ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

দিনবদল হয়েছে মানুষের জীবনে;###;৫৬ জেলায় ৩২১ প্রকল্প উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী

ক্ষমতায় এসে দেশকে আরও উন্নত সমৃদ্ধ করতে চাই

প্রকাশিত: ০৭:৩২, ২ নভেম্বর ২০১৮

ক্ষমতায় এসে দেশকে আরও উন্নত সমৃদ্ধ করতে চাই

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেসব প্রকল্পের কাজ এখনও সম্পন্ন হয়নি তা পুনরায় ক্ষমতায় এসে সম্পন্ন করে দেশকে আরও উন্নত-সমৃদ্ধ করতে দেশবাসীর সহযোগিতা চেয়েছেন। তিনি বলেন, নির্বাচন খুব সামনে। হয়তো যে কোন সময় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে। আবার আমরা জনগণের কাছে আসব, নৌকা মার্কায় ভোট চাইব। আমরা চাইব, যে উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে যাচ্ছি, সেগুলো যেন আগামী দিনে আমরা এসে সম্পন্ন করতে পারি এবং মানুষের কর্মসংস্থান, জীবনমান উন্নয়ন করতে পারি সে সহযোগিতাও আমি দেশবাসীর কাছে চাই। আওয়ামী লীগ পুনর্নির্বাচিত হলে দেশের আরও উন্নয়ন সাধিত হবে। বৃহস্পতিবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ৫৬টি জেলায় ৩২১টি প্রকল্পের মধ্যে ২৯৭টি প্রকল্প উদ্বোধন এবং ২৪টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। গত দশ বছর ক্ষমতায় থেকে বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা এবং বিরোধীদের সহিংস রাজনৈতিক কর্মকা-ের মতো কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দিনবদলের ঘোষণা দিয়েছিলাম। প্রকৃতপক্ষে মানুষের জীবনের দিনবদল হয়েছে, মানুষের জীবন বদল হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলেছি। এই অবস্থা (আগুন সন্ত্রাসে মানুষ হত্যা ও সম্পদের ক্ষতি) এবং বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা মোকাবিলা করেও আমরা আমাদের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে পেরেছি। তিনি এ সময় বাংলাদেশ থেকে সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ ও মাদকমুক্ত করে দেশকে উন্নত সমৃদ্ধ করে গড়ে তোলার দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করে চলমান মাদকবিরোধী অভিযানকে অব্যাহত রাখার এবং আরও জোরদার করারও নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, সর্বক্ষেত্রে বাংলাদেশের মানুষকে একটা সুস্থ, সুন্দর জীবন দেয়া এবং সমাজটাকে সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ-মাদক থেকে মুক্ত করে একটা উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলে জাতির পিতার স্বপ্ন আমরা পূরণ করব, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলব ইনশাল্লাহ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে আমরা উন্নয়নের মহাসড়কে পৌঁছে দিয়েছি। আজকে গ্রামের মানুষেরও ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে, উন্নত হয়েছে, আরও উন্নয়ন হোক সেটাই আমরা চাই। আর সে লক্ষ্য নিয়েই আমাদের কাজ। বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধুর ত্যাগ ও সংগ্রাম এবং ১৫ আগস্টের হত্যাকা-ের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এই হত্যার মধ্য দিয়ে ইতিহাস বিকৃতি করা হয়েছিল এবং যে চেতনার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ বঙ্গবন্ধুর ডাকে অস্ত্র হাতে নিয়ে বিজয় অর্জন করেছিল তাকে নস্যাৎ করা শুরু হয়েছিল। উন্নয়নের যে যাত্রা বঙ্গবন্ধু শুরু করেছিলেন তা থেমে যায়। দরিদ্র মানুষ দরিদ্রই থেকে গেল। একটা গোষ্ঠীর ভাগ্য পরিবর্তন হলো। স্বাধীনতাবিরোধী ও বঙ্গবন্ধুর খুনীদের পুরস্কৃত করা হলো। অনেক বাধা অতিক্রম করে ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে এসে দলের দায়িত্ব নেয়ার কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, আমার চলার পথ এত সহজ ছিল না। একদিকে খুনী, যুদ্ধাপরাধী, অপপ্রচার, নানাকিছু আমাকে মোকাবলা করতে হয়েছে। বারবার মৃত্যুমুখে পড়তে হয়েছে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের ইচ্ছা, বারবার তিনি আমাকে রক্ষা করেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ও আমার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী কঠিন সময়ে কখনও গুলির মুখে, কখনও গ্রেনেড হামলা নানাভাবে আক্রান্ত হয়েছি; সবসময় আমাকে ঘিরে থেকেছে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন, তিনি হাতে তুলে আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি এ বাঁচাও বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য, মানুষের আশা আকাক্সক্ষার পূরণ করার জন্য। আর আমার পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য। আর সে লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি। চেষ্টা করে যাচ্ছি। শুধু বর্তমানের না, ভবিষ্যত প্রজন্মের জীবনও যেন সুন্দর হয়। তাদের জীবন যেন উন্নত হয়, তাদের ভাগ্য যেন পরিবর্তন হয়। বিশ্বের সঙ্গে তারা যেন তাল মিলিয়ে চলতে পারে। