ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলা গড়তেই জাতীয় ঐক্য হয়েছে ॥ ড. কামাল

প্রকাশিত: ০৫:০৯, ৩ নভেম্বর ২০১৮

  বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলা গড়তেই জাতীয় ঐক্য হয়েছে ॥ ড. কামাল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ষড়যন্ত্র করে ঐক্য ধ্বংস করা যাবে না। শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর আরামবাগে গণফোরাম কার্যালয়ে জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে দল আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. কামাল এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ষড়যন্ত্র করে জাতীয় ঐক্য ধ্বংস করা যাবে না। এ ঐক্য জনগণের ঐক্য। স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর জনগণের স্বার্থেই এ ঐক্য তৈরি হয়েছে। এতটা বছর পার হয়েছে, কিন্তু জনগণ স্বাধীনতার সুফল পায়নি। সোনার বাংলা গড়া ও বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলা গড়তেই এই জাতীয় ঐক্য তৈরি হয়েছে। গণফোরাম সভাপতি বলেন, স্বাধীনতার স্বপ্ন ছিল এদেশ হবে সবার। থাকবে না কোন ভেদাভেদ, থাকবে না কোন বৈষম্য, আর ধনী-দরিদ্রের পার্থক্য। স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর এসে ভাবতে হচ্ছে, জনগণ কী পেল। যারা উন্নয়নের কথা বলেন তারাই বিদেশে টাকা পাচার করেছেন। কেউ আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে, আবার কেউ নিঃস্ব হয়েছে। তাই নতুন করে বাঁচতে জনগণের স্বার্থেই জাতীয় ঐক্য তৈরি করা হয়েছে। আগামী দিনে উজ্জ্বল ভবিষ্যত অপেক্ষা করছে। ড. কামাল বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, এ দেশের সব ক্ষমতার উৎস জনগণ। জনগণই এ দেশের মালিক। একাত্তরেও এই জনগণই অস্ত্র ছাড়া রুখে দিয়েছে পাকিস্তানীদের। আমরা ভয় করি না। জনগণ আবার জেগেছে দুঃশাসনের বিরুদ্ধে, স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে। বৈষম্যমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়াই জাতীয় ঐক্যের লক্ষ্য। সংলাপ শেষ হয়েছে। এখন আপনারা কী করবেন এমন প্রশ্নের উত্তরে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এই শীর্ষ নেতা বলেন, সংলাপ চলমান প্রক্রিয়া। আমরা আমাদের কথাগুলো প্রধানমন্ত্রীর কানে দিয়েছি। মানবেন কি মানবেন না, সেটি উনাদের ব্যাপার। আমাদের দাবির আন্দোলন চলবেই। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, সংবিধান অনুযায়ীই নির্বাচন হবে, এর বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। আসলেই কি সঙ্কট সমাধানের সুযোগ নেই- জানতে চাইলে ড. কামাল বলেন, অবশ্যই সংবিধান অনুযায়ী নিরপেক্ষ নির্বাচনের সুযোগ আছে। তবে সেটি কী পদ্ধতিতে হবে, তা নির্ভর করবে আলোচনার ওপর। সবার ঐকমত্যের ওপর। সংবিধান অনুযায়ী সেনাবাহিনী রাখা যায়। আলোচনায় অনেক বিষয় সম্পর্কে একমত হওয়া যায়। কাজেই আমরা আশা করি, সরকার বিষয়টি ভাববে এবং আবার সংলাপে বসবে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারী বাসভবন গণভবনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের সংলাপ হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২৩ এবং ড. কামালের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ২০ নেতা সংলাপে অংশ নেন। সংলাপ শেষে উভয়পক্ষের নেতারা জানিয়েছেন, ঐক্যফ্রন্টের সাত দফা দাবির মধ্যে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে স্বাধীন রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশসহ কর্মসূচী পালন, জাতীয় নির্বাচনে বিদেশী পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতি এবং বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক মামলা বিবেচনার আশ্বাস দেয়া হয়। এর বাইরে ঐক্যফ্রন্টের বৃহত্তম শরিক দল বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তি, নির্বাচনে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে সেনা মোতায়েন, তফসিল ঘোষণার আগেই সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজন, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনসহ বাকি দাবি নিয়ে কোন ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়নি ক্ষমতাসীন দলের কাছে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সাংবিধানিক ও আদালতের বিষয়ে সরকারের হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই। অর্থাৎ সংবিধানের বাইরে গিয়ে কোন দাবি মেনে নেয়া সম্ভব নয় বলে দলীয়প্রধান শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দেন।
×