ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

প্রাচীন ওমরা মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরে এসেছে

প্রকাশিত: ০৪:২০, ৩ নভেম্বর ২০১৮

প্রাচীন ওমরা মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরে এসেছে

বিকাশ চৌধুরী, পটিয়া থেকে ॥ নানা সমস্যা কাটিয়ে প্রাচীন স্কুল কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহা ইউনিয়নের কালারপোল হাজী ওমরা মিয়া চৌধুরী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরে এসেছে। সুনামের তালিকায় এই স্কুলের নাম এখন মিলছে। বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক মোঃ আবদুর রহিম চৌধুরী যোগদানের পর মূলত স্কুলের ফলাফল থেকে শুরু করে শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন হচ্ছে। বর্তমানে কর্ণফুলী উপজেলার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। ১৯৫১ সালে সাবেক পটিয়া উপজেলার কালারপোল (বর্তমানে কর্ণফুলী উপজেলা) এলাকায় বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। এই বিদ্যালয়ে শিকলবাহা, কালারপোল, কোলাগাঁওসহ ৭টি ইউনিয়নের ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়া করে। গত তিন বছর আগে বিদ্যালয়ে নানা সমস্যায় জর্জড়িত ছিল। যার কারণে শিক্ষার পরিবেশ ঠিক ছিল না। বর্তমানে দুর্বল শিক্ষার্থীদের ঘরে ঘরে গিয়ে এক বছর ধরে হোম সার্ভিসও চালু হয়েছে। ৫ একর ভূমি নিয়ে কালারপোলে হাজী ওমরা মিয়া চৌধুরী নিজ নামে প্রতিষ্ঠা করেন ওমরা মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়। আগামী ১১ নবেম্বর বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ওমরা মিয়ার মৃত্যুবার্ষিকী। এ উপলক্ষে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপি। স্কুল কমিটি ও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, পটিয়া উপজেলার কোলাগাঁও ইউনিয়নের কালারপোল ব্রিজের পশ্চিমপাড়ে এই বিদ্যালয়টি। ওই বিদ্যালয়ে পটিয়া ছাড়াও কর্ণফুলী উপজেলার ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়া করে থাকে। শিক্ষার্থীদের জন্য স্কুলের অভ্যন্তরে রয়েছে ক্যান্টিন। স্কুলের বর্তমান কমিটিতে রয়েছেন, সভাপতি আলহাজ অধ্যাপক এম মহিউদ্দিন চৌধুরী, প্রধান শিক্ষক ও সদস্য সচিব মুহাম্মদ আবদুর রহিম চৌধুরী, শিক্ষানুরাগী সদস্য জাহাঙ্গীর আলম চেয়ারম্যান, অভিভাবক প্রতিনিধি সদস্য মোঃ আহসান হাবিব, মোঃ কামাল আহমদ, নুরুল আমিন, মাহবুব আলী খান, সংরক্ষিত মহিলা অভিভাবক প্রতিনিধি সদস্য নাছিমা আকতার, শিক্ষক প্রতিনিধি সদস্য অমল কুমার চক্রবর্ত্তী, সংরক্ষিত মহিলা শিক্ষক প্রতিনিধি সদস্য মোহাম্মদ হোসাইন, টিংকু দে। বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ১৯৬২ সালের ১১ নবেম্বর ইন্তেকাল করেন। ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত বিদ্যালয়ে বর্তমানে ১২শ’ শিক্ষার্থী রয়েছে। কালারপোল সেতু পুনঃ নির্মাণের কাজ শুরু হলে কোলাগাঁও এলাকার শিক্ষার্থীরা খুবই কষ্টের মধ্যে স্কুলে যাতায়াত করেছে। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর অনেক ছাত্র-ছাত্রী ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ব্যাংকার, ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, হয়েছেন। সাউদার্ন ইউনিভার্সিটির ফার্মেসি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর আলহাজ এম, মহিউদ্দিন চৌধুরী টার্গেট নির্ধারণ করে দিয়ে উক্ত টার্গেট অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা ও সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। বর্তমান কমিটির সভাপতির নির্দেশনা, পরামর্শ ও অনুপ্রেরণায় পরিচালনা পরিষদ, শিক্ষক-শিক্ষিকা অত্র বিদ্যালয়কে একটি আদর্শ বিদ্যালয়ে পরিণত করার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছেন। অতীতের বছরগুলোতে জেএসসি পরীক্ষার পাসের হার ছিল ৫৩% থেকে ৭০%। এখন ৮৬%। যা অতীতের সকল রেকর্ড অতিক্রম করেছে। অতীতের বছরগুলোতে আমাদের বিদ্যালয়ে শিক্ষাবোর্ডে পাসের হারের অনেক নিম্ন থাকলেও এবার প্রথম বারের মতো চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের পাসের হারকে অতিক্রম করে কর্ণফুলী উপজেলায় দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে। সকলের সহযোগিতা না থাকলে তা কখনও সম্ভব হতো না। প্রধান শিক্ষক মোঃ আবদুর রহিম চৌধুরী বলেন, তিনি যোগদানের পর কালারপোল ওমরা মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নত হয়েছে। তিনি যোগদানের আগে বিভিন্ন কারণে শিক্ষার পরিবেশ যেমন ঠিক ছিল না তেমনি শৃঙ্খলাও ছিল না। সকলের সহযোগিতায় শিক্ষার মানের পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছেন। আগামী ১১ নবেম্বর বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ব্যাপক আয়োজন করা হয়েছে। এতে ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ উপস্থিত থাকবেন। বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোখলেছুর রহমান বলেন, আগের চেয়ে বর্তমানে প্রাচীন কালারপোল স্কুলের লেখাপড়ার মান বেড়েছে। দুর্বল শিক্ষার্থীদের ঠিক করতে ঘরে ঘরে গিয়ে হোম ভিজিটিং করা হচ্ছে। তাছাড়া স্কুলের চারদিকে আবর্জনা ভরপুর থাকলেও বর্তমানে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রয়েছে। খোলা মাঠে স্থানীয় ছেলেরা প্রতিদিন বিকেলে খেলাধুলাও করে থাকে।
×