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ পাওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাঙালী জাতি মর্যাদার সঙ্গে বসবাস করবে। উন্নত জীবন পাবে। এটাই হচ্ছে আমার লক্ষ্য। কেন্দ্রীয় কারাগার হচ্ছে বিনোদন কেন্দ্র ॥ পুরান ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার সংস্কার করে সেখানে জাদুঘর থেকে শুরু করে সুইমিং পুল, জিমনেশিয়াম, নাটকের মঞ্চ, আধুনিক সিনেপ্লেক্স, স্কুল নির্মাণসহ পুরো এলাকাকে বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পুরান ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার ইতিহাস, ঐতিহাসিক ভবন সংরক্ষণ ও পারিপাশ্বিক উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের মধ্য দিয়ে পুরান ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার সংস্কার কাজ শুরু হয়। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার সংস্কার কাজের উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকা কারাগার, এর সঙ্গে অনেক স্মৃতি জড়িত। যেখানে আমাদের জাতির পিতা ছিলেন যেখানে আমাদের জাতীয় চার নেতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। সেই জায়গা এবং আমাদের পুরনো কারাগারে কিছু স্মৃতিচিহ্ন সেটাকে আমরা জাদুঘর হিসেবে ধরে রাখব। বাকি অংশটা আমরা আমাদের পুরান ঢাকার জনগণের জন্য স্কুল হবে, কলেজ হবে, যে স্কুল কলেজগুলো ঐ এলাকায় আছে সেগুলোকে আমরা উন্নত করে দেব। পাশাপাশি সেখানে খেলার মাঠ হবে, পার্ক হবে। সেখানে একটা সিনেকমপ্লেক্স হবে, আধুনিক সিনেমা দেখার সুযোগ থাকবে। ভাল শপিংমল হবে। ১৭০ গ্রামের জামদানি প্রধানমন্ত্রীকে উপহার ॥ ঢাকার ঐতিহ্যের কথা এলেই সবার আগে মসলিন কাপড়ের নাম। একটি মসলিন শাড়িকে নাকি একটি দিয়াশলাইয়ের বাক্সেও রাখা সম্ভব এমন জনশ্রুতিও আছে। মসলিন বিলুপ্ত হয়েছে প্রায় তিনশ’ বছর আগে। মসলিনের অংশ হিসেবে এখনও টিকে আছে জামদানি শাড়ি। আনুমানিক দু’শ বছর আগের ঐতিহ্যবাহী ঢাকাই জামদানি শাড়ি নতুন করে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে কিছুদিন আগে থেকেই। ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী ঢাকাই জামদানির ১৭০ গ্রাম ওজনের একটি শাড়ি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে তুলে দিয়েছে পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়। ২০০ বছরের ঐতিহ্য নতুন করে ফিরিয়ে আনার প্রকল্পে ৩০০ কাউন্ট সুতায় ১৭০ গ্রাম ওজনের ঢাকাই জামদানি শাড়িটি প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম। বৃহস্পতিবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে এ শাড়ি প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেয়া হয়। প্রকল্প উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পর বিভিন্ন জেলায় জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনের কর্মকর্তা ও উপকারভোগীদের সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন করছে ২০টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ। এর মধ্যে রয়েছে বিদ্যুত, জ্বালানি, ও খনিজ সম্পদ, স্বরাষ্ট্র, স্বাস্থ্য, সংস্কৃতি, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক, তথ্য, গৃহায়ন ও গণপূর্ত, ডাক, টেলিযোগযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি, সড়ক ও সেতু পরিবহন, স্থানীয় সরকারসহ অন্যান্য মন্ত্রণালয়। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে গণভবনে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মোশাররফ হোসেন, সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, রেলপথমন্ত্রী মুজিবুল হক, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী মোশাররফ হোসেন, নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মুস্তাফা জব্বারসহ প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর কাযালয়ের কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম গোপালগঞ্জ থেকে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ডাঃ মোজাম্মেল হোসেন বাগেরহাট থেকে এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য এ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন উত্তরা থেকে যুক্ত হয়ে ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্য রাখেন। প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে- সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ১৭টি প্রকল্প, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ৩১টি প্রকল্প, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আওতায় দুই প্রকল্প, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতায় ৯৮টি প্রকল্প, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ১১টি প্রকল্প, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ছয়টি প্রকল্প, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন তিনটি প্রকল্প, ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন