ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ফেডারেশন কাপ ফুটবল, চিনেদুর জোড়া গোল, আরামবাগ ৩-১ রহমতগঞ্জ

রহমতগঞ্জকে বিদায় করে শেষ আটে আরামবাগ

প্রকাশিত: ০৭:০৫, ৩১ অক্টোবর ২০১৮

রহমতগঞ্জকে বিদায় করে শেষ আটে আরামবাগ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ওয়ালটন ফেডারেশন কাপের ৩০তম আসরে দ্বিতীয় দল হিসেবে কোয়ার্টার ফাইনালে নাম লিখিয়েছে আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ। মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ‘এ’ গ্রুপের খেলায় তারা ৩-১ গোলে হারায় রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটিকে। এর আগে রহমতগঞ্জ একই ব্যবধানে হেরেছিল এই গ্রুপের অপর দল চট্টগ্রাম আবাহনীর কাছে। বন্দরনগরীর দলটিও ইতোমধ্যে নিশ্চিত করেছে শেষ আটে খেলা। আগামী ২ নবেম্বর চট্টগ্রাম আবাহনী-আরামবাগ ম্যাচটি তাই পরিণত হয়েছে গ্রুপসেরা নির্ধারণীর ম্যাচে। মঙ্গলবারের ম্যাচে বিজয়ী দল প্রথমার্ধে এগিয়ে ছিল ১-০ গোলে। খেলার শুরুতে ফর্মেশন ছিল আরামবাগ ৪-৪-২, রহমতগঞ্জ ৪-৩-৩। শুরুতে উভয় দলই সতর্ক ও ধীরস্থির ফুটবল খেলে। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে উভয় দলই খেলার গতি ও আক্রমণের ধারা বৃদ্ধি করে। তবে আক্রমণে বেশি এগিয়ে ছিল তিনবারের রানার্সআপ আরামবাগই। প্রথম ৭ মিনিটের মধ্যে টানা ৩টি কর্নার পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি তারা। ২১ মিনিটে মিডফিল্ডার জাহিদ হোসেন বল ধরে ডানপ্রান্ত দিয়ে বক্সে ঢুকে গড়ানো ক্রস করেন। সেই বল পায়ে সংযোগ ঘটালেও নাইজিরিয়ান ফরোয়ার্ড ইদেনি চিনেদু ম্যাথিউ বল পোস্টে পাঠাতে পারেননি। তার পায়ে বল লেগে চলে যায় পোস্টের বাইরে দিয়ে। নিশ্চিত গোলবঞ্চিত হয় আরামবাগ। ৪৩ মিনিটে বাঁপ্রান্ত দিয়ে বল নিয়ে ঢুকে পড়েন আরামবাগের ফরোয়ার্ড আরিফুর রহমান। ফাঁকায় পেয়ে যান প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক তিতুমীর চৌধুরীকে। শট নেন আরিফুর। শটের বল তিতুমীরের হাতে লেগে উঁচুতে উঠে যায়। সেই বল মাটিতে পড়ার আগেই পোস্ট লক্ষ্য করে শট নেন আরেক ফরোয়ার্ড চিনেদু। কিন্তু সেই বল পোস্টের ওপর দিয়ে বাইরে চলে গেলে আবারও হতাশায় পোড়ে আরামবাগ। প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমে (৪৫+১ মিনিট) অবশেষে গোলের দেখা পায় আরামবাগ। দুই মিনিট আগের ‘পাপ’-এর প্রায়শ্চিত্ত করেন চিনেদু। বাঁপ্রান্ত দিয়ে বল নিয়ে ঢুকে পড়েন প্রতিপক্ষের বক্সে। সতীর্থের উদ্দেশে গড়ানো ক্রস করেন। কিন্তু সেটা ঠিকঠাক করতে পারেননি। কেননা বল গিয়ে পড়ে রহমতগঞ্জের নাইজিরিয়ান ডিফেন্ডার মানডে ওসাইজাইয়ের পায়ে। কিন্তু ‘টুয়েসডে’তে মস্ত ভুল করে বসেন মানডে, বলটি ঠিকমতো বিপদমুক্ত করতে পারলেন না। উল্টো সেই বল যেন পাস দিয়ে দিলেন আবারও সেই চিনেদুর পায়েই। এক মুহূর্ত দেরি না করে চিনেদু ডান পায়ে গড়ানো অসাধারণ একটি বাঁক খাওয়ানো শটে স্রেফ বোকা বানান তিতুমীরকে। রহমতগঞ্জের এই গোলরক্ষক চেয়ে চেয়ে দেখলেন কৌনিক শটের বলটি জালে ঢুকে গেল। উল্লাসে মেতে ওঠে ‘রাইজিং স্ট্রেন্থ’ খ্যাত আরামবাগ (১-০)। ৬৬ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে আরামবাগ। মাঝমাঠ থেকে মিডফিল্ডার আরাফাত হোসেন উঁচু লম্বা সেন্টার করেন ফাঁকায় দাঁড়ানো চিনেদুর উদ্দেশে। বিপদ দেখে পোস্ট ছেড়ে এগিয়ে এসে বল বিপদমুক্ত করার চেষ্টা করেন রহমতগঞ্জ গোলরক্ষক তিতুমীর। কিন্তু তাকে কাটিয়ে ফাঁকা পোস্ট পেয়ে যান চিনেদু। এদিকে চিনেদুকে বাধা দিতে অনেকটাই কাছাকাছি চলে আসেন প্রতিপক্ষ দলের এক ডিফেন্ডার। কিন্তু তাকে সেই সুযোগ না দিয়ে আয়েশ করে পোস্টে বল ঠেলে দিয়ে নিজের ও দলের দ্বিতীয় গোলটি করেন চিনেদু (২-০)। ৭২ মিনিটে বল নিয়ে পোস্টে ঢুকে পড়েন আরামবাগের মিডফিল্ডার শাহরিয়ার বাপ্পী। গোলরক্ষক এগিয়ে এসে বলের দখল নিতে গেলে বাপ্পী পড়ে যাবার ভান করেন। কিন্তু রেফারি জালালউদ্দিনের চোখে এই ‘কাঁচা অভিনয়’ ধরা পড়ে যায়। ফলাফল : হলুদ কার্ডের মুখ দেখেন বাপ্পী। ৭৩ মিনিটে ডানপ্রান্ত দিয়ে বল নিয়ে ওপরে ওঠা উইঙ্গার জাহিদ হোসেন লক্ষ্য করেন প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক পোস্ট ছেড়ে অনেকটাই সামনে চলে এসেছেন। সেটা দেখেই বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে পোস্ট লক্ষ্য করে মাপা-উঁচু শট নেন জাহিদ। গোলরক্ষক পড়িমরি করে পিছিয়ে এসে অনেক কষ্টে পিষ্ট করে কর্নারের বিনিময়ে রহমতগঞ্জকে আরেকটি গোল হজমের হাত থেকে বাঁচান। ৮০ মিনিটে ডানপ্রান্ত দিয়ে বল নিয়ে বক্সে ঢুকে ডান পায়ের গড়ানো ক্রস ধরে ফিনিশ করেন আরিফুর রহমান (৩-০)। ৪২ মিনিটে গোল করার প্রথম সুযোগ পায় ‘জায়ান্ট কিলার’ এবং ‘ডাইলপট্টি’ খ্যাত রহমতগঞ্জ।
×