ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সাফ অনুর্ধ-১৫ ফুটবল

ভারতকে হারিয়ে ফাইনালে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৭:৩০, ২ নভেম্বর ২০১৮

ভারতকে হারিয়ে ফাইনালে বাংলাদেশ

রুমেল খান ॥ ‘আমরা ফাইনালে উঠেছি। এটা খুশির সংবাদ। তবে এখনই চূড়ান্ত আনন্দের কিছু নেই। ফাইনাল এখনও বাকি আছে। এই ম্যাচ জিততে পারলে বাংলাদেশের পতাকা বিদেশের মাটিতে ওড়াতে পারব। জিতে অবশ্যই ভাল লাগছে। এখন মূল লক্ষ্য শিরোপা জয়। যে কোন কিছুর বিনিময়ে ফাইনাল জিততে চাই।’ কথাগুলো গোলপোস্ট সামলানোর কাজে নিয়োজিত এক বিশ্বস্ত অতন্দ্র প্রহরীর, যার নাম মেহেদী হাসান। তার বীরোচিত নৈপুণ্যেই যে লাল-সবুজের বাংলাদেশ নাম লেখাতে পেরেছে সাফ অনুর্ধ-১৫ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে দীর্ঘ তিন বছর পর। বৃহস্পতিবার দিনটা ছিল বাংলাদেশ দলের জন্য ‘বৃহস্পতি তুঙ্গে।’ নেপালের ললিতপুরের আনফা কমপ্লেক্সে তারা প্রথম সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয় শক্তিশালী প্রতিপক্ষ ভারতের। নির্ধারিত ৯০ মিনিটে দু’দলের খেলাটি শেষ হয় ১-১ গোলে। এরপর টুর্নামেন্টের বাইলজ অনুযায়ী খেলা আর অতিরিক্ত সময়ে না গড়িয়ে সরাসরি টাইব্রেকার অনুষ্ঠিত হয়। আর তাতে টাইব্রেকার নামের ভাগ্য পরীক্ষাতেও বিজয়ীর হাসি হাসে বাংলাদেশ ৪-২ গোলে জিতে। আগামী শনিবার বাংলাদেশ ফাইনালে মুখোমুখি হবে পাকিস্তানের যারা বৃহস্পতিবারই অপর সেমিতে ৪-০ গোলে হারিয়েছে স্বাগতিক নেপালকে। এই আসরে এ নিয়ে চতুর্থবারের মোকাবেলায় তৃতীয়বারই জয়ী হলো বাংলাদেশ। এর আগে ২০১৩ সালে এই আসরে গ্রুপপর্বে ভারতের কাছে ০-২ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ। ২০১৫ আসরে গ্রুপপর্বে ভারতকে ২-১ গোলে হারিয়ে প্রতিশোধ নেয় বাংলাদেশ। ফাইনালেও একই দলকে টাইব্রেকারে হারায় বাংলাদেশ ৪-২ (১-১) গোলে। নির্ধারিত সময়ে ১৭ মিনিটে ভারত গোল করে এগিয়ে যায়। এরপর দ্বিতীয়ার্ধের ইনজুরি টাইমের তৃতীয় মিনিটে লক্ষ্যভেদ করে বাংলাদেশকে সমতায় ফেরায় বাংলাদেশের আরেক নায়ক, ফরোয়ার্ড আশিকুর রহমান। ম্যাচ শেষে তার প্রতিক্রিয়া, ‘আন্তর্জাতিক ম্যাচে গোল করে ভাল লাগছে। কোচ আমার ওপর ভরসা রেখেছেন। লক্ষ্য এখন চ্যাম্পিয়ন হওয়া।’ বাংলাদেশের কোচ মোস্তফা আনোয়ার পারভেজের ভাষ্য, ‘ভারত শক্ত প্রতিপক্ষ ছিল। তবে ধারার বিপরীতে আমাদের গোল হজম করতে হয়েছে। তারপরও খেলোয়াড়রা নির্দেশনা অনুযায়ী খেলেছে। এরই ধারাবাহিকতায় ম্যাচের শেষ দিকে গোল এসেছে। তবে আরও গোলের সুযোগ পেয়েছিলাম কিন্তু হয়নি। টাইব্রেকারে গোলরক্ষক মেহেদী ভাল করেছে। অন্যরাও ঠিকঠাক গোল করতে পেরেছে। আমি বেশ আনন্দিত। এটা নিঃসন্দেহে দারুণ জয়। তবে আমরা খুব বেশি উল্লাস করিনি। ফাইনালে পাকিস্তানকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েই পরিপূর্ণ উল্লাস করতে চাই।’ টাইব্রেকারে ভারতের প্রথম দুটি শট ঠেকিয়ে দিয়ে ‘হিরো’ বনে যায় মেহেদী হাসান। মজার ব্যাপারÑ এই ম্যাচে তার খেলারই কথা ছিল না। কেননা গ্রুপের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচে নেপালের বিরুদ্ধে লালকার্ড পাওয়ায় সেরা চারের লড়াইয়ে দলের পোস্টের নিচে থাকতে পারেনি নিয়মিত গোলরক্ষক মিতুল মারমা। তাই সেমির ম্যাচে মিতুলের পরিবর্তে সুযোগ পায় সাইডবেঞ্চে বসে থাকা মেহেদী। আর সুযোগ পেয়েই বাজিমাত করে সে। মালদ্বীপকে ৯-০ ব্যবধানে উড়িয়ে দেয়ার পর নেপালকে ২-১ গোলে হারিয়ে ‘এ’ গ্রুপের সেরা হয়ে সেমিফাইনালে উঠেছিল বাংলাদেশ। ভারত নিজেদের প্রথম ম্যাচে যদিও পাকিস্তানের কাছে ২-১ গোলে হেরেছিল। নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে তারা ভুটানকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে ‘বি’ গ্রুপের রানার্সআপ হয়ে সেমিতে নাম লেখায়। এখন দেখার বিষয় ফাইনালে পাকিস্তানকে হারিয়ে শিরোপা পুনরুদ্ধার করতে পারে কি না বাংলাদেশ।
×