একটি প্রকল্প, বিদ্যুত, জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ১১২টি প্রকল্প, এলজিআরডি ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন চারটি প্রকল্প, তথ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন তিনটি প্রকল্প, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দুটি প্রকল্প, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন পাঁচটি প্রকল্প, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ১৩টি প্রকল্প, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দুটি প্রকল্প এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আওতাধীন বেপজার একটি প্রকল্প। চট্টগ্রামের ১৯ প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর ॥ চট্টগ্রাম অফিস জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চট্টগ্রামের ১৯টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেছেন। প্রকল্পগুলোর মধ্যে ১৪টির উদ্বোধন ও ৫টির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের উন্নয়নে আরও পরিকল্পনার কথা ব্যক্ত করার পাশাপাশি ১৯৮৮ সালে সংঘটিত চট্টগ্রাম গণহত্যার বিচার কাজ এখনও সম্পন্ন না হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন। চট্টগ্রামে প্রধানমন্ত্রী যে ১৪ প্রকল্প উদ্বোধন করেছেন সেগুলো হচ্ছে বন্দরের নিজস্ব তহবিল থেকে ৩৪৫ কোটি টাকায় সংগৃহীত ৩টি কী-গ্যান্ট্রি ক্রেন, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের জাহাজ এমভি বাংলার জয়যাত্রা, আড়াই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে পতেঙ্গা-ফৌজদারহাট আউটার রিং রোড, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব ভবনে অত্যাধুনিক বঙ্গবন্ধু হল, ১৯৮৮ সালে লালদীঘি মাঠে তৎকালীন আট দলীয় জোটের আয়োজনে শেখ হাসিনার জনসভায় গুলিতে নিহত ২৪ নেতাকর্মীর স্মরণে চট্টগ্রাম আদালত এলাকায় স্মৃতিসৌধ, সাতকানিয়া-চন্দনাইশ-আনোয়ারা এবং রাঙ্গুনীয়ায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন, ১ কোটি ৭৪ লাখ টাকা ব্যয়ে বাঁশখালী ফায়ার এ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স স্টেশন, ৩ কোটি ৭২ লাখ টাকায় বাঁশখালী আদালত ভবন, ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে রাঙ্গুনীয়া উপজেলা শিল্পকলা একাডেমি মুক্তমঞ্চ ও প্রশিক্ষণ ভবন, ৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকায় সীতাকু- উপজেলা পরিষদের সম্প্রসারিত ভবন ও মিলনায়তন এবং ৪৫ কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটের নতুন একাডেমিক ভবন। এছাড়া যে ৫টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে তন্মধ্যে রয়েছে ৯০৭ একর ভূমিতে চট্টগ্রাম বন্দর বে-টার্মিনাল, ৮ কোটি ২৯ লাখ টাকায় রাঙ্গুনীয়ার কেএফডি লিমিটেডের বহুমুখী ইউনিট উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন, ২৭৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকার সীতাকু-ের গালফা হাবিব লিমিটেডে বিএমআরআই প্রকল্প এবং পটিয়ায় দুগ্ধ কারখানা ও সীতাকু- জুট মিলস আধুনিকায়ন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্পগুলোর উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধনকালে চট্টগ্রাম গণহত্যা মামলার বিচার এখনও শেষ না হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, দুঃখ একটাই ত্রিশ বছরেও এ হত্যাকা-ের বিচার হলো না। সেদিন জনসভায় আসা মানুসের ওপর নির্বিচারে লাঠিচার্জ ও গুলি চালিয়েছে পুলিশ। চট্টগ্রামে যে পুলিশ কর্মকর্তার নির্দেশে এ হামলা হয় তার বিরুদ্ধে এরশাদ সরকার ব্যবস্থা নেয়নি। পরে বিএনপি সরকার তাকে প্রমোশন দেয়, পুরস্কৃত করে। এটা সবচেয়ে দুর্ভাগ্যের। তিনি বলেন, বিচার প্রার্থীদের অনেকেই এখন বেঁচে নেই। তারপরও আমরা চাই বিচার কাজ শেষ হোক, বিচারটা হওয়া দরকার। সিলেটে নবনির্মিত কেন্দ্রীয় কারাগার উদ্বোধন ॥ সিলেট অফিস জানায়, বৃহস্পতিবার নবনির্মিত সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার উদ্বোধন করা হয়েছে। বেলা ১১টায় গণভবন থেকে সরাসরি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নবনির্মিত এই কারাগারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিকে উদ্বোধন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সিলেট জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উপস্থিত সিলেট জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ সরাসরি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন। দুই হাজার বন্দীর ধারণ ক্ষমতার কারাগারটি নির্মাণে ১৯৭ কোটি টাকা প্রাক্কলন নির্ধারণ করা হলেও কাজ শেষ করতে ব্যয় দাঁড়ায় ২৭০ কোটি টাকায়। কারাগারে স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট, একশ শয্যার পাঁচতলা বিশিষ্ট চারটি হাসপাতাল, স্কুল ও লাইব্রেরি ভবন ছাড়াও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য রয়েছে একশ ৩০টি ফ্ল্যাট রয়েছে।
×