর বিচার বিভাগ সম্পূর্ণভাবে স্বাধীন। স্বাধীন বিচার বিভাগ যে রায় দিয়েছে, সেই রায়ে খালেদা জিয়া এখন সাজা ভোগ করছেন। তারেক জিয়াও দ-িত আসামি। আর তারেক জিয়ার জন্য তো আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই এসে সাক্ষী দিয়ে গেছে। আর খালেদা জিয়ার জন্য তার কয়েকটি মামলায় সাক্ষী দিতে প্রস্তুত হয়ে আছে। তাই আন্তর্জাতিকভাবেও প্রমাণিত এরা দুর্নীতিতে জড়িত। সেখানে আমাদের করার কি আছে। তারপরও আমরা বলেছি, আপনারা তালিকা দেন। আমরা দেখব এখানে কি করা যেতে পারে। সংলাপ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আলোচনা করেছি এবং অধিকাংশ সময় তারাই (ঐক্যফ্রন্ট) কিন্তু বলেছে। আমি কিন্তু একটা কথাও বলিনি। প্রায় দুই ঘণ্টা পর্যন্ত এই জোটের যারা তারা কথা বলেছেন। এরপর আমাদের পক্ষ থেকে কথা। একেবারে সর্বশেষ সমাপ্তির সময় যেটুকু বলার আমি শুধু সেটুকুই বলেছি। তিনি বলেন, সেখানে বলেছি, কোন্টা কোন্টা আমরা করতে পারি। কোন্টা নির্বাচন কমিশনের, কোন্টা রাষ্ট্রপতির, কোন্টা কিভাবে করা যেতে পারে এবং অনেক দাবি আমরা মেনেও নিয়েছি। তবে আলোচনার সময় বিএনপির আন্দোলনের কর্মসূচী নিয়েও প্রশ্ন তোলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি এটুকুই বলতে চাই, এই দেশে অনেক রক্ত ঝরেছে। আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করার পরও যার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ করে বিজয় আনলাম, তাকে (জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু) হত্যা করা হলো। যারা মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করে বিজয় এনে দিলেন তাদের হত্যা করা হলো, এরপর থেকে সেনাবাহিনীর হাজার হাজার অফিসারকে হত্যা করা হয়েছে। বিমান বাহিনীর অফিসারদের হত্যা করা হয়েছে। আমাদের আওয়ামী লীগের অগণিত নেতাকর্মী অকথ্য অত্যাচার-নির্যাতনে মৃত্যুবরণ করেছে। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পর থেকে এই দেশে একের পর এক অবৈধ ক্ষমতা দখল এবং এই প্রক্রিয়া চলেছে। জিয়া-খালেদা জিয়ার আমলে বঙ্গবন্ধুর খুনীদের বিচার না করে পুরস্কৃত করা, যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তি দিয়ে রাজনীতিতে পুনর্বাসনের কঠোর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধু হত্যা, জেলাহত্যা এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও রায় কার্যকর করে দেশকে অভিশাপমুক্ত করেছি। কিন্তু দেশে একশ্রেণীর মানুষ রয়ে গেছে যারা দেশ সব দিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে, দেশের মানুষ শান্তিতে-স্বস্তিতে রয়েছে, একটু সুখের মুখ দেখছে এটা তাদের সহ্য হয় না। তাদের মনে যন্ত্রণার সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশের মানুষ ভাল থাকুক তা এই শ্রেণীর ভাল লাগে না। আমরা সৃষ্টি করি, এরা ধ্বংস করে। গত নির্বাচনের আগে টেলিফোন করে খালেদা জিয়ার কাছে কী ঝাড়ি খেয়েছি তাও দেশের মানুষ দেখেছে। এমনকি ছেলেহারা মাকে সান্ত¡না দিতে খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে গেলেও আমার মুখের ওপর দরজা বন্ধ করে দিয়ে ভেতরে যেতে দেয়া হয়নি। এত অপমান ও অনেক কিছু সহ্য করেও শুধু দেশের মানুষের কথা বিবেচনা করে সংলাপ করছি। আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আজকে যখন গণতান্ত্রিক ধারাটা চলছে, আমরা চাই গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতাটা অব্যাহত থাকুক। গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতার মধ্য দিয়েই দেশের উন্নয়ন হয়। আজ আমরা উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছি। আজ বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে। ১৯৭৫’র পর বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আন্তর্জাতিকভাবে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেয়া হয়েছিল। আমরা আবার ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছি। এটা সম্ভব হয়েছে, একমাত্র আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশের উন্নতি হয়। কারণ আওয়ামী লীগ দেশের উন্নতি চায়, মানুষের ভাল চায়। মানুষ ভাল থাকুক, মানুষের জীবনমানের উন্নতি হোক, সেটাই আওয়ামী লীগ চায়। ১৯৭৫ এর পর দীর্ঘ ২১ বছর যারা ক্ষমতায় এসেছে তারা নিজেদের ভাগ্য গড়তেই ব্যস্ত ছিল জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের কিন্তু সেই নিয়ত নেই। আমাদের নিয়ত