স্টাফ রিপোর্টার ॥ সংলাপের উদ্যোগকে বিশ্ব সম্প্রদায় স্বাগত জানিয়েছে দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করতে চায় আওয়ামী লীগ।
বুধবার সচিবালয়ে ফরাসী রাষ্ট্রদূত মারি আন বোখতা ও জার্মানির রাষ্ট্রদূত টমাস প্রিনজের সঙ্গে সাক্ষাত শেষে সাংবাদিকদের একথা জানান ওবায়দুল কাদের। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও বিকল্প ধারার পাশাপাশি অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও সংলাপে বসতে প্রধানমন্ত্রী রাজি রয়েছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
সাক্ষাতের বিষয়ে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, দুই দেশের রাষ্ট্রদূতরা খুব আশাবাদী যে, সংলাপের মাধ্যমে একটি ভাল নির্বাচন হবে। নির্বাচনের সময়কালীন আচরণবিধি তাদের জানানো হয়েছে। দুই রাষ্ট্রদূতই সংলাপের উদ্যোগকে ইতিবাচক বলে উল্লেখ করেছেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, শুধু ঐক্যফ্রন্ট বা যুক্তফ্রন্ট নয়, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন অন্যান্য দলের সঙ্গেও সংলাপে বসতে রাজি। তবে সময় একটি ব্যাপার, সিডিউলের বিষয় আছে, প্রধানমন্ত্রী আন্তরিক। এর মধ্যে সিডিউল ঘোষণা হয়ে যাবে, প্রধানমন্ত্রীর টাইট সিডিউল রয়েছে, এর মধ্যেই করতে হবে।
আগামী ১ ও ২ নবেম্বর বিএনপিকে নিয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং বিকল্প ধারার সভাপতি ও যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান বি. চৌধুরীর কাছে গণভবনে আলোচনার জন্য ডাক এসেছে। এর মধ্যে জাতীয় পার্টি ছাড়াও একটি রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে সংলাপ চেয়ে আওয়ামী লীগকে চিঠি দেয়া হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আলোচনা থেকে অনেক কিছুই জানা যাবে। আলোচনার কিছু নির্দিষ্ট করা নেই, যে কোন বিষয় আলোচনা হবে, প্রধানমন্ত্রী কোন প্রি-কনডিশন দেননি। ঐক্যফ্রন্ট, বিকল্প ধারা প্রস্তাব দিয়েছে, তারা চিঠি পাঠিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে চিঠির জবাব দিয়ে সময় দেয়া হয়েছে।
খালেদা জিয়ার সাজা নিয়ে বিএনপির আপত্তি প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, রায় প্রধানমন্ত্রী বা আওয়ামী লীগ দেয়নি, রায় দিয়েছে আদালত। লিগ্যাল ম্যাটারের সঙ্গে ডায়ালগের কী সম্পর্ক? ডায়ালগ ডায়ালগের সঙ্গে চলবে। তারা এ বিষয় উত্থাপন করতে পারে না। সেহেতু কোন প্রি-কনডিশন এখানে নেই। তারা আলোচনা করতে পারে কিন্তু এ বিষয়টি তো একেবারে আদালতের বিষয়।
ডায়ালগে তারা খালেদা জিয়ার কারাদণ্ড নিয়ে আলোচনা করবেন, আলোচনার পথে কোন বাধা নেই। বিষয়টা তো এমন নয় আওয়ামী লীগ তাকে জেলে দিয়েছে, আওয়ামী লীগ তাকে মুক্তি দেবে। বিএনপিকে খালেদা জিয়ার ব্যাপারে আদালতের রায়ে লিগ্যাল ম্যাটারে যেতে হবে, এটা একেবারেই লিগ্যাল, ডায়ালগের সঙ্গে লিগ্যাল ম্যাটারের কোন সম্পর্ক নেই।
সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব নিয়ে কাদের বলেন, বিষয়টা যেহেতু একটি ডায়ালগের আলোচ্য বিষয়, ডায়ালগে যেটা আলোচনার সুযোগ আছে, তারে আগে কেন আমি এখন মন্তব্য করব। সংলাপে প্রধানমন্ত্রীর আগ্রহ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা আমাদের দলে এ ধরনের ডায়ালগের পক্ষে ছিলাম না, এটা তো ওপেন। আমরা যা বলেছি স্ট্রং ভয়েস, আমাদের নেত্রী যা সঠিক মনে করেছেন তার সঙ্গে আমরা সবাই অভিন্ন মত প্রকাশ করি। এখন আগাম কোন মন্তব্য থেকে বিরত থাকতে চাই না। সংবিধানের বিষয় আছে, আইন আদালতের ব্যাপার, কিছু বিষয় আছে নির্বাচন কমিশনের বিষয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সংলাপকে দলমত নির্বিশেষে বেশিরভাগ মানুষ পূর্ণ সমর্থন দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর অসামান্য উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছে। কাদের বলেন, ঐক্যফ্রন্ট ও যুক্তফ্রন্ট ছাড়া অন্যান্য দলের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সংলাপ করবে। ঐক্যফ্রন্টে যেহেতু বিএনপি আছে তাই সময় স্বল্পতার কারণে তাদের সঙ্গে আলাদা করে সংলাপ করার সময় পাওয়া যাবে না। যদি ৪, ৫ ও ৬ নবেম্বর সিডিউল ঘোষণা হয়ে যায় তাহলে কীভাবে বিএনপির সঙ্গে সংলাপ হবে!