একটাই, বাংলাদেশের একেবারে গ্রামের তৃণমূলের মানুষ তারও জীবনমান উন্নত হবে। সেও যেন দারিদ্র্যের হাত থেকে মুক্তি পায়। প্রত্যেকটি গ্রাম যেন শহরে উন্নীত হয়। নাগরিক সুবিধা এদেশের মানুষ পায়। প্রত্যেকেই যেন তার মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে পারে। আর জাতির পিতার যে স্বপ্ন সেই স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ যেন আমরা গড়তে পারি। সেটাই আমাদের লক্ষ্য। আওয়ামী লীগের উন্নয়নের সোপান ধরে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, আরও এগিয়ে যাবে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পথ ধরে তার স্বপ্নের সোনার বাংলা আমরা গড়ে তুলবই। আমির হোসেন আমু জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাত দফা দাবির কঠোর সমালোচনা করে বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যখন বাংলাদেশ উন্নয়নের নতুনমাত্রা যোগ করেছে, তিনি যখন বিশ্ব নেতৃত্বের আসনে আসীন তখনই ফের ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। তারা যে দাবিগুলো করেছে তাতে মনে হয় প্রধানমন্ত্রী সর্বোচ্চ আদালত, নির্বাচন কমিশনসহ সবকিছুর সর্বময় কর্তৃত্বের অধিকারী! যদি এটা মনে করেন তবে শেখ হাসিনার অধীনে সাংবিধানিক নির্বাচনে আসতে আপনাদের এত ভয় কীসের? নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করে আবার দেশকে অন্ধকারের গলিপথে নেয়ার চেষ্টা আপনাদের কোনদিনই সফল হবে না। তোফায়েল আহমেদ সংলাপ প্রসঙ্গে বলেন, বৈঠকে আমরা ড. কামাল হোসেনকে বলেছি, সংবিধান অনুযায়ী ক্ষমতাসীন দলের অধীনেই নির্বাচন হয়। ড. কামাল হোসেনও তেমনি নির্বাচনে অংশ নিয়ে এমপি হয়েছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রীও হয়েছেন। তবে এখন অসাংবিধানিক দাবি কেন? স্পষ্টভাবেই বলেছি আলোচনা হবে সংবিধানের ভিত্তিতেই। আর আওয়ামী লীগ যদি ঐক্যবদ্ধ থাকে তবে আগামী নির্বাচনেও নৌকা অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছবেই। মতিয়া চৌধুরী বলেন, সমস্ত চক্রান্ত-ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল ছিন্ন করে প্রধানমন্ত্রী সারাবিশ্বে প্রমাণ করেছেন, তিনি জনগণের শক্তিকে উন্নয়নের শক্তিতে পরিণত করেছেন। দেশের ১৬ কোটি জনগণ এখন শেখ হাসিনার পেছনে, উন্নয়ন-অগ্রগতির পক্ষে। আগামী নির্বাচনেও জনগণ আবারও নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে উন্নয়নের সোপানকে আরও ত্বরান্বিত করবে। শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, যারা দেশের টাকা, এতিমের টাকা মেরে খেয়ে দ-িত হয়ে জেলে যান, তারা রাজবন্দী নন তাদের বলা হয় ক্রিমিনাল বা চোর। যারা আন্দোলনের নামে শত শত মানুষকে হত্যা করেছে, যে জিয়া বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত সেই খুনীদের দলের সঙ্গে কখনও সংলাপ হতে পারে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদার বলেই তাদের সঙ্গে সংলাপ করেছেন। মোহাম্মদ নাসিম বলেন, জাতীয় চার নেতা জীবন দিয়ে গেছেন, কিন্তু বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, নীতি ও দেশের সঙ্গে বেইমানি করেননি। নতুন প্রজন্মকে এ থেকে শিক্ষা নিতে হবে। আজ দেশের রাজনীতিতে কিছু নীতিহীন ও আদর্শহীন নেতা বিএনপির কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। বঙ্গবন্ধু যাকে ড. কামাল বানিয়েছিলেন, তিনি কীভাবে বঙ্গবন্ধুর খুনীদের দলের সঙ্গে হাত মেলান? খুনীদের দলকে পুনর্বাসনের দায়িত্ব নেন? স্বাগত বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, মির্জা ফখরুল-ব্যারিস্টার মওদুদরা বলেন, তাদের অনেক নেতাকর্মীকে নাকি রাজনৈতিক কারণে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমার প্রশ্ন- তারা কী ভুলে গেছেন তারা ক্ষমতায় থাকতে কীভাবে আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা, নির্যাতন ও বাড়ি ছাড়া করেছিল। আর আন্দোলনের কথা বলেন। গত ১০ বছরে ১০ মিনিটও আন্দোলন করতে পারেননি, আগামীতেও পারবেন না। তবে আন্দোলনের নামে কোন ধরনের সহিংতা বা নাশকতার চেষ্টা করা হলে জনগণই তার দাঁতভাঙ্গা জবাব দেবে। আমাদের একেবারে ঠা-া কর্মসূচী। আমরা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে জনসংযোগ করব। আর যদি কেউ আমাদের আক্রমণ করতে আসে আমরাও পাল্টা আক্রমণ করব। আমরা কাউকে আক্রমণ করব না, তবে পরিষ্কার বলতে চাই- আক্রান্ত হলে এবার কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
×